somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মূল্যবান বিদেশী পুস্তকাদি ঘরে বসেই প্রিন্ট করুন

২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বায়ন ও প্রযুক্তির ক্রমউৎকর্ষতায় এখন আমরা ঘরে বসেই পড়তে পারি পৃথিবীর বিখ্যাত সব বই পুস্তকের ই-বুক ভার্সন। তাক তাক আলমারির বই অন্যকথায় বলা যায় গোটা এক বিশালাকার লাইব্রেরীর তামাম বই এখন আমাদের মুঠো ফোন তথা ট্যাবলেট পিসিতে জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও কাগজে ছাপানো বই পাঠের যে তৃপ্তি তা বোধহয় কখনই ই-বুক দিয়ে মিটানো সম্ভব নয়। পত্রিকাগুলোর ওয়েব ভার্সন থাকা সত্বেও ছাপানো পত্রিকার আবেদন এতটুকু নষ্ট হয়নি। পাঠক এখনও টাকা দিয়ে ছাপানো পত্রিকা কিনে পড়াটাই বেশি পছন্দ করে। যাহোক যদিও ই-বুক পড়ার বিশেষ কিছু সুবিধা রয়েছে তথাপী দীর্ঘক্ষণ উজ্জ্বল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে পড়লে এক ধরণের ক্লান্তি বোধ দেখা দেয় যাকে আই স্ট্রেইন বলে । তাই আমরা যদি আমাদের অতি প্রয়োজনীয় মূল্যবান বিদেশী ই-বুকগুলো ঘরে প্রিন্ট করে পড়তে পারি তাহলে একদিকে যেমন প্রচুর অর্থ সাশ্রয় হবে অন্যদিকে চক্ষু পীড়া থেকে নিষ্কৃতি মিলবে।

কথা না বাড়িয়ে আসুন কিভাবে বাসায় বসে সস্তা প্রিন্টার দিয়ে বাণিজ্যিক মানের বই ছাপানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করি। কাজটি সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে যা যা লাগবে:

১। কম্টিউটার সংযুক্ত একটি প্রিন্টার (যে কোন মানের ইঙ্কজেট হলেই হবে যেমন: ক্যানন আইপি ২৭৭২ (দাম ২৮০০-৩০০০ টাকার মধ্যে) তবে প্রিন্টার যত ভাল হবে প্রিন্ট কোয়ালিটি তত ভাল হবে এটা স্বাভাবিক।
২। প্রয়োজনমত এ-ফোর সাইজ কাগজ (ডাবল এ হলে ভাল প্রিন্ট হবে)।
৩। ফটোপেপার (প্রচ্ছদ তৈরি করার জন্য)

এবার আসুন পূর্ণ প্রক্রিয়াটি নিয়ে আলোচনা করি।
>> প্রথমে আপনার বইটি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে নিন। (কপি রাইট আইন ভঙ্গ করলে তার দায় দায়িত্ব আপনার B-) )
>> বইটি যদি পিডিএফ ফরম্যাটে থাকে তাহলে ভাল অন্যথায় এটিকে টেক্স টু পিডিএফ কনভার্টার দিয়ে কনভার্ট করে নিন। এ কাজটি ডুপিডিএফ নামক সফটওয়্যার ‍দিয়ে সহজেই করতে পারেন। এটি একেবারে ফ্রি। ডাউনলোড লিংক: http://www.dopdf.com/
>> ডু পিডিএফ ব্যবহার খুবই সহজ তারপরেও না পারলে ইউটিউব থেকে ব্যবহার পদ্ধতি শিখে নিন।
>> পিডিএফ করা ফাইলটি এবার ওপেন করুন, লক্ষনীয় যে আমরা সাধারণত একটি এ-ফোর সাইজ পাতার দুপিঠে প্রিন্ট করে থাকি, কিন্তু পিডিএফ রিডার এর নতুন ভার্সনগুলো দিয়ে একটি পাতায় চার পৃষ্ঠা প্রিন্ট করা যায়।


>> এভাবে প্রিন্ট করতে হলে যা করতে হবে তা হল:
>> ফাইল মেনু থেকে প্রিন্টে যান এবং বুক লেট প্রিন্ট সিলেক্ট করুন।



