বাংলাদেশের সামাজিক ব্যবস্থায় বিবাহিত জীবনে প্রতিটি স্বামীকে প্রায়ই একটি নরকে যেতে হয়। সেই নরকটির নাম 'গাউছিয়া'। আমাদের নারীরা বিশেষ করে স্ত্রীরা নিজ স্বামীর ব্যাপারে যতই রক্ষনশীল হোক না কেন, এই নরকে স্বামী সহ প্রবেশ করলে যথেষ্ঠ উদার হয়ে যান। যতই অন্য নারীরা স্বীয় স্বামীর পাশে এসে দাঁড়াক বা গুতো দিক কিংবা হাই হিল দিয়ে পা মাড়িয়ে দিক, এই সব ব্যাপারে স্ত্রীরা খুব একটা সচেতনতা দেখান না। যে কারনে আমি যতই বলি, ' আহা আপু, ধাক্কা দিচ্ছেন কেন?" বা চিৎকার দিয়ে বলি, বাবাগো! মাগো! আল্লাহরে! আমার পা দিসে শেষ করে' তখন আমার স্ত্রীর চোখে মুখে থাকে রাজ্যের উদাসীনতা।
কয়েকদিন আগে আমি অবশ্য এই নরকে যেতে যেতে বেঁচে গেছি অবশ্য ফাঁড়াটা গিয়েছে আমার সদ্য কেনা প্যান্টটার উপর দিয়ে। এই প্রচন্ড গরমে গাউসিয়াতে না ঢুকার জন্য যখন স্ত্রীকে নানা ধরনের বিনিময় প্রস্তাব দিচ্ছিলাম, স্ত্রী তখন আমার প্রতিটি কথায় 'হু হু' করে মাথা দুলিয়ে পরম বিক্রমে ভীড় ঠেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ মনে হলো, কে যেন খুব আলতো করে আমার পশ্চাৎ দেশে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। কি ভয়াবহ ব্যাপার!
দেশের অবস্থা কোথায় গিয়েছে এই ভেবে আমি শংকিত। কোন শালার পুত আমাকে মেয়ে ভেবে এইভাবে পেছনে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, এই সব ভাবতে ভাবতে পেছনে হাত দিয়ে দেখি, হুড়মুড় করে এক বোরকা পড়া মহিলা ভিড়ের মধ্যে জোরে ছুটে চলে গেলেন। আমি প্যান্টে পিছনে হাত দিয়ে দেখি, ব্লেডের সূক্ষ্ম পোঁচে আমার প্যান্টের পকেট প্রায় দুই ভাগ। মানিব্যাগ কোনভাবে ঝুলে আছে।
সামগ্রিক পরিস্থিতিতে স্ত্রীর দিকে ঠান্ডা দৃষ্টিতে তাকালাম। দেখলাম, স্ত্রীর দৃষ্টি আরো ঠান্ডা।
"চলো যা হবার তা হইছে, মার্কেটে ঢুকি - " এই টাইপের কিছু একটা স্ত্রী বলতে পারে ভেবে বুকের গভীর থেকে একটা দশ মন ওজনের ধমক রেডি করছিলাম। পরে দেখি স্ত্রী বললেন, চলো এখান থেকে। কোন দরকার নাই এই আজাবে থাকার। আমি গুলশান থেকে কিনব।
তৃপ্তির একটা ঢেঁকুর উঠলো কিন্তু স্বাদটা বড়ই তিতা। কই গাউসিয়া আর কই গুলশান।