somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল পরিস্থিতি : সময়ের আহবান [রিপোস্ট]

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে আজ থেকে ৮৮ বছর আগে। ১৯২১ সালের ১লা জুলাই। প্রতিষ্ঠার পর উপমহাদেশের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হতে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা, গবেষণা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির আঁধার এ বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এই প্রতিষ্ঠানটির আবাসিক হলের সংখ্যা ১৭ টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্নেই ৩টি হল নির্মিত হয়। এ পর্যন্ত মোট হলের সংখ্যা ১৭টি। এর মধ্যে ৪টি ছাত্রী হল এবং ১২টি ছাত্রদের হল এবং ১টি ইন্টারন্যাশনাল (বিদেশী শিক্ষাথীদের) হল।

হল প্রতিষ্ঠা (সংক্ষেপে):::
জগন্নাথ হল (১৯২১)
সলিমুল্লাহ্ মুসলিম হল (১৯২১)
শহীদুল্লাহ্ হল (১৯২১)
ফজলুল হক মুসলিম হল (১৯৪০)
জহুরুল হক হল (১৯৫৭
রোকেয়া হল (১৯৬৩)
স্যার পি. জে. হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হল (১৯৬৬)
সূর্যসেন হল (১৯৬৬)
হাজ্বী মোহাম্মদ মহসিন হল (১৯৬৭)
শামসুন্নাহার হল (১৯৭১)
কবি জসিমউদ্দিন হল (১৯৭৬)
স্যার এ. এফ. রহমান হল (১৯৭৭)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল (১৯৮৮)
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল (১৯৮৮)
বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হল (১৯৮৯)
বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল (১৯৮৯)
অমর একুশে হল (২০০১)

তথ্যচিত্র:::
# জগন্নাথ হল (১৯২১) শুধুমাত্র অমুসলিম ছাত্রদের হল। এ হলটিই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় হল।
# শহীদুল্লাহ হল (১৯২১), ফজলুল হক মুসলিম হল (১৯৪০) এবং অমর একুশে হল (২০০১) এ ৩টি হল বিজ্ঞান অনুষদের ছাত্রদের জন্য।
# রোকেয়া হল (১৯৬৩), শামসুন্নাহার হল (১৯৭১), বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হল (১৯৮৯) এবং বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল (১৯৮৯) হল ৪টি সকল অনুষদের ছাত্রীদের হল।
# স্যার পি. জে. হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হল (১৯৬৬) শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশিদের হল।

প্রতি বছর ভর্তি হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক আশা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকার বাসনা সবারই থাকে হলের মজার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আশায় এবং আবাসিক সংকট কাটানোর জন্য। কিন্তু একি! সব আশায় গুড়ে বালি। যারা হলে উঠে তাদের বেশিরভাগ ছাত্রই কিছুদিন পর হল ত্যাগ করে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে। তাছাড়া পড়ালেখার ভোগান্তি তো আছেই!

হলের রুমগুলোর মধ্যে ১০/১২ টি রুম থাকে রাজনৈতিক। ১ম/২য় বর্ষের ছাত্ররা বৈধভাবে হলে সিট পায় না। ৩য় বর্ষ থেকে হলে আবেদনের প্রেক্ষিতে সিট পাওয়া যায় যা অরাজনৈতিক। কিন্তু ১ম / ২য় বর্ষের কোন ছাত্র যদি হলে উঠে তাকে আশ্রয় নিতে হয় কোন দলের হয়ে। অর্থাৎ হলে সিট পাওয়ার বিনিময়ে সে ঐ দলের হয়ে কাজ করবে। এভাবে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দল বড় করে আর কমিটিতে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেয়।


নোংরা রাজনীতি:::

পূর্বকথাঃ দেশের ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনীতির বেড়াজালে আবদ্ধ। রাজনীতি প্রত্যেকটা দেশের প্রধান ইস্যু। সুস্থ রাজনীতি যে কোন দেশের জন্যই মঙ্গলজনক। দেশের নেতৃত্ব সৃষ্টি হয় রাজনীতির অন্তরালে।

