কোন কোন স্বামী স্ত্রীদের মধ্যে রাগ অভিমান বা ঝগড়া হলে ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রী বলে “কালকেই আমার বাপের বাড়ি চলে যাবো।তোমার ভাত খাওয়ার আমার আর ইচ্ছা নেই। আমার সাথে আর যোগাযোগ রাখবা না।” কিন্তু আমার বেলায় ঘটনা এর বিপরীত। আমার বউ ঝগড়া বা রাগ অভিমান করলে বলে “এক মাস কোন আদর পাবা না। খবরদার এই এক মাস আমার সাথে ঘুমাবে না তুমি”
আমি হাসতে থাকি যখন ও এই কথাটা বলে কিন্তু এই কথার জবাব দিতে গিয়েও আমি দিতে পারি না। আসলে জবাব দেওয়ার চেয়ে তখন হাসিটাকে সামলাতে পারি না। যার কারনে কিছু বলতে পারি না। ঘটনা ঘটেছে একটু আগে। ও আমাকে যা যা লিস্ট দিল বাজারের আমি ঠিক সেটাই বাজার করে এনেছিলাম। বড় একটা কাতলা মাছ এনেছিলাম। তাকে বললাম “তূবা, কাতলা মাছের মাথাটা দিয়ে মুড়িঘন্ট রান্না করিও তো পাশের বাসার হাবিব ভাই এর বউ যেমন রান্না করে।” ও সব কিছু বাজারের ব্যাগ থেকে একটা একটা করে নামাতে লাগলো। কোন কিছুই বলছিল না। আমি আবার বললাম “শুনো, আর মাছের পিচ গুলো দিয়ে কাতলা মাছের কালিয়া রান্না করিও পাশের বাসার হাবিব ভাই এর বউ যেমন রান্না করে।”
পরিস্থিতি তখনো ভালো ছিল।কিন্তু আমি যখন আবার বললাম “আজ তো অফিস ছুটি সারাদিনই বাসায় আছি। তোমারে না হয় আমি হেল্প করলাম। কি কি করতে হবে আমাকে বলো। আমি অনেক ভালো জামাই বুঝছো।” ও আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে ছিল। আমি ভাবছিলাম “পায়েশ রান্নার কথাটাও বলবো কিন্তু ও যে লুকটা দিল যেন আমাকে বলছিল “তুই এতো খাই খাই করস ক্যান ব্যাটা?” আমি নিজেরেই নিজে শান্ততা দিলাম। পরে ও যখন নিজেই বললো “তোমার জন্য আর কিছু রান্না করতে হবে?” আমি খুশি হয়েছিলাম। আমি একটু হেসে ওর গা ঘেষে আস্তে করে ধাক্কা দিয়ে বলেছিলাম “জানতাম তুমি আমায় এটা বলবে আমি ভালো জামাই এই জন্য।বেশি কিছু না। একটু পায়েশ রান্না করলেই হবে। ঐ যে পাশের বাসার হাবিব ভাই এর বউ যেমন রান্না করে।” ব্যাস ঘটনা ওখান থেকেই শুরু। আমাকে বললো “কথায় কথায় পাশের বাসার ভাবীরে নিয়ে আসো কেন? সমস্যাটা কি তোমার? এক কাজ করলেই তো হয় এই বাজার গুলা নিয়ে উনার কাছে দিয়ে আসলেই হয়। উনি রান্না করে খাওয়াবে। রান্না সব বন্ধ। তোমার পাশের বাসার ভাবীরে বইলো খাওয়াইতে। আর খবরদার আমার সাথে কথা বলবা না। এক মাস কোন আদর নাই।”
বিকেল বেলা ছাদের এক কোনে বসে থাকি। আকাশ দেখি। মাঝে মাঝে আকাশের দিকে যখন তাকাই তখন ভাবি সব কিছু এমন হয়ে গেলো কেন? আমি কি কখনো এমনটা আশা করেছিলাম? তূবা রান্না ঠিকি করেছিল এসব কিছু বলার পরও।আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল “আর একটু পায়েশ দিব?” আমি শুধু ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমি কখনো বুঝতে পারি না হিসেব মিলাতে পারি না। ও আমাকে কি করে এমন ভালোবাসছে? তাও আমার মত একটা ছেলেকে? কেমন করে আমাকে বিয়ে করে নিল। খাওয়া শেষে আমি ওকে কখনো বলি না রান্না আজকে ভালো হয়েছে। সত্যি বলতে কি পাশের বাসার হাবিব ভাই এর বউ এর রান্না থেকে তূবার রান্না আরো ভালো। ওর রান্না করা কোন কিছুই আমি না খেয়ে থাকি না। কিন্তু আমি ইচ্ছে করে এমন করি। তূবা কি কখনো এটা বুঝতে পেরেছে? পেরেছিল কি তূবার রান্নার যে কোন কিছু আমি তৃপ্তি নিয়ে খাই?
