বিশ্বাস করো - আমি বধ্যভূমি থেকে এসেছি
সমস্ত সংশয় শংকার ভয় দ্রুত মুছে ফেলো
আর এ ভিক্ষাভান্ড ভরে পৃথিবীর একান্তই আপন
হৃদয়ের দু'আঁজলা স্নেহের নীর তুলে দাও
হাঁ করা মুখে দাঁড়িয়ে একঠায় - আমাকে দেখছো
চোখের ঝালরে ঝুলিয়েছো প্রশ্নের প্লাকার্ড
জানতে চেয়েছো পরিচয়
কিন্তু হ্যাঁ, আমারতো নাম মনে নেই
দেশজাতি ধর্মবর্ন ভুলে দ্যাখো
দেহের ঝাঁঝরা কঙ্কালও গনকবরের ধূলো মেখে
তামাটে অন্ধকারে মিশেছে
পৃথিবীর আদিম দেহের সাথে
মাঝে মাঝে মনে হয়
এ মাটিকে পূর্বপুরুষের ভিটেবাড়ি বলে
তাইতো শিমুলের বর্নবিভাভরপুর
পলাশের রক্তঝরা দুপুর বড় ভাল লাগে
ইচ্ছে হয় ওদের মত দাঁড়িয়ে আবারও বলি
পৃথিবী আমারও ছিলো একদিন...
বিশ্বাস করো- আমি প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই
ডাইনোসর দানবদের পদতলে পিষে যাচ্ছি
তবু বধ্যভূমির কালজয়ী স্রোতধারায় দেখলাম
এক আমি মুছে মুছে সহস্রধারায় বেঁচে গেছি
চেতনার স্মৃতিকোষ থেকে এক প্লাটুন স্নায়ু হারিয়েও
পেলাম লাখো শহীদের লাখো অভিজ্ঞান
অস্থি প্রান্তর দ্যাখো
লোহিত মজ্জা আজো বড় টাটকা সজীব
একুশ ছাব্বিশ কিংবা ষোল?
ফেব্রুয়ারির মার্চের কি ডিসেম্বরের? মনে নেই
ওরকম লাখো তারিখের সাজানো বলয় মাঝে
কতবার হারিয়ে গেছি শহীদের সাজে
ব্লাডগ্রুপহীন পৃথিবীর আদিম ভ্রূনের মত
ধূমকেতু অগনন, আবারও এসেছি জ্বলন্ত বারুদ
সমগ্র বিশ্বের পুন্জীভূত শবের একান্ত কফিন
অত্যাচার নির্যাতন শোষন বলাৎকার বেড়ে গেছে বলে
জাতি ধর্ম বর্নভেদহীন সার্বজনীন নতুন পৃথিবীর আশায়
আমাদের আহুত যুগান্তকারী বিপ্লবের
এ শীর্ণ করপুট ভরি তাই
জাগ্রত বিবেক তোমাদের
দু'আঁজলা স্নেহের নীর তুলে দাও
দু'ফোটা মানবিক ঘামে
শশ্মান পৃথিবীর সব অন্ধকার মুছে ফেলো
সবাই এসো একসাথে বাঁচি মানুষের মতন।
৯/৩/১৯৯৩