মনে ঝড় তোলা বই নং- ১
প্যাপিলন
যে গল্পের প্রতিটা পাতাই অবিশ্বাস্য কিন্তু পরে যদি জানতে পারেন এটা গল্প নয় বরং পুরোপুরি সত্য কাহিনী তখন মনের অবস্থাটা কি দাঁড়ায়? প্যাপিলন এমনই এক অসাধারণ এডভেন্চারের গল্প যা কল্পনাকেও হার মানায়।
এক জেল পলাতক কয়েদীর কাহনী, চলার পথে যাকে মোকাবেলা করতে হয় বিপদের পর বিপদ। জন্ম হয় অকৃত্রিম বন্ধত্বের আর মুখোমুখি হয় চরম শত্রুর। দুটো ঘটনার কথা বিশেষ ভাবে মনে পড়ছে। জলজ্যান্ত একটা মানুষকে হাত পা বেঁধে পিঁপড়ার ঢিবির মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়। খুবই 'খতরনাক' লোক ছিলো সে, কিন্তু প্রায় ৩/৪ দিন ধরে সে যে অসহ্য কষ্ট পেয়ে মারা যায় তাতে শিউরে না উঠে পারা যায়না। তারপর গীর্জায় শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের ঘন্টা শুনেই জমায়েত হতো শত শত হাঙ্গর- কি খুশী! আজ ভোজ হবে। মৃতদেহটা সাগরে পড়া মাত্র..........।
মনে ঝড় তোলা বই নং- ২
ওয়ান হানড্রেড ইয়ারস অফ সলিটিচিউড
এক রহস্যময়, স্বপ্নীল ভূবনের হাতছানি এই বই। চেনা চরিত্রগুলোও যেন কেমন অচেনা। হোসে বুয়েন্দিয়া পরিবারের সাত পুরুষের কাহিনী। ভারতবর্ষের এক জিপসী দল নিয়ে এসেছিলো অচেনা ভাষায় লেখা একটা খাতা। কেউ জানেনা কি লেখা আছে সেখানে। কাহিনী গিয়ে সাত পুরুষে খতম হওয়ার পর জানা গেল সংষ্কৃত ভাষায় লেখা সেই খাতায় আছে- বুয়েন্দিয়া পরিবারের শেষ পরিণতি। 'প্রথম জন মরিবে গাছে, শেষ জনের মরণ হবে পিঁপড়ায়'।......মনে পড়লে এখনো গা ছমছম করে।
মনে ঝড় তোলা বই নং- ৩
দ্যা ওয়াকিং ড্রাম
পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েষ্টার্ন লেখক (যিনি স্যাকেট পরিবারের কাহিনী লিখেছেন, সেবার ওয়েষ্টার্নে যার নাম ওসমান পরিবার) লুই লামুর লিখেছেন এই বই যদিও এটি মোটেই ওয়েষ্টার্ন কাহিনী নয়। বরং এটি ১৩/১৪ শতকের এক ইংরেজ নাবিকের কাহিনী যে নিজের দেশ থেকে জীবন বাঁচাতে তৎকালীন মুসলিম স্পেনে চলে আসে। তারপর শুরু হয় এক মনোমুগ্ধকর এডভেন্চারের যেখানে সে ভ্রমণ করে তখনকার জ্ঞান বিজ্ঞানের শীর্ষে থাকা মুসলিম সাম্রাজ্যের এক দেশ থেকে আরেক দেশে। বাংলাদেশের গ্রামের কৃষক আমেরিকা গেলে তার যে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া হতে পারে মোটামুটি সেই রকম প্রতিক্রিয়াই তার হতে থাকে মুসলমানদের সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শন দেখে। সাথে আছে প্রেম, বিরহ, যুদ্ধ, রাজনীতি ইত্যাদি। তখনকার জীবনপ্রণালী, খাবার-দাবার, যুদ্ধ-সংগ্রাম- এত সাবলীল ভাষায় বর্ণিত যে মনে হবে চোখের সামনে দেখছি। বিশেষ করে তখন ব্যবসায়ীদের (যারা এক দেশ থেকে আরেক দেশে পণ্য নিয়ে যেত) জীবন যে কত কঠিন ছিলো তা ভাল ভাবে বুঝতে পারবেন এই বই পড়লে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০০৯ সকাল ১১:২৫