(ছবি- গুগুল)
শ্বাপদের চোখ দিয়ে ওরা প্রতিদিন খুঁটে খায় বীজতলার অঙ্কুর;
আমাদের দিনরাত; নিরাপদ পথচলা আর অর্জিত সাহসের সর্ষে-দানা;
ধারালো নখরে করে দিয়ে যায় ক্ষত-বিক্ষত আমাদের নিকোনো উঠোন;
দৈনন্দিন স্বপ্নসাধ; সক্ষমতার আলোক-সজ্জিত উৎসবের বর্ণিল ক্ষণ।
ওরা লুটে নিয়ে যায় সময়ে সময়ে ভিখারির অর্জন; সদ্যজাত শিশুর সম্ভ্রম
কৃষাণের গোলাভরা ধান; কখনো বা ব্যাঙ্কে জমানো জীবনের সব সঞ্চয়;
লাজনম্র যুবতীর বুকের আঁচল, কুঞ্চিত কাঁচুলি কেড়ে নিয়ে ওরা
সোল্লাসে ওড়ায় নগর-পিতার কলুষিত নামের পতাকা।
কামাতুরার জর্জর দেহ থেকে পরপুরুষের ঘ্রাণ মুছে এঁকে দিয়ে যায়
ধর্ম-ব্যাপারীর নোংরা জুতোর মলিন ছাপ; মেখে দেয় জেহাদির লালসার লালা;
যাদের শিশ্নের ডগায় জড়ানো কবন্ধ বিজয়ের কালো জলছাপ
বাড়ায় দ্বিগুণ সংখ্যালঘুর বস্তির আগুন; আর জাতিসত্তার পরিচয়পত্রে
ভুষোকালি মেখে দিয়ে তোলে ভিনদেশী বাজারের প্রকাশ্য নিলামে;
আমাদের যাবতীয় রক্তভেজা মহান অর্জন; জাতির পিতার ছিন্নভিন্ন লাশ।
আড়ালে আবডালে কোনো পাঁচতারা হোটেলের আলো-আঁধারিতে ওরা
আয়েশি ভঙ্গীতে চিবায় জনক-জননীর হাড়-মাঁস; হৃদপিণ্ডের শাঁস;
কখনো বা নীল-নকশা বোনার ফাঁকে ফাঁকে দীর্ঘ চুমুক দেয়
আত্মজার রক্তপূর্ণ গ্লাসে। তৃপ্তির ঢেকুর তোলে মদালস চোখে।
আমরা তখনো নিচু তলার কানাগলিতে কপাল চাপড়ে
কখনো বা আঁখিজলে স্নাত হয়ে প্রতীক্ষারত তীর্থের কাক
কেউ একজন এসে আপন কণ্ঠের বজ্র আহ্বানে আমাদের নিয়ে
জড়ো করবেন পুনরায়, নিরন্তর বরাভয় আর নিরাপত্তার নিবিড় নীপবনে।
আমাদের শিরদাঁড়া আজ ক্ষয়ে গেছে ক্রমাগত ঋণ আর অক্ষমতার লজ্জায়
হাঁটুর সন্ধিতে নিদারুণ জড়তার আহাজারি, সত্যবিমুখ পলায়নের ক্লান্তিতে।