somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বছরের প্রথম স্টিকি পোস্টটা কি এর চেয়ে আর খারাপ সংবাদ নিয়ে আসতে পারতো কখনো? যেখানেই থাকুন, ভাল থাকবেন ইমন ভাই।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





কি লিখবো বুঝে উঠতে পারছি না। সামু'তে অনেক বাঘা বাঘা ব্লগার আছেন। অনেক জনপ্রিয় ব্লগারও আছেন। কিন্তু ইমন ভাইয়ের মত নির্ভেজাল, নিরপেক্ষ, প্রচারবিমুখ আর কেউ ছিলেন বলে আমার মনে হয়না। কি পরিমাণে নিরলস আর জ্ঞানস্পৃহা থাকলে একটা মানুষ একের পর এক টপক্লাস পোস্ট পাবলিশ করে যেতে পারে, তা কারো পক্ষে আন্দাজ করাও কষ্টকর। দিনরাত পড়াশুনা নিয়ে পড়ে থাকতেন। কোন ক্যাচাল পোস্টে গিয়ে জ্ঞান ফলানোর মত কাজ কখনোই করতে দেখিনি ওনাকে।

২০০৭ সালে আমার একবার সৌভাগ্য হয়েছিল ইমন ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার, অনেকটা দৈবক্রমেই। একই বিল্ডিং এ থাকতাম। মাঝে মাঝেই লিফটে নামার সময় ওনার ফ্লোরে লিফট থামলে দেখতাম কানে হেডফোন গুঁজে লম্বা করিডোর ধরে পায়চারী করছেন আপন মনে। আমি তখন সবে এইচএসসি পাশ করেছি। উনি ব্ল্যাকের লিরিসিস্ট জেনে আর একই বিল্ডিং এ থাকি বলে দেখা করার লোভ সামলাতে পারিনি। কিন্তু প্রথম দেখায় বিশ্বাসই হচ্ছিলো না ব্ল্যাকের মত একটা অল্টারনেটিভ ব্যান্ডের লিরিক্স যে মানুষটা লিখে সে মানুষটার বয়স এরকম হতে পারে। কথা বলে বুঝতে পারলাম, মানুষটার বয়স তার দেহে হালকা আঁচড় ফেলতে পারলেও মনের উপর বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলতে পারেনাই। আমার বাঁশী বাজানোর অভ্যাস আছে শুনে আমাকে জুবায়ের ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিলেন (উনি আরেক জুবায়ের, ইমন ভাইয়ের বন্ধু। স্বপ্নচূড়া ১,২,৩ এলবামে পূর্ব-পশ্চিম ব্যান্ডের যে ইনস্ট্রুমেন্টাল ট্র্যাকগুলো আছে, সেগুলোতে বাঁশী বাজিয়েছেন। এছাড়া ব্ল্যাকের যেসব গানে বাঁশীর কাজ আছে, সবই ওনার)। লেখা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। যে কথা বলছিলাম, আমি তখন একেবারে বাচ্চা ছেলে। ইমন ভাই এতবড় মাপের ব্লগার জানা তো দুরের কথা, ব্লগ কাকে বলে সেই সম্পর্কেই আমার কোন ধারণা ছিল না তখন। কিন্তু তার রুমে আমি বইয়ের যে স্তূপ দেখেছি, এরকম বই সম্ভবত নীলক্ষেতের কোন পুরনো বইয়ের দোকানেও দেখা যাবেনা। মনে মনে তখন ভেবেছি এই লোক কি আসলেই এত বই পড়ে নাকি কেউ বাসায় আসলে তাকে চমকায় দেওয়ার জন্য এই বুদ্ধি। বলা তো যায় না, ক্রিয়েটিভ মানুষ। অনেকরকমের বাতিকই থাকতে পারে। পরে যখন ২০১০-১১ এর দিকে ব্লগে ঢুকে ওনার খোঁজ পেলাম তখন বুঝলাম আমার ধারণা কি পরিমাণে ভুল ছিল। ততদিনে আমি ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে সিলেট চলে এসেছি। পরে বাসাও চেঞ্জ করলাম শান্তিনগর থেকে। ইমন ভাইয়ের সাথে খুব একটা দেখা হয়নাই। যে ১-২বার দেখা হয়েছে, ভয়ে কথা আটকে গেছে মুখে। এতকিছু জানা একটা মানুষের সাথে কথা বলার সাহস হয়ে উঠেনি। যদিও ভালভাবেই জানতাম উনি কতটা সোজা-সাপ্টা সহজ মানুষ, তারপরও সাহস জুগিয়ে উঠতে পারতাম না কেন জানি।

ওনার মত একজন ব্লগারের চলে যাওয়ার ক্ষতি আসলেই বাংলা ব্লগ কখনোই কাটিয়ে উঠতে পারবে না। যা আমরা পারবো, উনি যে সম্মানটুকু ডীজার্ভ করেন আমাদের কাছে, তা প্রদর্শন করা। জানি আগামী কয়দিন সামু'র ব্যানার পাল্টাবে। এটা সামু'র অফিশিয়াল সম্মাননা প্রদর্শন। আরেকটা অনুরোধ আমি জানাবো সামু'র প্রতি। ওনার ১৫০০ পোস্ট সংকলন করা কোন ব্লগারের পক্ষে প্রায় অসম্ভব একটা কাজ। সামু'র পক্ষ থেকে কি এই পোস্টগুলো বিষয়ভিত্তিকভাবে ভাগ করে পিডিএফ আকারে সংকলন করা যায় না? তাহলে নতুন ব্লগার/অতিথিদের সাথে সহজেই শেয়ার করা যায় ইমন ভাইয়ের লেখাগুলো।

আমরা নিজেরাও কি পারিনা নিজেদের ব্যক্তিগত সম্মানটা প্রদর্শন করতে, ওনাকে উৎসর্গ করে আমাদের ফেবু প্রোপিক/কভারে জায়গা দিয়ে। ইমন জুবায়ের ভাইয়ের কথা ব্লগের বাইরে খুব কম মানুষই জানে। ওনার মত একজন পরিশ্রমী লেখকের কথা কি আমরা ছড়িয়ে দিতে পারিনা আমাদের ফ্রেন্ডলিস্টের সবার সাথে? আমার ফেবু/ ব্লগের প্রোফাইল, কভারে আমি এরই মধ্যে উপরের ছবি দুইটা যোগ করে দিয়েছি। ব্লগার টিপু মারা যাওয়ার পর আমরা দেখেছি কিভাবে সামু'র সব ব্লগার একসাথে ডিসপ্লে পিক টিপুর প্রতি উৎসর্গ করেছিল। ইমন ভাইয়ের এ সম্মানটুকু অবশ্যই প্রাপ্য।
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×