নোংরা রাজনীতিঃ রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারে তৎপর ব্যক্তিবর্গ যখন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করে। নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে অন্যের ক্ষতি করতে কুন্ঠাবোধ করে না তখন রাজনীতি নোংরামীতে রূপ নেয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল পরিস্থিতিঃ
এবার মূল প্রসঙ্গে আসা যাক।
হল দখলঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো এমনিতেই ছাত্রসংখ্যার তুলনায় অনেক ছোট। প্রতি বছর ভর্তি হওয়া প্রায় ৫,০০০ শিক্ষার্থীকে আবাস সুবিধা দেওয়ার মত ক্ষমতা হলগুলোর নেই। এর মধ্যে নতুন ছাত্রদের হলে সিট দেওয়ার বদৌলতে চলে হলের রমরমা রাজনীতি।
প্রত্যেকটি হলে ২/৩ টি করে রাজনৈতিক দল থাকে। যারা সরকার দলীয় হয়ে থাকে। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে এ সকল দলও পরিবর্তিত হয়। তখন সরকার দলীয়রা হলগুলো দখল করে নির্দ্বিধায়। যেমন, গত ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮ হল থেকে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরদের তাড়িয়ে হল দখল করে ছাত্রলীগ। ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরও ৭ বছর আগে এভাবে হল দখল করে ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাস ছাড়া করে।

কী চলে হলগুলোতে???
প্রতিবছর হল কমিটি গঠণ করা হয় সরকার দলীয়দের মধ্য থেকে। প্রতিটি হল থেকে একজন সভাপতি, একজন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। প্রতিটি হলের ২/৩টি দলের মধ্যে যে কোন একটি দল থেকে সভাপতি এবং অন্য একটি দল থেকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়।
হল কমিটিতে পদ পাওয়ার জন্যে হলের এসব দল তাদের দল বড় করার চেষ্টার প্রেক্ষিতে অনেক কর্মকান্ড করে থাকে।

শো ডাউনঃ দল নিয়ে প্রতিদিন বিকেলে ক্যাম্পাসে ঘুড়াঘুড়ি, মৌন মিছিল করা যাতে অন্যান্য দল ও কেন্দ্রীয় ব্যক্তিবর্গ দেখতে পায় দল কতটা বড়সড়।

‌গেস্টরুমঃ হলের গেস্টরুমগুলোতে সবাইকে হাজিরা দিতে হয় সপ্তাহে ৩/৬ দিন। হলভেদে বেশি বা কম হয়ে থাকে। এই সময় নেতা পা তুলে গেস্টরুমের সোফায় বসে থাকেন আর সবাই হাত মিলিয়ে কুশল জিজ্ঞাসা করেন। তারপর নেতা সবার কুশল জিজ্ঞাসা করেন, সবাই উপস্থিত আছে কিনা পরখ করে দেখেন। মাঝে মধ্যে সাংস্কৃতিক চর্চা(?)ও চলে গান কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে।

র‌্যাগিং: ১ম বর্ষের ছাত্রদের উপর সিনিয়রদের র‌্যাগিং চলে নিয়মিত। কোন কারণে যদি সালাম না দেয় তবে চড়, থাবর আর বিভিন্ন রকমারী শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।

মিছিলঃ বিভিন্ন কারণে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য মিছিলে অংশ নিতে হলের ছাত্ররা বাধ্য।

এসব মিছিলে বাধ্য হয়ে অংশ নিতে গিয়ে ছাত্ররা পরীক্ষা, সেমিনার, প্রেজেন্টেশন সহ অনেক একাডেমিক বিষয়ে অংশ নিতে পারে না। ক্লাশের কথা দূরে থাক!

সারকথাঃ
সরকারের কাছে জানতে চাই। এসব নোংরা রাজনীতির মাধ্যমে দেশে অযোগ্য নেতা তুলে আনা কি এতটাই জরুরী যে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীগুলোর পড়ালেখা বাদ দিতে হবে???
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×