মিনিটে দশেক পর সাজিদ এর ফোন আসে। ফোন করেই আমাকে আফরাজ ভাই এর নাম্বারটা দেয়।সাজিদ বেশ কয়েকবার বলেছিল আফরাজ ভাই এর নাম্বার কেন খুঁজছিস? কি দরকার?” আমি শুধু বলেছিলাম এমনি। ভার্সিটির বড় ভাই ছিল। অনেক কাজে হেল্প করতো। তুই তো জানিস আমি এখন যে জবটা করি সেটার ব্যবস্থা উনিই করে দিয়েছিল। উনার সাথে যোগাযোগ নেই। ভাবলাম তোর কাছে থাকতে পারে। আমার ফোন হারাতে সব হারিয়ে ফেলছিলাম।”
ভার্সিটিতে পড়াকালীন সময়ে তূবাকে বেশ পছন্দ করতো এই আফরাজ ভাই। আফরাজ ভাই ছিল আমাদের এক ব্যাচ এর সিনিয়র। উনাকে প্রায় দেখতাম তূবার পিছনে ঘুরঘুর করতে। উনি মাঝে মাঝে তূবাকে চিঠি দিতো। আর এই চিঠির বাহকই আমি ছিলাম। আফরাজ ভাই নিজেই আমাকে দিয়ে বলতো “কি অবস্থা শোভন? তোমার কোন হেল্প লাগলে আমাকে বইলো। আর এটা তূবাকে দিও।” আমি হাসিমুখে চিঠি এনে তূবাকে দিতাম। ও চোখ বড় বড় করে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে চিঠি নিত। আর এই গুলা আমার সামনেই পড়ে হাসতো। আর বলতো ছাগলটা কি লিখছে দেখো।” আমার খারাপ লাগতো। কারণ ওখানে লেখা থাকতো এক গাদা ভালোবাসার কথা। মেঘের কথা। পাহাড়ের কথা। নীলকণ্ঠ পাখির কথা। সে পাখি উড়তো পাহাড়ের বুক ধরে। কখনো এই পাহাড়ের গা ঘেষে বয়ে যেত শীতের ঘাঢ়ো কুয়াশা। তাতে কিছুই দেখা যেতো না। শুধু বুঝা যেত ভালোবাসার কথা। সাত রং এর কথা। বিকেলের রোদের কথা।” আমি তুবাকে বলতাম তুমি এই গুলা আমার সামনে পড়িও না।এই গুলা তোমাদের নিজেদের ব্যাপার। তূবার সাথে আমার বেশ ভালো একটা বন্ধুত্ব ছিল। এর বেশি কিছু ছিল না। কিন্তু আফরাজ ভাই যখন ওকে এমন করে চাইতে লাগলো এমন করে চিঠি দিতে লাগলো আমার বেশ খারাপ লাগতো তারপরেই বুঝতে পারলাম ওর জন্য কতটা ভালো লাগা কাজ করতো আমার। ওকে কেউ ভালোবাসার কথা বললে আমার কতটা খারাপ লাগতো। কিন্তু আমি কিছুই বলতাম না। বলাটা আমার জন্য মানায় না। ও আর আমি অনেক আলাদা। তবে মাঝে মাঝে ও আমাকে মায়া মায়া করে বলতো “আজকে একটু বাসায় পৌছায় দিবা?” আমি না করতে পারতাম না। আবার মাঝে মাঝে রাতে ফোন দিয়ে বলতো “তোমাকে একটু বিরক্ত করি?” যত দিন যেতে লাগলো আমার আরো খারাপ লাগতো। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ওর সাথে কথা বলা সব কিছু কমিয়ে দিতে হবে। কিন্তু আমি পারিনি।
একদিন আফরাজ ভাইকে বলেছিলাম “ভাইয়া এখন চিঠির যুগ না। আপনি তো চাইলে ওর নাম্বারে ফোন দিয়ে কথা বলতে পারেন। তাছাড়া ও তো আপনার চিঠির কোন উত্তরই দেয় না। আমার মনে হয় আপনাকে ওর পছন্দ না।” আফরাজ ভাই শুধু আমাকে বলেছিল এটার ভিতর আলাদা একটা অনুভূতি আছে। তুমি বুঝবা না। প্রেমে পড়ো নাই তো এখনো মাথায় এইগুলা আসবে না। আর প্রেম কি এতো সোজা? চাইলাম আর পাইলাম।একদিন ঠিকি আমার সাথে প্রেমটা হবে। শুধু দোয়া কইরো।” আসলেই ওদের ব্যাপারটা আমার কাছে কখনো বুঝে আসেনি। একদম প্রথম চিঠিটা যখন আমি ওর কাছে নিয়ে যাই তখন ওকে আমি বেশি বিরক্ত দেখেছিলাম। আমাকে বলেছিল “কি এটা?” আমি বললাম “চিঠি” ঠিক সেদিনই আমাকে ও বেশ কড়া ভাবে একটা কথা বলেছিল “এমন আশা করি নাই শোভন আমি।” ছেলেদের এই একটাই সমস্যা। প্রথমে ভালো ভালো কথা বলে বন্ধুত্ব পাতবে। তারপর একটা সময় প্রেম নিবেদন করবে।” পরে আমি বলেছিলাম “এই চিঠিটা আফরাজ ভাই তোমাকে দিতে বলেছে।
যতদুর জানি ওদের প্রেমটা হয়েছিল। তবে আমি শিউর না। একটা পর্যায়ে আর চিঠি আদান প্রদান করতো না।তূবা নাকি বেশ রেগে গিয়েছিল এই আফরাজ ভাই এর উপর। তবে ওদের সাথে ফোনে কথা হতো এটা আমি শিউর ছিলাম।
ভার্সিটির পরীক্ষার শেষে আফরাজ একদিন ফোন দিয়ে বললো “তুমি আমাকে অনেক হেল্প করছো। সাত মাস পর তূবার সাথে আমার বিয়ে। আমরা সব পরিকল্পনা করে ফেলছি। ওর বাবা মা মানবে না। তাই নিজেরাই বিয়ে করবো। একটা পারিবারিক কাজে বেজে গেছি। জায়গা সম্পত্তি নিয়ে। এটা মিটমাট হলেই বিয়ে করে ফেলবো। সাত মাস মোটামুটি লাগবে। যাই হোক পরীক্ষা তো দিলা। এখন এমবিএ করে নিও। আর তারপাশে তোমার জন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা করছি। তিনদিন পর আমার সাথে দেখা করবা। ইন্টারভিউ দিতে হবে।”
আমি আবার আকাশের দিকে তাকাই। এই আকাশ হঠাৎ করেই রুপ পরিবর্তন করে। এই আকাশে রক্তিম আভা সন্ধ্যার। এসব ভাবতে ভাবতেই আমি আফরাজ ভাইকে ফোন দিয়ে দিলাম।আমার কিছু কথা জানার ইচ্ছা ছিল।কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা ছিল। জানার ইচ্ছা ছিল তূবার সাথে আমার বিয়ে হওয়ার পরও আপনি আমাকে কিছু বলেননি কেন? এই প্রশ্ন গুলো আমাকে ঠিক মত ঘুমাতে দেয় না। ঠিক সাত মাস পরই আফরাজ ভাই এর সাথে তূবার বিয়ের কথাও ছিল। আফরাজ ভাই জোর দিয়ে আমাকে আসতে বললো স্বাক্ষী হিসেবে। আমি নিষেধ করতে পারছিলাম না। পারছিলাম না বলতে আমাকে মাফ করেন। যখন কাজি অফিসে যাই তখনি তূবার দিকে বেশ তাকিয়ে ছিলাম। কারণ ও শাড়ি পরলে এতো মায়াবী লাগে। আমার কি রকম খারাপ লাগছিল এক আল্লাহ জানে। এই খারাপ লাগার মানসিক চাপটা নেওয়ার ক্ষমতা আমার ছিল না। তবুও আমি বেশ স্বাভাবিক ছিলাম। সেদিন আফরাজ ভাই আসেনি। ফোন দিলে উনার ফোন সুইফ অফ পাওয়া যায়। আমি তূবাকে বলেছিলাম “হয়তো কোন একটা কাজে আটকে গেছে।উনার বাসায় প্রবলেম চলছে আমাকে অনেক আগে বলেছিল। আর তুমি তো সব জানোই।” কিন্তু ঘটা করেই সেদিন কিংকর্তব্যবিমুঢ় এর মত ওর সাথে আমার বিয়েটা হয়ে যায়। ও শুধু একটা কথাই বলেছিল “আমি বাসায় নোট লিখে আসছি বিয়ে করতে যাচ্ছি।বদদোয়ার সাথে একটু দোয়াও কইরো। আমি এখন কি করবো? বিয়ে তো আমি করবোই আজকে।”
ঘড়ির দিকে তাকাই রাত এখন নয়টার কাছাকাছি। আফরাজ ভাই এর সাথে কথা হলো বেশ ত্রিশ মিনিটের মত। তূবা বিছানা গোছাচ্ছে। মশারিটা পুরানো হয়েছে। একটু ছিড়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে এই ছিদ্র দিয়ে মশা ঢুকে। এই ছিদ্রটাও তূবা সেলাই করে নিয়েছে একটু আগে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে থাকি এক নজরে। আমার এমন তাকানো দেখে তূবা বললো “কি ব্যাপার এমন করে তাকিয়ে আছো কেন? কিছু বলবে তুমি?” আমি কোন কথার উত্তর দেই না। কিন্তু আমি ভাবি বিয়ের আগের তূবা আর এখনের তূবা অনেক আলাদা। এখন ওর মুখে তাকালে মনে হয় একজন সংসারী মেয়ে। একজন স্বামীর আদর্শ বউ।
এরএকটু পরই আকাশে বিদুৎ চমকায়।জানালার পর্দা গুলো উড়তে থাকে। বৈশাখ মাস চলে এসেছে। তূবা জানালার পর্দা ঠিক করে দিয়ে বাহিরে দিকে তাকিয়েই বলে “দেখো বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৈশাখ মাসের প্রথম বৃষ্টি।” কেউ কেউ বলে এই বৃষ্টি মানুষের মন পরিষ্কার করে দেয়। ভিতরের কষ্ট মুছে দেয়।বৃষ্টি এলেই নাকি চারপাশে তার সৌন্দর্য ছড়িয়ে দেয়। জানান দেয় নতুনত্বের ছোঁয়া। কিন্তু এই বৃষ্টির প্রতি আমার কোন রোমান্টিকতা কাজ করে না। আমি অনেক ইতস্ততা হয়ে বললাম “ভিজবা?” ও আমার দিকে ফিরে অবাক হয়ে বললো “তুমি বলছো ভিজতে?
