somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন ( ভারত বধ )

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশ ফাইনাল না খেলেই এবারের এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন।
কিভাবে?
ওয়েল, ভারত পাকিস্তানকে হারিয়েছে, শ্রীলংকাকে হারিয়েছে, আফগানিস্তানকে হারিয়েছে মানে ভারতকে কেউ হারাতে পারেনি কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষ ম্যাচে আজ বাংলাদেশ সেই ভারতকেই উড়িয়ে দিলো, সুতরাং দেখা গেলো বাংলাদেশই এশিয়ার সেরা দল। :D



ভারত শ্রীলংকা ইতিমধ্যে ফাইনালে চলে গিয়েছে, আজকের ম্যাচটি ছিল শুধুই নিয়ম রক্ষার ম্যাচ, তবে শেষ ভালো যার সব ভালো তার এই যুক্তিতে আজকের ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য ছিল সম্মান রক্ষার ম্যাচ, আর ভারতের জন্য ছিল ফাইনালের আগে ওয়ার্ম আপ ম্যাচ। পুরো টুর্নামেন্টে খারাপ খেললেও শেষ ম্যাচে এসে বাংলাদেশ ঠিকই নিজেদের জাত চিনিয়েছে, টাইগাররা দেখিয়ে দিয়েছে উস্তাদের মার শেষ রাতে আর তাই ফাইনালিস্ট ভারতকে হারিয়ে দেওয়ার সুবাদে আমার চোখে বাংলাদেশেই এবারের এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন। আজকের এই বিজয়ের মাধ্যমে আগামী বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভারতকে স্পষ্ট এক বার্তা দিয়ে রাখলো, "দেখা হবে ভারত সামনের বিশ্বকাপে।"



খেলার সংক্ষেপিত বিবরণী

ভারত টসে জয় লাভ করে বাংলাদেশকে ব্যাটিং এ পাঠায় এবং যথারীতি বাংলাদেশের উইকেট পতনের মিছিল শুরু হয়ে যায়; মাত্র ৫৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে, ম্যাচের এমন পর্যায়ে অমার মতো অনেকেই ভেবেছিলেন বাংলাদেশ হয়তো শ-দেড়েক রান করতে পারে এবং আরেকটি গো হারা ম্যাচ উপহার দিতে যাচ্ছে, কিন্তু বেঁকে বসলেন সাকিব আল হাসান এবং তৌহিদ হ্রদয়, তারা পণ করলেন হারার আগেই হারা নয়, শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবো। অবশেষে সাকিব আর হ্রদয়ের পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১০১ রান তুলে। ১৬০ রানের মাথায় হ্রদয় হাফ সেঞ্চুরি (৫৪) করে আউট হয়ে গেলেও বাকি ব্যাটসম্যানদের সাথে নিয়ে সাকিব লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে। সাকিব ৮০ রান করে আউট হবার পরও মাসুম আহাম্মেদ এবং মেহেদী হাসানের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ২৬৫ রানের এক সম্মান জনক স্কোর করতে সক্ষম হয়।

শক্তিশালী ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের কাছে ২৬৫ রান আহামরি কোন স্কোর নয়, অপরদিকে বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিং লাইন আপ ২৬৫ রান খুব সহজেই তাড়া করতে দিবে এমনটাও ভাবা যাচ্ছিল না। ভারতের ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানে নতুন পেস সেনসেশন তানজিম হাসান সাকিব, মাত্র দ্বিতীয় বলেই প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান ভারতের তারকা ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মাকে এবং ১৭ রানের মাথায় আউট করেন তিলক ভর্মাকে। ওয়ানডে ম্যাচে আজই অভিষেক হওয়া এই তানজিম হাসান সাকিব দুর্দান্ত বল করেছে।




বাংলাদেশের পেস এবং স্পিন এ্যাটাকের সামনে নিয়মিত বিরতিতেই ভারতের উইকেটের পতন হচ্ছিল কিন্তু গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন দ্যা ডেঞ্জারম্যান শুভমান গিল, এই গিল যতক্ষণ ক্রিজে ছিলো ততক্ষণ ভারত খুব ভালোভাবেই ফাইট দিয়ে যাচ্ছিলো, সে একাই ম্যাচ প্রায় বের করে নিয়ে যাচ্ছিল, কোন মতেই তাকে আউট করা যাচ্ছিল না। শুভমান গিল যতক্ষণ ক্রিজে ছিল ততক্ষণ আমার কখনোই মনে হয়নি এই ম্যাচ ভারত হারতে পারে। শেষ পর্যন্ত ২০৯ রানের মাথায় গিলকে আউট করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফিরিয়ে আনেন মেহেদী হাসান। গিল একাই ১২১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন। পুরো ম্যাচেই বাংলাদেশী বোলাররা ভারতীয়দের বেশ চাপে রাখতে পেরেছিলো, কিন্তু শেষের দিকে এসে অক্ষয় প্যাটেল মাত্র ৩৪ বলে ৪২ রান করে ম্যাচ প্রায় ভারতের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি, ডেথ ওভার মাস্টার মুস্তাফিজের বলে আউট হন প্যাটেল। চরম হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৬ রানে জয়ী হয়। B-)



ম্যান অব দ্যা ম্যাচ- বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান। ৮০ রান এবং ১ উইকেট।


এক নজরে

- আজকের এই ম্যাচে বাংলাদেশ দলে তানজিম হাসান সাকিব নামে দুর্দান্ত এক জেনুইন পেস বোলারের আবির্ভাব হয়েছে, ভবিষ্যতে সে বাংলাদেশ দলের পেস এ্যাটাকের নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছে বলে আমি মনে করি। আমি তার বোলিং এ পুরোপুরি মুগ্ধ, একজন পেস বোলারের যা যা গুণ থাকা দরকার তার সবগুলো গুণই আমি তার মধ্যে লক্ষ্য করেছি, বাকিটা ভবিষ্যৎ বলে দিবো। উল্লেখ্য যে ২০১৬ সালে আমি প্রথম যেদিন মুস্তাফিজের বোলিং দেখেছিলাম সেদিনও মুস্তাফিজকে নিয়ে এমন আশাবাদী মন্তব্য করেছিলাম, এর পরের ইতিহাস আপনারা সবাই জানেন।

- সুনীল গাভাস্কার, শচিন টেন্ডুলকার এবং বিরাট কাহলি পরে শুভমান গিল হতে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটের মহাতারকা।

-এশিয়া কাপে ২০১২ সালে বাংলাদেশ একবার ভারতকে হারিয়েছিল আর আজকে দীর্ঘ ১১ বছর পর হারালো।

-বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কোন উন্নতি হয়নি, উল্টো আরও অধঃপতন হয়েছে, মিডল অর্ডার, লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের উপর ভরসা করে কখনোই বড় কোন টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় না, তবে বর্তমান বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী বলে আমি মনে করি, কিন্তু ক্রিকেট হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের খেলা তাই ভালো মানের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান খুঁজে বের করতে হবে আমাদের।

ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২৩
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×