somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পড়ালেখা, পরীক্ষা, হরতাল এবং অন্যান্য ...

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ সেমিস্টার শুরু হয়েছে হরতাল দিয়ে। রেজিস্ট্রেশন করতে যাবো, হরতাল! রেজিস্ট্রেশন করলাম। ক্লাস শুরু হলো। প্রথম ক্লাস, তাই স্যার ও নেই ছাত্ররাও নেই। দুই একজন গিয়ে ক্লাসে বসে আছি শিক্ষক আসার অপেক্ষায়। স্যার আর আসে নি। পরের ক্লাসেও একই অবস্থা। স্যার নেই। আমরা কয়েক জন গিয়ে বসে আছি।
এর পর থেকে আর ক্লাস করতে যেতে হয় নি। কারণ হরতাল। আর হরতাল হওয়ার কারণে মেকআপ ক্লাস গুলোর তারিখ শুক্রবার বা অন্যান্য দিন পড়ছিল। মাইনোর কোর্স। ক্লাসমিটেরা এক জন একটা বিষয় নিয়েছে। কারো সাথে কারো মিল নেই। তাই অন্য ব্যাচদের সাথে ক্লাস করতে হচ্ছে। তাদের কারো সাথে পরিচয় নেই। তাই কাউকে কল করে যে জিজ্ঞেস করব তার যোগাড় নেই। স্যার ও নতুন। তাই স্যার এর নাম্বার ও নেই। এর পর হরতালে হরতালেই প্রথম মিডটার্ম চলে আসছে। কোন ক্লাস ছাড়াই মিডটার্ম!

মিডটার্ম আর দি নাই। ঐ সাবজেক্টটি ড্রপ দেওয়ার ও হয়তো সুযোগ ছিল না। জিজ্ঞেস করি নি ড্রপ দেওয়া যাবে কিনা। অলসতা করে। একটি সাবজেক্ট না পড়েও টাকা দিতে হবে এবং সেমিস্টার শেষে সাবজেক্ট এর সামনে লেখা থাকবে ইনকমপ্লিট। থাকনা।। ছোট্ট খাট্টো একটা অভিজ্ঞতা। জ্ঞানীরা বলেন, সব ধরনের অভিজ্ঞতার নাকি দরকার আছে।

এটা গেলো একটি বিষয়ের কথা। আরেকটি বিষয়ের ক্লাস করছি সব গুলো। ঠিক মত। প্রথম মিডটার্ম। হরতালের কারনে তারিখ পড়ছে অন্যদিন। গেলাম পরীক্ষা দিতে। গিয়ে শুনলাম স্যার পরীক্ষা নিবে না। অন্য দিন নিবে। অন্য তারিখে গেলাম। একই কথা। পরীক্ষা পরের শুক্রবারে নিবে। আমি জানলাম ২টায় নিবে। ১২টার দিকেই রুম থেকে বের হলাম। যেন বনানী মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে নিতে পারি। জুমার নামাজ পড়ে ক্লাসে গেলাম পরীক্ষা দিতে। কেউ নেই। ভয় পেলাম। স্যার পরীক্ষা নিয়ে পেলেছে নাকি। স্যারকে কল দিলাম। হ্যা, সত্যি, সকাল ১০টায় পরীক্ষা নিয়ে পেলছে। স্যারকে জানালাম, স্যার আমি তো জানতাম ২টায় পরীক্ষা... স্যার নিজে থেকেই বলল আর পরীক্ষা নিবে না। পরের পরীক্ষা দিতে। ক্লাস করতে। ক্লাস করি... ১০০ মার্ক এর মধ্যে ২৫ মার্ক এমনিতেই হারিয়ে গেলো।

আরেকটা বিষয়ের ক্লাস ও করলাম পরীক্ষাও দিলাম। মোটামুটি ঠিক মতই হলো সব কিছু।

এরপর সময় হয়েছে দ্বিতীয় মিডটার্মের। শুনে কিছুটা অবাক হই। কোন ক্লাস করিনি। পুরো সপ্তাহ জুড়ে হরতাল অবরোধ থাকে। শুক্রবার শনিবার ক্লাস হয়। কখন হয় জানি না। জানতে ইচ্ছেও করে না। এক ধরনের অলসতা। জানি না হয়তো গ্র্যাজুয়েশনের শেষের দিকে অনেকেরই এমন হয়।
পরীক্ষা দিতে হবে। কি করার। অন্যদের থেকে ক্লাস নোট গুলো কিছু ফটোকপি করে নিলাম। কিছু মোবাইলে ছবি তুলে আনলাম। পরীক্ষার প্রিফারেশন তো নিতে হবে।

কাল পরীক্ষা। পড়তে বসার আগে ফেসবুকে একটু ঢু মারি। শুনি কাল থেকে হরতাল। নোট গুলো বন্ধ করে আবার ফেসবুকিং শুরু করি।

এরপর আবার পরীক্ষার তারিখ পরে। পরীক্ষার আগের দিন নোট নিয়ে বসার পর শুনতে পাই হরতাল। পরীক্ষা হবে না। আবার বই খাতা বন্ধ করি।
সব শেষে আগামীকাল পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সারারাত জেগে থাকার কারণে ঘুম থেকে উঠলাম বিকেল তিনটার দিকে। অলসতা করে একটু বেশিই ঘুমিয়েছি। গোসল করে কম্পিউটারের সামনে বসার পর জানতে পারলাম হরতাল এক্সটেন্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হরতাল।

কয়েক দিন আগে ইউনিভার্সিটিতে দেখে আসলাম ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন। ডিসেম্বরের ২৭তারিখ সম্ভবত। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। তারা ঠিকই ২৭তারিখ থেকেই পরীক্ষা নিবে। জানুয়ারী থেকে আবার নতুন সেমিস্টার শুরু করবে। তারা জানতে চাইবে না আমরা কি শিখছি।

নিয়ম না মানা এই আমি জীবনের চলার পথের নিয়ম গুলোর ব্যাতিক্রম হলে নিজেকে হারিয়ে ফেলি। আমি জানি অনেকেই আমার মত এমন হারিয়ে ফেলে। এ সেমিস্টারে যে সকল সাবজেক্ট গুলোতে সমস্যা হয়েছে সে গুলো এর পরের সেমিস্টারে নিতে হবে। সমস্যা এটা না। সমস্যা হচ্ছে সময়। সময় অনেক মূল্যবান। চার মাস আবার ঐ একই বিষয় নিয়ে পড়ে থাকতে হবে।

শিক্ষকদের কি বলব। উনারা সব ধরনের চেষ্টা করছেন আমাদের শেখানোর জন্য। চেষ্টার করছেন যেন আমরা শিখতে পারি।। কিন্তু এ ভয়ঙ্করের নিয়মের মাঝে তারা নিরুপায়। তাদের হাত বাঁধা। বার বার মেকআপ ক্লাস দেওয়া, বার বার পরীক্ষার তারিখ পালটানো আর হরতালের মাঝেও তাদের ভার্সিটিতে যাওয়া ছাড়া আর কি করার আছে তাদের?

এ সবের জন্য আমরা কাকে বলব? কাকে বলব এসব বন্ধ করুন। আমাদের শিখতে দিন...
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×