আমি দীর্ঘদিন ধরে ব্লগার সোনাগাজীকে পর্যবেক্ষণ করে আসছি একজন সহ ব্লগার হিসাবে। একটা সময় উনি যখন তুলনামূলক স্বাভাবিক ব্লগিং করতেন, তখন অনেকেই তাঁর সূক্ষ্ম হিউমারের বেশ ভক্ত ছিলো। কিন্তু একটা সময় লক্ষ্য করলাম, তাঁর মধ্যে এক ধরনের স্বৈরাচারী মনোভাব বা 'আমিই সেরা' টাইপের একটি মানসিকতার জন্ম হলো। ব্যাস - সেই থেকে শুরু। এই অহংকার উনার ধ্বংসের মুল।
একটা সময় ব্লগে কিছু সুনির্দিষ্ট ক্যাটাগরির পোষ্টে ব্লগাররা তুলনামূলক বেশ কঠোর ভাষায় সমালোচনা করতেন। কিন্তু ২০১৬ এর পরে এই ধারা একেবারেই 'নিহত' হয়েছে। যৌক্তিক আলোচনা বা সমালোচনা বা গঠনমূলক সমালোচনা এখন দেখা যায় না। সমালোচনার জায়গায়, ছোট ভাই, বড় ভাই বা বোন ইত্যাদির হবার একটি ট্রেন্ড চলছে। মাঝে মাঝে সকাল বেলা খালি পেটে যখন ব্লগে বসি আর সমালোচনার নামে মিষ্টি ভাষায় 'কান মলে দাও' টাইপের আবদার দেখি - তখন ডায়াবেটিকসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এই ধারার মধ্যে এক সময় ব্লগার চাঁদগাজী ছিলেন যিনি মাঝে মাঝে যৌক্তিক কিছু চাছাছৌলা এবং তুলনামূলক কঠোর প্রশ্ন করে পোস্টদাতাকে বোঝাতেন - ভাই আপনি ব্লগে লিখতে এসেছেন, এটা কোন ফোরাম বা ফেসবুক না।
যেমন একবার মায়ানমার আর বাংলাদেশের মধ্যে যখন উত্তেজনা চলছে, প্রায় যুদ্ধ শুরু হবার উস্কানি দিচ্ছিলও মায়ানমার, তখন একজন ব্লগার বিশাল এক পোস্ট লিখেছিলেন, যে কিভাবে মায়ানমারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যায় বা এই ধরনের কোন একটা বিষয় নিয়ে।
ব্লগার চাঁদগাজী তাঁকে মন্তব্য করেছিলেন, আপনার পোস্টটি বার্মিজ ভাষায় লিখে, মায়ানমার এমবাসিতে পাঠিয়ে দিন। দেখবেন কিছুক্ষণ পর হাজার হাজার বার্মিজ সৈন্য সারেন্ডার করার কান্নাকাটি করছে।
আমাদের ব্লগে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বিশেষ টিমের নজর প্রায় থাকে। এখন তারা পোস্ট দেন না কিন্তু তারা সবাইকেই নজরে রাখেন। একটা সময় তারা সরকারের পক্ষে প্রচুর পোস্ট দিতো। পোস্টগুলো বেশ হাস্যকর টাইপের হতো এবং সেখানে নানা ধরনের উন্নয়নের গল্প শোনানো হতো।
এমন একটি পোস্টে ব্লগার চাঁদ-গাজী গিয়ে প্রশ্ন করলেন - বুঝলাম দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। খুব ভালো কথা। দেশ উত্তরে আগাক, পশ্চিমে আগাক, পূর্বে আগাক শুধু দক্ষিণে না এগোলেই হলো কারণ দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর।
আরেকবার এক ভদ্রলোক বিশাল খেঁটে খুটে পোষ্ট দিলেন যে মোনালিনার বাড়ি কোথায় আসলে? পোস্টটা আসলেই হাস্যকর ছিলো।
ব্লগার চাঁদ গাজী মন্তব্য করলেন - মোনালিসার আসল বাড়ি হলো আমাদের কুমিল্লায়। আপনি এটা বের করতে পারেন নি।
এই যে মন্তব্যগুলো - এই গুলো কি ব্যক্তি আক্রমন? এই গুলো কি কাউকে আঘাত করা? কারো পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করা? এই ধরনের অভিযোগ করলে সেটা ওভার রুলড হবে। কিন্তু কোথায় এখন এ ধরনের মন্তব্যগুলো? ব্লগার সোনাগাজীর এখনকার মন্তব্যগুলো দেখলে গা রিরি করে উঠে। মনে হচ্ছে আমি কুরিল বস্তির বাইরে টঙের দোকানে বসা কিছু অর্ধ শিক্ষিত মানুষের অশ্লীল বিতর্ক বা যুক্তি শুনছি। বা যে মানুষটা নিজের মতের বাইরে ভিন্ন কোন মতকে গ্রহণ করতে জানেন না। অধিকাংশ পোস্টে গিয়ে পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া, ক্যাচাল।
কিছুক্ষণ আগে মনে হলো, একটা মানুষ শুধু শুধু এই ধরনের আচরণ করতে পারেন না। এখানে নিশ্চয় কোন কিন্তু আছে। পরে মনে হলো, আচ্ছা তিনি কি মানসিকভাবে অসুস্থ? কোন কারণে মানসিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছেন? রোগটা কি? গভীরতা কেমন?
আরো কঠোর সমালোচনা করতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু পরে ভাবলাম, একজন মানসিক অসুস্থ লোকের সমালোচনা করা যায় না। এটা উচিতও না। আমরা তাঁর মানসিক সুস্থতা কামনা করছি। আমি আশা করব, মানসিকভাবে অসুস্থ কাউকে আমরা গালমন্দ করতে পারি না।
আমার মনে হয়, উনার নিজের গণ্ডি বা ব্লগে ব্লগিং করাই সবচেয়ে শ্রেয় ও নিরাপদ। প্রথম পাতা এবং সকল ব্লগে তাঁর মন্তব্যে সুবিধার বিষয়টি আশা করি ব্লগ টিম পূর্ণ বিবেচনা করবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:২৯