একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি । তাছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে কোন পোস্ট করা হয় না তাই এক ঢিলে দুই পাখি মেরে ফেলি। তো চলুন কমেন্ট'টি পড়া যাক।
বেশ হাস্যরসাত্মক একটি পোস্ট (যদিও অনেকের কাছে গভীর জ্ঞান) এত কষ্ট করে এত বড় একটি পোস্ট লেখার তো কোন দরকার ছিল না, 'আল-কুরআন ও বিজ্ঞান' এ বিষয়ের একটি ওয়াজের ভিডিও পোস্ট করে দিলই তো হতো, ইউটিউবে এমন হাজার হাজার ওয়াজ প্রচার হচ্ছে প্রতিদিন।
প্রতিটি গ্রন্থের স্বকীয়তা রয়েছে, প্রতিটি লেখকের থাকে আলাদা আলাদা ধারা, ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা চেতনা। এক গ্রন্থ কখনো আরেক গ্রন্থের মত হয় না। কুরআন মূলত আদি গ্রন্থ বাইবেল থেকে কপি করে বানানো হয়েছে অন্তত ৮০% ঘটনা প্রবাহ বাইবেলের সাথে মিল রয়েছে, তাহলে সেই আদি গ্রন্থ বাইবেল আরও না জানি কত বিজ্ঞানময় যে গ্রন্থটি বিশ্বের অধিকাংশ জনগন দুই হাজার বছর ধরে ফলো করে আসছে। আসলে যার যার গ্রন্থ তার তার কাছে অতুলনীয়।
সামহ্যয়ারইন ব্লগের মত দুনিয়ায় আর একটিও বাংলা ব্লগ নেই, গত ২০ বছর ধরে দুনিয়ার তবাৎ সব ডেভোলপারেরা গবেষণা করে সামুর মত আর একটিও বাংলা ব্লগ তৈরী করতে পারেনি, (আসলে মানুষের খেয়ে তো কোন কাজ নেই যে এই ব্লগ ক্লোন করতে যাবে) দুনিয়ার সমস্ত জ্ঞান রয়েছে এই ব্লগে, এ ব্লগ থেকেই মূলত দুনিয়ার যাবতীয় জ্ঞানের সূত্রপাত সুতরাং এই ব্লগটি স্রষ্টার তৈরী এ কথা বলা কি ঠিক হবে?
না,কুরআনে কোন ম্যাথম্যাটিকাল ফ্যাক্ট নেই, বর্তমান সময়ের অতি উৎসাহী কিছু ইসলামী স্কলারগণ গুজামিল দিয়ে এসব তৈরী করেছে, এসব ফলস ক্লেইম বহু আগেই খন্ডন করা হয়েছে।
Modern Islamic apologists and du'aah often seek to bolster the claim that the Qur'an is a divine book by reference to "miracles" in the Qur'an. Recently, a novel strategy in this regard is to claim that the number of times certain words show up in the book constitute a "miracle." In point of fact though, there are exactly 0 word count miracles in the Qur'an. বিস্তারিত: Word Count Miracles in the Qur'an
বাই দ্যা ওয়ে: এসব ম্যথম্যাটিক্যাল ফ্যক্টস যে শুধু কুরআন থেকেই গুজামিল দিয়ে বের করা হয়েছে তা কিন্তু নয়, অন্যন্য ধর্মের বিজ্ঞানীগণও কম যায় না- বাইবেল, গীতা এবং অন্যন্য ধর্মের অনুসরীরাও এভাবে গুজামিল দিয়ে নিজ নিজ ধর্মগ্রন্ধ থেকে প্রচুর ম্যাথম্যাটিকাল ফ্যক্টস বের করেছে, যার সবই হচ্ছে ভিত্তিহীন, গুজামিল দিয়ে তিলকে তাল বানানো যায়, যদি কেউ তা করতে চায়।
Math in the Bible
The Mathematical Precision of the Bible
The Mathematical Proof for Christianity Is Irrefutable
Bhagavat geeta in mathematical form- by prof. rishi tiwari
Mathematical Modeling of Bhagavat Gita: Algebraic Field of Human Resources
A Scientific Explanation of Chapter 13 of the Bhagavad Gita
আমি আগে মনে করতাম এসব সাইয়েন্স ফায়েন্স, মিরাকল, ফিরাকল বুঝি শুধু কুরআনেই আছে, কিন্তু একি!! এখন দেখি সবকটার লেজ এক জায়গায়। [/sb]আসলে সেই শুরু থেকেই কুরআন বাইবেলকে ফলো করে আসেছে যা এখনো চলছে, বর্তমানের ইসলামি স্কালারগণ বাইবেলের স্কালারদের ফলো করে কুরআন থেকে সায়েন্স, মিরাকল বের করছে। কোন সায়েন্স, ফায়েন্স বা মিরাকল সর্বপ্রথম বাইবেল থেকে বের হয় ঠিক তার মাসখানের মধ্যে তা কুরআন থেকেও বের করা হয়। কি এক আজিব খেলা শুরু করছে এরা!! আজকে বাইবেল থেকে নতুন কোন বিজ্ঞান বের হউক, আমি কথা দিচ্ছি ঠিক মাসখানের মধ্যে তা কুরআন থেকেও বের হবে।
তো একই বিষয় যদি সবাই দাবী করে তাহলে একটি আরেকটির উপর শ্রেষ্ঠ হয় কি করে? কুরআনও সাইন্টেফিক দাবী করে অন্য ধর্মগ্রন্থও তাই দাবী করে, কুরআনও স্রষ্টার গ্রন্থ হিসেবে দাবী করে অন্যন্য গ্রন্থও তাই দাবী করে, কুরআনেও মিরাকল আছে অন্যন্য ধর্মগ্রন্থেও মিরাকল আছে, কুরআন থেকেও ভ্রুণ তত্ব আবিষ্কার করা হয়, অন্যন্য ধর্মগ্রন্থ থেকেও তা আবিষ্কার করা হয়, তাহলে এখানে কুরআনের স্বকীয়তা বলতে তো আর কিছু থাকলো না।
আসলে আপনাদের এসব জাড়িজুড়ি বর্তমান প্রজন্ম সব ধরে ফেলেছে, এসব কল্পকাহিনী নির্ভর জীবন যাপন তারা চায় না।
ইসলাম ধর্ম দ্রুত বাড়ছে কারণ তাদের লাগামহীন জনসংখ্যা উৎপাদনের কারণে, দলে দলে মানুষ ইসলাম গ্রহণ করছে না। আজকাল প্রচুর মানুষ ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করছে। List of ex-Muslim organisations
Ex-Muslims of India find the X factor online
Ex-Muslim Yasmine Mohammed speaks out
আবার অনেকেই ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্মও গ্রহণ করছে। স্বয়ং ঢকারই একটি চার্চে গত ১৭ই এপ্রীল ৩ জন মুসলিম খ্রিস্ট্র ধর্ম গ্রহণ করেছে, তাছাড়া দেশে কয়েক লাখ মানুষ রয়েছে যারা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টান হয়েছে, এবং এটা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।
A 2015 Baylor University study estimates that 10.2 million Muslims have converted to Christianity. List of converts to Christianity from Islam.
Former Muslim Explains Why He Converted to Christianity
Seeking Allah, Finding Jesus: The Christian Testimony of Nabeel Qureshi
অপর দিকে মুসলিম আধ্যুসিত এলাকায় কিছু ভিন্ন ধর্মের লোক মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করছে এটা সত্য কিন্তু তাই বলে তা যতটা প্রচার করা ততটা নয় যেমন- ওমুক বিজ্ঞানী ইসলাম গ্রহণ করলেন, ওমুক তারকা ইসলাম গ্রহণ করলেন.. ইত্যাদি কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায় এগুলো সব গুজব।
এতসব বলার উদ্দ্যেশ হচ্ছে- ইসলাম মোটেও গর্বীত হওয়ার মত কোন ধর্ম নয়, বর্তমান সময়ে বিশ্বে ইসলাম একটি ভয়ঙ্কর ধর্মের নাম, হাজার হাজার মানুষ ইসলাম ধর্ম থেকে বের হয়ে আসছে, আর বাকি যারা আছে তাদের খুব কম সংখকই ইসলামী ভাবধারায় জীবন যাপন করে, এরা শুধু নামে মুসলিম বা বংশগত মুসলিমই বটে।
