somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই শহরের গল্প

১৯ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাঁই সাঁই করে ছুটে যাওয়া শানদার একখান শকট। ভেতরে ঝকঝকে পোশাকে স্মিতহাস্যধারী একসার আদম। অপ্রত্যাশিত দ্রুততায় পৌঁছে যায় প্রত্যাশিত গন্তব্যে। ভরপুর তৃপ্তিতে মাথা উঁচিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসে আলোকিত শহরে। সম্মানিত, সুশোভিত এক বা একাধিক নারী এবং স্বর্গীয় ছাঁচে গড়া তুলতুলে শিশুর দল সহাস্যে আলিঙ্গনাবদ্ধ করে ফেলে নিমিষেই। আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের কলকল কল্লোলধবনি শুনতে কান পাততে হয়না। তারপর কেউ কেউ হারিয়ে যায় অই দূর পাহাড়ের ঘন্টাধবনি লক্ষ্য করে। কারো বাসনা জাগে প্রেয়সীর গায়ে লুকোনো চাপ চাপ হাল্কা সুবাস আরো নিবিড়ভাবে পরখ করতে। আরেকদল উদরপূর্তিকেই রাখে অগ্রগণ্য। তীব্র উপভোগ, বিশুদ্ধ উপযোগ, প্রবল জীবনবোধ এই নিয়ে বেশ আছে অনুপম শহরবাসীরা।

তারা এই শহরের বাসিন্দা, বান্দা নয়। শহর তাদের গোলামী করতে শেখায়নি। শেকলে বেঁধে বাধ্য করেনি জন্তুরূপী জীবনযাপনে। ধুঁকে ধুঁকে চলতে থাকা নিরানন্দ এক যানে চড়িয়ে পাঠায়নি দাসত্ব করতে। জানালার ঘোলা কাঁচে এঁকে রাখেনি ভয়াবহ বিষন্ন একসার জীর্ণ মুখোচ্ছবি।

অনুপম শহরের নাগরিকজীবন অভিশপ্ত শহরবাসীদের মত নয়।

অভিশপ্ত নগরের আদমকুলের অনির্দিষ্টযাত্রা ফুরোয়না এ জীবনে। তারা চলতে থাকে কলের পুতুলের মত, কলুর বলদের মত। শহরে তাদের একটাই মুখোশ- পরাজিত এক দাসের গ্লানিময় অবয়ব। চোখের কোনা বেয়ে ঝরে পড়ে তরল ক্লান্তি। গোলকধাঁধাঁর চক্রে পড়ে প্রতিনিয়ত পথ খুঁজে দিশেহারা মানবেরা সেই কবে প'রে নিয়েছিল নিরাশার জোয়াল, মনে নেই কারো!

তবু অবিশেষ কোনো গুমোট সন্ধ্যায় অথবা ভীষন একঘেয়ে কিছু ঘানি টানা মধ্যাহ্নে, আর বিক্ষিপ্ত কতক ঘুনে ধরা রাত্রিপ্রহরে তারা স্বপ্ন দেখে। এক টুকরো সাহস তারা সন্তর্পণে বাঁচিয়ে রাখে স্বপ্নবচন উচ্চারনে। তারা আলোচনা করে কাব্য ও দর্শন। চর্চা করে ইতিহাস, বিজ্ঞান। গড়ে তুলতে চায় আরেকটা অনুপম শহর। দূরের অই সুরেলা আওয়াজ, টুকরো টুকরো রিনিঝিনি হাসির লহরী বুভুক্ষ করে তাদের মুক্তির স্বাদ পেতে। অভিশপ্ত নগরের সবাই আর মন্ত্রবন্দী শ্রমিক-প্রজা আর দাস নয়। তারা কেউ কেউ আজ পূজারী ও ভাস্কর।

পূজারী স্বপ্নের; ভাস্কর মুক্তির।
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×