দুইহাত লোহার শিখল দিয়ে বাঁধা, চারদিকে বড় বড় লোহার রডের বেড়া দেয়া ছোট্ট একটা কামরার মধ্যে সুমনকে বন্দী দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারলামনা । আমাকে দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল । জামান ভাই আমাকে বাঁচান । বড়ভাই আমাকে মেরে ফেলবে । আমি বাকশূন্য হয়ে গেলাম । আমার সামনে একটা কঙ্খাল দাঁড়িয়ে আছে। সারা শরীর কাঁপছে, কথা বলতে পারছেনা, শুধু বিড় বিড় করছে। বড়ভাই আসলেন ছোট্ট রুমের দরজাটা বন্ধ করে দিলেন। ভিতর থেকে চাঁপা আর্তনাতের শব্দ শুনা গেল- “আল্লাহ আমাকে মেরে ফেল, আমি আর বাঁচতে চাইনা”
সুমন ছিল আমাদের এলাকার সবচেয়ে মেধাবী, ভদ্র এবং সুন্দর ছেলে । কোন পরীক্ষায় জীবনে দ্বিতীয় হয়নি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত। এলাকায় এমন লোক নেই যে তাকে ভালবাসতো না। স্কুলে প্রতিবছর গজল প্রতিযোগীতায় প্রথম পুরস্কার পেত। অত্যন্ত মধুর ছিল কণ্ঠস্বর। তার অনেক গুন ছিল যার তিনভাগের একভাগ আমার মধ্যে ছিলনা ।
ক্লাস এইটে উঠার পর তার আব্বা একটা নতুন বাড়ী কিনলেন। বাড়ীতে নতুন ঘর তুললেন। এই ঘর পাহারা দিত তাদের কাজেল ছেলে রেজোয়ান সবাই তাকে “রেজান” বলে ডাকতো । সে নিয়মিত গাঞ্জা সেবন করতো এবং মদ পান করতো। এটা মোটামুটি সবাই জানতো। রেজানের হাত ধরে সুমনের গাঞ্জা দিয়ে নেশায় হাতেখড়ি। প্রথমে কেউ বুজতে পারেনি । বছর খানেক পর একদিন বেলা ১২টা পর্যন্ত রেজানের দেখা না পেয়ে সুমন তাদের নতুন বাড়ীতে যায় রেজানকে ডাকতে। ডাকতে গিয়ে দেখে ঘরের দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরও যখন দরজা খোলেনা তখন দরজা ভেঙ্গে সুমন ভিতরে ঢুকে দেখতে পেল রেজান লাশ হয়ে পড়ে আছে। যেহেতু নতুন বাড়ীতে রেজান একা থাকতো আর রাত্রে মারা যায় এজন্য এলাকাবাসী মনে করে রেজানকে ভূতে মেরে ফেলছে এবং এখন পর্যন্ত অনেকের বিশ্বাস এটা ভুতের কান্ড । পরদিন সুমনের প্রচন্ড জ্বর আসে এবং পাগলের মত প্রলাপ বকতে থাকে ....চলবে ।
একটি সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে । আমি ভালো লিখতে পারিনা। ভুল-ত্রুটি মার্জনীয়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