ইসলামের প্রথম দিকে শরীয়ত পরিপুর্ণ ছিলনা , অদৃশ্য জগতের খবর ছিল না , জীবন ও জগত সম্পর্কেও তেমন কিছু বলা হয়নি- - জীবন ও জগত সমন্ধে জানার জন্য মানুষকে কুরআন পড়তে হবে কেন? কুরআন নাজিল হওয়ার আগেও পৃথিবীতে মানুষ আজকের মতই স্বাভাবিক জীন যাপন করেছে, তাদেরও ছিল ভিন্ন ভিন্ন জীবন দর্শন, তারাও জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা করতেন। বর্তমানেও পৃথিবীর অধিক সংখ্যক (৭৫%) জনগন কুরআন ফলো করে না, এটাকে নকল একটি গ্রন্থ মনে করে, কিন্তু তাই বলে তাদের জীবন-দর্শন বলতে কিছু নেই, জ্ঞান-বিজ্ঞানের কোন খবরই তারা রাখে না? আপনার মত জ্ঞানী একজন ব্লগারের এমন হুজুর শ্রেণীর চিন্তাভাবনা দেখে আমার মনে মহা হস্যরস্যের উদয় হয়েছে। আপনার পোস্টে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে, হুজুর শ্রেণী দ্বারা আপনি খুব ভালোভাবেই ব্রেইন ওয়াশ হয়েছেন।
মূল কথা হচ্ছে কুরআনে এমন কোন বিষয় নেই যা ওই সময়ের মানুষ জানতো না, কুরআনে নতুন জ্ঞান বলতে কিছু নেই এর সবই বইবেল (তাওরাত, জবুর, ইঞ্জিল শরফি ইত্যাদি গ্রন্থ) থেকে কপি করে একটা প্যাকেজ তৈরী করা হয়েছে মাত্র। ওই সময়ের মানুষ জানতো না কুরআন থেকেই মানুষ প্রথম নতুন কিছু জানতে পরেছে, এমন দাবী সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। উক্ত সময়ের সমাজ ব্যবস্থার বাইরে কুআনে নতুন কোন কিছুই নেই।
পোস্ট'টিতে আপনি মানব শরীরের বিভিন্ন অর্গ্যান, ভ্রণ তত্ব ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করেছেন, কিন্তু এসবের সাথে কুরআনের সম্পর্ক কি তা আমি বুঝতে পারিনি, কুরআন দিয়ে কেন এসব ব্যখ্যা করতে হবে? যারা কুরআন পড়ে না তারা কি এসব বুঝে না?
প্রকৃতিতে প্রতিটি বিষয়ই বেশ জটিল, আলু, পটল থেকে শুরু করে মশা, মাছি সহ প্রতিটি প্রাণী এবং উদ্ভিদ সৃষ্টির প্রক্রিয়াই বেশ জটিল আর এসব জটিলতা বুঝতে হলে আমাদের ধর্মগ্রন্থের স্মরণাপন্ন হবার কোন প্রয়োজন নেই, ধর্মগ্রন্থ থেকে শুধু অজ্ঞতাই আসে জ্ঞান নয়। হাজার বছরের পুরোনো কল্পকাহীনি নির্ভর যে কোন আইডিওলজি থেকে বর্তমান সময়ের কোন জ্ঞান থাকতে পারে না, বড় জোর এসব ওয়াজ কল্প কাহিনী হিসেবেই শুনা যেতে পারে, এর বেশি কিছু নয়।
বিলিভ মি- সারাদিন চিল্লাইলেও কুরআন থেকে কোন বিজ্ঞান বের হবে না, কুরআনে বিজ্ঞানের লেশ মাত্র নেই এগুলো আপনাদের গুজামিল। কুরআন তথা যাবতীয় ধর্মের মূল বেইজই হচ্ছে কিচ্ছা কাহিনী, এসব কিচ্ছা কাহিনীকে সত্য মনে করার কোন কারণই নেই।
Scientific miracles in the Quran? Analysis of Zakir Naik's claims
শেষ কথা: পোস্ট'টি কোন ওয়াজ মাহফিলে প্রচার করলে, অথবা কোন মাদ্রসার ছাত্র অথবা হুজুর শ্রেণীর দ্বারা লিখা হলে তাহলে হয়তো যুতসই হতো, কিন্তু আপনার মত এমন বিজ্ঞ একজন ব্লগারের কাছ থেকে এমন ভুল ভাল পোস্ট সত্যিই হতাশ জনক। এমনিতেই প্রতিদিন ফেসবুক,ইউটিউবে হুজুর শ্রেণী মানুষকে ব্রেইনওয়াশ করে ছেড়ে দিচ্ছে আর আপনারা যদি ব্লগেও তাই করেন, তাহলে ব্লগ আর ফেসবুকের মধ্যে কোন পার্থক্যই আর থাকলো না।
ধন্যবাদ।
নোট: পোস্ট'টিতে অনেক বানান ভুল থাকতে পারে, পরে ঠিক করে দিবো।