>> বাইন্ডিং কোনদিকে হবে দেখিয়ে দিন, ইংরেজি বইয়ের বাইন্ডিং বামে এবং আরবী বইয়ের বাইন্ডিং ডান দিকে হয়। এছাড়া প্রতি ব্যাচে কতগুলো পেইজ হবে তাও দেখিয়ে দেবেন। আমি প্রতি ব্যাচে ২০ পেইজ করে করি এতে আমার ৫ টি এফোর সাইজের কাগজ লাগে ।
>> এভাবে বুকলেট প্রিন্ট করলে একটি এ-ফোর কাগজে চার পৃষ্ঠা প্রিন্ট হবে। এক্ষেত্রে কাগজগুলোর মাঝখানে ভাঁজ করে ফর্মা তৈরি করতে হবে। প্রতিটি ফর্মা খুব বেশি মোটা না হওয়াই ভাল, কারণ এতে বাঁধাতে সমস্যা হয়।
>> প্রপারটিজ থেকে পেপার সাইজ ও প্রিন্ট কোয়ালিটি দেখিয়ে দিন, ভাল প্রিন্ট চাইলে অবশ্যই হাই সিলেক্ট করবেন। এতে ‍যদিও ‍সময় বেশি লাগে কিন্তু ছাপানোর মান ভাল হবে।
>> একদিকে ছাপানোর পর প্রিন্টার যেভাবে কাগজগুলো স্থাপন করতে গ্রাফিকাল ইন্সট্রাকশন দেয় তা অনুসরণ করুন। উল্লেখ্য যে অড ইভেন পেইজ প্রিন্ট থেকে এটি কিছুটা ভিন্নতর। তাই প্রথম অল্প কিছু প্রিন্ট দিয়ে বিষয়টি ভা্ল করে বুঝে নেবেন। নিচের গ্রাফিক্সটি থেকে বিষয়টি তাত্ত্বিকভাবে বুঝে নিতে পারেন।



>> এভাবে প্রতিটি ফর্মা ছাপানোর পর তা বাইন্ডিং দোকান থেকে খুব সহজেই বাঁধিয়ে মেশিনে কাটিয়ে নিতে পারবেন।
>> বইয়ের সাইজ অনুযায়ী ফটোপেপার দিয়ে প্রচ্ছদ তৈরি করে নিন।
>> এবার পাতলা লেমিনেটিং করিয়ে বাইন্ডিং দোকান থেকে সাইজমত লাগিয়ে নিন এবং পড়তে থাকুন আপনার প্রিয় বই!
>> এভাবে প্রিন্ট করতে গেলে অবশ্যই প্রিন্টারে কালি ভরা জানা থাকতে হবে। ভালো কালি মাল্টিপ্লান সেন্টারসহ অন্যান্য কম্পিউটার মার্কেটে পাওয়া যায়, কালো ও রঙিন উভয়টির দাম সমান । সুতরাং কালার বই এবং মনোক্রম বই ছাপানোর খরচ একই পড়বে। ১০০ মিলি বোতলের ভালো কালির দাম ২০০ টাকা। যা দিয়ে প্রায় ২০০০ ফুল সাইজ এ-ফোর পেইজ প্রিন্ট করা যাবে।

এভাবে ৪০০ পৃষ্ঠার একটি বই তৈরি করতে মোটামুটি খরচ পড়বে :

কাগজ ১০০টি : ০.৭৫*১০০= ৭৫ টাকা
কালি : ২০০০/২০০*২০০ = ২০ টাকা
বাইন্ডিং এন্ড কাটিং : = ২৫ টাকা
প্রচ্ছদের জন্য ফটোপেপার : = ১০ টাকা
প্রচ্ছদ লেমিনেটিং: = ২০ টাকা
সর্বমোট : ১৫০ টাকা

বিদেশী কোন বই আমাজন থেকে কিনে শিপমেন্ট করতে যে খরচ পড়ে তার থেকে বহুগুন কম খরচে আপনি আপনার বই প্রিন্ট করতে পারেন এবং সাজিয়ে রাখতে পারেন আপনার বুক সেলফে। নীচে আমার প্রিন্ট করা দুটি বইয়ের ছবি দিলাম একটি এফোর সাইজের এবং অপরটি বুকলেট সাইজের:

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৫:৫১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×