আজ মহাকবি মির্জা গালিবের জন্মদিন। ছোট বেলা থেকেই উনার অনেক বুদ্ধিদীপ্ত, জীবন ঘনিষ্ঠ শের শায়েরী শুনে আমরা বড় হয়েছি, মুগ্ধ হয়েছি! আমি কল্প চোখে দেখতাম শশ্রু মন্ডিত এক বনেদী পুরুষ কোন এক রাজ দরবারে বসে তার কবিতার সুধা ছড়িয়ে দিচ্ছেন আর সেই সুধায় আকন্ঠ ডুবে আছে রাজ দরবারের সভাসদ গণ। কেন যেন আমার মনে হয় আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই মহান কবিকে সেভাবে চেনে না। তাই সংক্ষীপ্তাকারে তার জীবনী তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
মির্জা গালিব কালার মহাল, আগরাতে একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ছিলেন ইবাক তুর্কের বংশধর। সেলজুক রাজাদের পতনের পর সমরকন্দে (আজকের উজবেকিস্তানে) স্থানান্তরিত হন। তাঁর পৈতৃক পিতামহ, মির্জা কওকান বেগ খান ছিলেন সালজুক তুর্ক, যিনি সমরকন্দ থেকে আহমদ শাহের শাসনামলে (১৭৪৮-৫৪) ভারতে আসেন। তিনি লাহোর, দিল্লি ও জয়পুরে কাজ করেন, উপ-জেলা পাহাসু (বুলমানশর, ইউপি) এবং অবশেষে আগ্রা, ইউপি, ভারতে বসতি স্থাপন করে। তার চার পুত্র ও তিন কন্যা ছিল। মির্জা আবদুল্লাহ বেগ খান এবং মির্জা নাসরুল্লাহ বেগ খান তাঁর দুই পুত্র ছিলেন।
মির্জা আবদুল্লাহ বেগ খান (গালিবের বাবা) ইজতাত-উট-নিসা বেগমের সাথে বিয়ে করেন,ভদ্র মহিলা ছিলেন একজন জাতিগত কাশ্মীরী এবং বিয়ের পর তিনি তার শ্বশুরের বাড়িতে বসবাস করেন। তিনি প্রথমে লখনৌয়ের নবাব এবং তারপর হায়দরাবাদের নিজাম এর দাক্ষিণ্যে নিযুক্ত হন। তিনি আলভারে ১৮০৩ সালে একটি যুদ্ধে মারা যান এবং তাঁকে রাজগড়ে (আলভার, রাজস্থান) কবর দেওয়া হয়। তারপর গালিবের বয়স যখন ৫ বছর তিনি প্রথমে তার চাচা মির্জা নাসরুল্লাহ বেগ খানের দায়িত্বে ছিলেন।
তেরো বছর বয়সে গালিব বিয়ে করেন, তিনি নওয়াব ইলাহী বখশী (ফিরোজপুর জিরকা এর নবাবের ভাই) -এর মেয়ে উমরাও বেগমকে বিয়ে করেন। অতঃপর তিনি তাঁর ছোট ভাই মির্জা ইউসুফ খানের সাথে দিল্লিতে চলে যান, যিনি স্কিৎসোফ্রেনিয়া নামক একটি রোগে অল্প বয়সে আক্রান্ত হন এবং পরে ১৮৫৭ সালের বিশৃঙ্খলার সময় দিল্লিতে মারা যান।
উচ্চ শ্রেণীর মুসলিম ঐতিহ্যের সাথে সমন্বয় সাধন করতে গিয়ে ১৩ বছর বয়সে তিনি একটি বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু তার সাতটি সন্তানই বাল্যকালেই মারা যায়। তার বিয়ের পর তিনি দিল্লিতে বসবাস করেন। তার এক চিঠিতে তিনি তার নিজের জীবনকে প্রাথমিক কারাবাসের পর বিবাহিত জীবনকে দ্বিতীয় কারাবাস হিসাবে বর্ণনা করেন। অর্থাৎ জীবন এক ক্রমাগত বেদনাদায়ক সংগ্রাম যা শুধুমাত্র তখনই শেষ হয় যখন জীবন নিজেই শেষ হয়। তার বেশীর ভাগ লেখাই ছিল বিষা্দ এবং হতাশা নিয়ে তবে তার কিছূ অসাধারন প্রেমের কবিতাও রয়েছে। মাত্র ১১ বছর বয়সে এই কবি তার লেখা শুরু করেন। তিনি প্রধানত উর্দুতে লেখালেখি করতেন তবে আরবী, ফারসি, তুর্কি ভাষাতেও তিনি পারদর্শী ছিলেন।
তার কিছু শের/শায়েরী নীচে শেয়ার করছিঃ
Is qadarr tora hai mujhaay uss ke be-wafaai nay "ghalib"
Abb koi agarr pyar se bhi daikhaay to bikharr jata hoon mai
Kitnaa khouff hota hai shaam kay andheroon mein,
Poonch un parindoo say jin kay gharr nahi hotay
Hum toh fanaah ho gaye uskii ankhen dekh kar Ghalib,
Naa janay woh Aainaa kiasay dekhte hogey ...!
Unkay dekhnay say jo aa jaati hai muh par raunaqq,
Woh samajhatey hai ki bimaar ka haal achcha hai ...
Dil say terey nigaah jigarr tak utarr gaye,
Dono ko eik adaa mein razaamand karr gaye ...
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট