somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শোক এখন হৃদয় থেকে তোরণে ঝুলে থাকে!

১৫ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিন ভোররাতে সেনাবাহিনীর একদল উচ্চাভিলাষী-বিপথগামী কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যা এক অমানবিক এবং কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বাংলার ইতিহাসে যুক্ত হয়ে থাকবে চিরদিন। আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি তাদেরকে যারা ওইদিন অসহায়ভাবে প্রাণ হারিয়েছিলেন।

এই লেখাটি কোনভাবেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বা ওইদিন প্রাণ হারানো তার পরিবারের কোন সদস্যদের প্রতি সমালোচনা বা কটুক্তি করার জন্য নয়। স্বাধীন বাংলার সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে রয়েছেন, থাকবেন। বাংলার স্বাধীনতার জন্য তার অবদানকে কোনভাবেই বিতর্কিত করে বা ছোট করে দেখার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। যদিও বর্তমানের নোংরা রাজনীতি বারবার ইতিহাসকে বিকৃতির দিকেই ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করে। সে যাই হোক, সত্য একসময় প্রতিষ্টা পেয়েই থাকে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাই স্বাধীন বাংলা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একে অন্যের পরিপূরক।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলটির সাথে বা অঙ্গদলগুলোয় এখন যারা জড়িত আছেন তারা কি আদৌ কোন আদর্শ বা নীতি ধারণ করেন? আওয়ামী লীগ আর ছাত্রলীগ মানেই যেন এক সন্ত্রাসী-অনৈতিক-অনাদর্শ-দুর্নীতিবাজ দল। (একইকথা প্রযোজ্য আমাদের আরেক মহীরথী বিএনপি ও ছাত্রদলের জন্যেও) এখন তাদের প্রতি ঘৃণা নয় বরং এক ধরনের করুণা কাজ করে। চারিদেকে আমরা যখন তাদের সংঘাতময় মনোবৃত্তি আর দুর্নীতি-দখলদারিত্বের দৌরাত্ম্য দেখি তখন লজ্জায় কুঁকড়ে যেতে হয় এই ভেবে যে, এরাই আমাদের শাসন করছে, কি দুর্ভাগ্য আমাদের! দেশের এই প্রথিতযশা(!) রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শ আর দর্শন মানে এখন: খুন, ধর্ষন, জমি লুট, নদী-খাল-পুকুর-বাড়ি দখল, টেন্ডার লুট, অন্যের অর্থ লোপাট, দুর্নীতি, সন্ত্রাস .. .. .. আরও কত মহতী বৈশিষ্ট্য। এমনকি আজকাল দেখা যায়, তারা অন্যের সাথে মারামারি-কাটাকাটি তো করছেই, এবার নিজেরা নিজেরাই একই দলের মধ্যে শুরু করেছে-ভাগে কম পড়েছে বলে, যেমনটা কুকুরকে দেখা যায় হাড্ডি নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে। হায়রে দুর্ভাগ্য!

এদের সম্পর্কে, এদের কর্মকান্ডের সম্পর্কে লিখতে যাওয়াটাও এক ধরনের ঘৃণার কাজ, ছুঁচো মেরে হাত নষ্ট করা আর কি! এই দলগুলোর সাথে জড়িত মানুষগুলো (কেউ কেউ ব্যতিক্রম আছেন, যারা আসলেই তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি, কিন্তু তাদের তো আঙ্গুলের কড়ে গোনা যায়, তাই তাদের উপেক্ষা করা হলো) কত যে অসভ্য, বর্বর .. .. ধিক্ তাদের।

যে প্রসঙ্গে লেখাটা শুরু হয়েছিল, জাতীয় শোক দিবসকে নিয়ে, সেদিকেই যাই। আজকের এই দিনটিকে স্মরণ করার জন্য মাসের শুরু থেকেই কত কত প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেছে। তোরণের পর তোরণ বানিয়ে রাস্তা আটকে ফেলা হচ্ছে (এই তোরণগুলো বানাতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হচ্ছে তা কি গরীবদের দিয়ে দেওয়া যেত না?), ব্যানারের পর ব্যানার টানিয়ে চারিদিক আঁধার করে ফেলা হচ্ছে। শোক প্রকাশের যে রীতি আর যে উৎসাহ-উদ্দীপনা তাদের মাঝে লক্ষ্য করা যায় তার এক কানাকড়িও কি তারা হৃদয়ে ধারণ করেন? আসলে তারা যে মানসিকতা আর শিক্ষা ধারণ করে তাতে লোক দেখানো ব্যাপারগুলো করা তাদের পক্ষে যতোটা সহজ হৃদয়ে ধরে রাখা ততোটা সম্ভব্ই নয়। (আসলে তো বেশিরভাগ অশিক্ষিত আর বস্তিবাসীই এর পিছনে বেশি লাফায়!)

শোক তো এক পবিত্র আর পরিচ্ছন্ন ব্যাপার, যা কেবল মন থেকেই অনুভব বা প্রকাশ করা যায়। আমি কতটুকু শোকাচ্ছন্ন বা সেই মানুষটিকে কতটুকু শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি তাতো আামার একান্ত ব্যাপার। এটি তো মঞ্চে দাঁড়িয়ে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে প্রকাশের আর কালো কাপড়ে চারিদিকে আচ্ছাদিত করে দেখানোর কিছু নয়। দলীয়ভাবে পালনের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো একটু বেশি হবেই, সেটি স্বাভাবিক, কিন্তু নেতাদের শোক প্রকাশের যে অসম প্রতিযোগিতা আমরা এখন দেখছি তা কোনভাবেই স্বাভাবিক নয়। অমুক নেতা যদি এতো হাত লম্বা ব্যানার টানায় তবে তমুক নেতাকে তার থেকে অতো হাত বেশি তৈরি করতে হবে। এতো শোক প্রকাশের এক ন্যাক্কারজনক উপায়। অথচ আমরা এখন সেই পথেই চলছি।

চারিদিকে অদ্ভূত এক আঁধার আমাদের ঘিরে রেখেছে, আমাদের মন এখন আর শোকে শোকাচ্ছন্ন হয় না, আমরা যেন এক উন্মত্ততায় আগ্রাসী পথযাত্রী হয়ে সামনে হাঁটছি। সবকিছু কি তবে নষ্টদের দখলে চলে যাবে?
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×