somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি নজর দিন- রেমিটেন্সের পরিমাণ হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার তৈরি হবে পদ্মা সেতু দেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সব প্রশংসা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা যে অর্থ দেশে পাঠাচ্ছেন আক্ষরিক অর্থে তাই রেমিটেন্স। দেশের অর্থনীতির তৃতীয় শক্তি হিসেবে এই রেমিটেন্স প্রায় পরিচিতি পেয়েছে। কৃষি ও পোশাক শিল্পের পর প্রবাসীদের রেমিটেন্সই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাটাকায় ভূমিকা রেখে চলেছে।
২০০০ সালে বিশ্ব রেমিটেন্স প্রবাহে বাংলাদেশের অবদান ছিল ৩১ শতাংশ। এখন সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ শতাংশ। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে দেশের অর্থনীতিতে এর গুরুত্ব কীভাবে বেড়ে উঠছে।
প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্স আমাদের দেশে মূল্যবান হলেও প্রবাসী শ্রমিকরা বরাবরই মূল্যহীন। এরা আমাদের কাছে শুধুই শ্রমিক হিসেবে গণ্য। প্রতিবছর প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে প্রবাসীরা। অথচ তাদের কোন মূল্য নেই আমাদের দেশে। কোন শ্রমিক বিদেশে মারা গেলে কোম্পানির খরচে দেশে পাঠানো হলেও স্টুডেন্ট বা ভিজিট ভিসায় গমনকারীদের চাঁদা তুলেই দেশে আনার ব্যবস্থা করতে হয়।
বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে মধ্যস্বত্বভোগী বা দালাল প্রথা পরিহার করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সম্ভাব্য নতুন বাজার খুঁজতে গবেষণার পাশাপাশি শ্রমিকদেরও দক্ষতা সৃষ্টিতে আধুনিক মানের পর্যাপ্ত ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া শ্রমিকদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য দূতাবাসগুলোতে অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করা হলে, তাদের পাঠানো রেমিটেন্স দিয়েই ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা সম্ভব।
শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি বা স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা, প্রবাসীদের মান-মর্যাদা বৃদ্ধি করা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আভিবাসনের দুর্বলতাকে চিহ্নিত করে তার সমাধান করা এবং দূতাবাসগুলোতে অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগ করে শ্রমিকদের তাৎক্ষণিক সমস্যার সমাধান করা গেলে শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ দাঁড়াবে বছরে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
উল্লেখ্য, জনগণ আমাদের বড় শক্তি। তাদের সম্পদে পরিণত করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন শ্রমবাজার খুঁজতে হবে। এজন্য এই খাতে বিশেষ গবেষণার প্রয়োজন। কোন দেশে কেমন দক্ষতার শ্রমিক লাগবে এবং তা কখন লাগবে? সেগুলো বুঝে কাজে লাগাতে হবে। যারা একেবারেই শ্রমিক, তাদের প্রাইমারি এডুকেশন অন্তত ভালো করে দিতে পারলেই বিশ্বের বাজারে আমাদের মান উজ্জ্বল হবে। শ্রমিকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে তাদের সব কাজে সহযোগিতা করতে পারেলেই এ সেক্টরকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। তাদের পাঠানো রেমিটেন্স দিয়েই পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা ভাবা যায়। এ বিষয়টির গুরুত্ব দিতে হবে। শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কম টাকায় যাতে বেশি শ্রমিক পাঠানো যায় সেক্ষেত্রে বায়রার অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে মিডিয়ারও একটি বড় ভূমিকা রাখতে হবে।
আমাদের মাটির নিচে তেল, গ্যাস ও কয়লা রয়েছে। এক সময় এগুলো শেষ হয়ে যেতে পারে। তবে আমাদের মানবসম্পদ শেষ হবে না। তাদের পাঠানো রেমিটেন্স আসতেই থাকবে। পর্যায়ক্রমে তা আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ এগিয়েছে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য। ইন্ডিয়ান দূতাবাস তাদের শ্রমিকদের জন্য দাঁড়িয়ে যায়। ইন্ডিয়া ও পাকিস্তানীরা অপরাধ করলেও তাদের দোষ ঢেকে বাংলাদেশিদের অপরাধ ফলাও করে প্রচার করে ইমেজ ক্ষুণœ করা হয়। আমাদের দূতাবাস সেভাবে কাজ করে না। সঙ্গতকারণেই আমাদের দূতাবাসকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
প্রবাসী শ্রমিকরা ২০১২ সালে ১৪ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে, যা গরিব দেশের জন্য একটা বড় ব্যাপার। এটা আরও বেশি হবে। কিন্তু আমাদের সরকার হƒদয়হীন। শ্রমিকদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয় তা অকল্পনীয়। তারা কঠোর শ্রম দিয়ে দেশকে চাকচিক্য করছে। আর যারা পাঠাচ্ছে তাদের আমরা আদম ব্যাপারি বলে অপমান করি।
আমাদের শ্রমিকরাই প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন। তাদের কারণেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদেরও উচিত তাদের প্রতি উত্তম ব্যবহার ও সব কাজে সহযোগিতা করা। এ সেক্টরে অনেক সমস্যা আছে থাকবেÑ তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার জন্য মন্ত্রণালয় ও বায়রা মিলে যৌথভাবে কাজ করা দরকার।
বর্তমানে প্রবাসে বৈধ, অবৈধ, দক্ষ, অদক্ষ শিক্ষিত, অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত কি পরিমাণ লোক কাজ করছেন তার সঠিক হিসাব সরকারসহ কারও কাছে নেই। তবে ৯০ লাখ থেকে ২ কোটি পর্যন্ত হতে পারে। এ সমস্ত প্রবাসীদের মধ্যে যারা অদক্ষ ও কম শিক্ষিত তারাই সবচেয়ে বেশি রেসিটেন্স পাঠান। অথচ আমরা অদক্ষদের তেমন গুরুত্ব দেই না। তাদের গুরুত্ব দেয়া উচিত। সরকারের উচিত অদক্ষ, স্বল্পশিক্ষিত ও স্বল্পআয়ের শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এবং তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছুর পরিপূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা করা।
মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা মুবারক থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত মুবারক তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×