রাত দশটার কাছাকাছি। ছাদে বৃষ্টির মাঝে দাঁড়িয়ে আছি দুজনে। ও ভিজছে আর আমি দেখছি। ও চুল ছেড়ে দিয়ে দু হাত মেলে বলতে লাগলো…
আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে
জানি নে, জানি নে
কিছুতেই কেন যে মন লাগে না ।।
আমি ওর কাছে যাই। আমার এমন কাছে যাওয়া দেখে ও একটু লজ্জায় চুল কানে গুজে চোখের ইশারা দেয় “কি হুম?” আমি কিছু বলি না। এই বৃষ্টির জলের সাথে আমার চোখের কোনের জলটাও কি তূবা বুঝতে পারছে? আমি বললাম “এমন করে ভালোবাসলে কেন তূবা?” তূবা আমার চোখে তাকায়। ওর চোখ মুখ ঠোটে বৃষ্টির জল বেয়ে বেয়ে পড়ে। আমাকে বলে “এই তোমার চোখে কি পানি? কি ব্যাপার তোমার কি কোন এক্স ছিল? জানতাম নাতো। তার কথা কি মনে পড়েছে?” আমি এই কথার জবাব না দিয়ে আবার বললাম “এমন করে ভালোবাসলে কেন?” তূবা এবার আমার দিকে গম্ভীর হয়ে তাকায়। কিছুক্ষন ঝিম মেরে থেকে বলে “ভালোবাসার কোন কারণ থাকে নাকি? যে ভালোবাসার কারণ থাকে সেটা ভালোবাসা না। কারণ ফুরিয়ে গেলে ভালোবাসাটাও ফুরিয়ে যায়। তোমার কিছু হয়েছে? এমন করে কথা বলছো কেন? আমাকে বলো।” আমি কাঁদতে থাকি। ওকে জড়িয়ে ধরি এই বৃষ্টির জলে। আমি জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলাম “আফরাজ ভাইকে দিয়ে তুমিই নাটক করে চিঠি গুলা নিজেই লিখে আমার মাধ্যমে তোমার কাছে পাঠাতে। আমার সামনে ইচ্ছে করেই পড়তে যেন আমি কিছু একটা বলি। আবার আফরাজ ভাইকে দিয়ে তুমিই চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে। আফরাজ ভাই এর সাথে বিয়ের একটা নাটক ছিল। এতো কিছু করলা কেন? আমাকে বলা যেত না? কি মনে করো? মেয়ে বলেই ভালোবাসার কথা বলা যাবে না?” তূবাও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আর ন্যাকামি করে বলতে থাকে “তুমি বলো নাই ক্যান? বুঝো নাই আমি কতটা চাইতাম তোমায়? মাঝে মাঝে বলতাম বাসায় পৌছে দাও। রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা তোমার সাথে কথা বলছি। আমিই বক বক করছি।তুমি শুধু আমার কথা গুলো গিলছো। ভালোবাসার অর্থ না বুঝার ভান করেছো। একটা কথা কি জানো? কাউকে মন থেকে চাইলে, ভালোবাসলে শুধু ভালোবাসাটাই আসল নয়। ভালোবাসার জন্য শক্ত করে হাতটা ধরতে হয় সারা জীবনের জন্য। আমি ভালোবেসেছি তোমায়। আর এই ভালোবাসার হাতটা ধরার জন্য যা ইচ্ছা তাই করছি। ভালোবাসার মানুষকে আড়ালে আড়ালে নিজের মাধ্যমে না হোক অন্যের মাধ্যমে গোছিয়ে নিয়েছি। আর তুমি কি মনে করছো আমি কিছু বুঝি না? পাশের বাসার ভাবীর কথা এমনি এমনি বলে আমাকে রাগাতে। তুমি যখন খেতে আমি কি এক মন ভরা আবেগ নিয়ে তোমার খাওয়া দেখতাম।” আমি কিছু বলি না। শক্ত করে আরো জড়িয়ে ধরি। ওকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকের সাথে মিশে যাওয়ার অনুভূতিটা অন্যরকম। এই অন্যরকমের অনুভূতিটা অন্তরালের অন্তরে অন্তরে মিশে যাক। পরিপূর্ণ হোক এক ভালোবাসার। যে অন্তরালের অনুভূতিতে ভালোবাসা দেওয়া ছাড়া আর কিছু নেই…