মাত্র সেদিনের কথা দুই বাসের প্রতিযোগিতায় ফুটপাতে উঠে যাওয়া বাসের তলায় পিষ্ট হয়ে মারা যায় শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী। প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারাদেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবীতে রাজপথে নেমে আসে। হাজার হাজার শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীর দখলে চলে যায় ঢাকার রাজপথ। সপ্তাহ ধরে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা বাংলাদেশে। ব্যাতিক্রম ধর্মী এই আন্দোলন নজর কারে বিশ্বের সংবাদ মাধ্যম গুলোতে। এ আন্দোলন জাতিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে এই দেশে মন্ত্রীর লাইসেন্স নেই, রেবের লাইসেন্স নেই, বিচারপতির লাইসেন্স নেই! এটা নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। ক'দিন অতিবাহিত হয়েছে দেশ জুড়ে ইতিহাসের সব চেয়ে নতুন এবং অন্যতম এই আন্দোলনটির? আন্দোলন কারীদের শরীর থেকে রক্তের দাগও শুকায়নি। কেউ চিকিৎসাধীন এখনও কেউ জামিনে ছাড়া পেয়েছে ঈদ উপলক্ষ্যে। হায়েনাদের থাবায় ওরা ক্ষত বিক্ষত হয়েছে। হায়েনারা সাবাসী পেয়েছে আন্দোলনকারীরা সরকারের কোপানলে আছে।
জাতি ভেবেছিল সড়কে এই মৃত্যুর মিছিল হয়তো এবার থামবে। কিন্তু হায়! কি দেখছি আমরা! শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলন শুরু হওয়ার একমাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও দেখা যাচ্ছে, সড়কের বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাহীনতার কিছুই বদলায়নি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গণমাধ্যমে এই বাস্তবতার চিত্রই উঠে আসছে। আজকের খবরের শিরোনাম হলো, 'ঈদযাত্রায় মৃত্যুর মিছিল' 'মধ্যরাতে দুর্ঘটনায় ঝরে গেল ছয়টি প্রাণ'। ঈদের ছুটির ১৩ দিনেই ২৭৮ নিহত হলো। অদক্ষ-অবৈধ গাড়ী চালকেরা আরো বেপরোয়া হয়েছে বুঝা যায়। নাটোরে বাসের ধাক্কায় ১৫জন লেগুনা যাত্রী নিহত হওয়ার পর জানা গেল চ্যালেঞ্জার পরিবহনের সেই বাসটি ২৬ বছর ধরে রুট পারমিট ছাড়াই মহাসড়কে চলছিল। তাহলে কি হলো? কিশোর আন্দোলনের ফসল আমরা ঘরে তুলতে পারিনি। বৃথাই গেল সেই আন্দোলন, অযথাই রক্ত ঝড়লো কিশোর কিশোরীদের!
আমাদের সড়কমন্ত্রী সারা দিন কা-কা করে দেশময় চষে বেড়াচ্ছেন ইভিএম মেশিনের গুনাগুন বর্ণনা করছেন আর নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য ইলেকশন কমিশনকে নৌকার মাঝি বানিয়েছেন। বহাল তবিয়তে আছেন আমাদের আইকন নৌমন্ত্রী উনি নির্ভেজাল হাসছেন বোকা জণগনের কায়কারবার দেখে। পরিবহণ খাতে লাগাতার এমন দুর্ঘটনা সীমাহীন দূর্ণীতিরই ফলাফল মাত্র। এসব অযোগ্য গার্বেজ গুলোকে কি সরানো যায়না? এদের দিয়েই কেন এমন জনগুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় গুলো চালাতে হবে?
প্রথম আলোর সংবাদ- "গত শনিবার বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়া থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে বাস দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন ২০ জন। এ দুর্ঘটনার ‘রাজনৈতিক দায়’ নিয়ে বুলগেরিয়ার পরিবহন, আঞ্চলিক উন্নয়ন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আজ শুক্রবার বরখাস্ত করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। আজ বয়কো বরিসভ বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য পরিবহনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আঞ্চলিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রীকে রাজনীতিবিদ হিসেবে দায় নিতে হবে।
পরিবহনমন্ত্রী ইবাইলো দুর্ঘটনার নৈতিক দায় গ্রহণ করেছেন। আজ নানকভ ও ভ্যালেনটিন রেদেভকে সঙ্গে নিয়ে সোফিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার সমস্ত রাজনৈতিক দায়িত্ব নিয়ে আমরা সরে যাচ্ছি। আমাদের অবশ্যই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল।’-"