somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেষ সমাপ্তি।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাটিতে শুয়ে শুয়ে আকাশের তারা গুনছে সুমন। এতো সুন্দর !

কালপুরুষের দিকে এগোল। তাঁর কোমরবন্ধনীতে তিনটা তারা, এন্ড্রোমিডা, ভারগো। অতো চেনে না সুমন। শুধু গুণে যেতে লাগল।
একশটা তারা গোণা শেষ হচ্ছে, এ সময় ঘাড়ের কাছে মৃদু হাঁটার শব্দ। ঘাড় না ঘুরিয়েই শুনতে পেল। তাকালো না। কারণ কে এসেছে সে জানে।

-কি করছো?
-তারা গুণি।
-তাই? ক’টা গুণলে?
-এই সেঞ্চুরি করলাম।

ধীরে ধীরে নারীকন্ঠ তার পাশে বসে পড়ে। পরণে শাড়ি। শাড়ির রঙ নীল। সুমনের খুব প্রিয় রঙ নীল।

-তোমাকে নীল শাড়িতে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে... নীলা।
-তাই? তোমার জন্যেই পড়েছি। সাথে নীল চুড়ি।

ঝনঝন করে কাঁচের চুড়ি বাজিয়ে সুমনকে শোনালো নীলা। তারপর সুমনের কপালে এঁকে দিল একটি চুমু। যে ঠোঁটে আগুনের রঙ, ঠোঁটটাও উত্তপ্ত আগুনের মতন। চোখ বুজে সুমন অনুভব করল সেই চুম্বন-স্পর্শ।
ফিসফিস করে তাঁর কানে নীলা বলল , “ আমার সকল প্রেম তোমায় দিয়েছি সুমন, হৃদয়ের জমানো সব অনুভূতি আর ভালোবাসা তোমায় দিয়েছি। আমায় ছেড়ে যেও না”।
এরপর সুমনের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল সে।

-একটা গান শোনাবে।
-শোনাবো।
-গাও।
মৃদু কন্ঠে গাইতে লাগল নীলা,

“কতবারো ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া
তোমারো চরণে দিব হৃদয় খুলিয়া
কতবারো ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া।
চরণে ধরিয়া তব কহিব প্রকাশি
গোপনে তোমারে,সখা,কত ভালোবাসি”।

আকাশের তারারাও যেন গাইতে লাগলো তাঁর সাথে সাথে। সেই মৃদু সংগীত শুনতে শুনতে চোখ বুজলো সুমন।
যখন ঘুম থেকে উঠলো তখন আর নীলা নেই তাঁর পাশে। হঠাৎ বেজে উঠল তাঁর সেলফোন।
নাম্বারটা দেখল সুমন। বাইরের। ইউ এস এ।

- হ্যালো।
-হ্যালো! সুমন! আমি নীলা!!
- বল, কী খবর?
- এইতো ভালো। তোমাকে অনেক মিস করছি।
- আমিও অনেক মিস করছি।
একটু চুপ থেকে নীলা বলল,
-সুমন, একটা কথা বলি?
- বল।
- আজকেও সেদিনের মতন স্বপ্ন দেখেছি।
- কী স্বপ্ন?
- আমি নীল শাড়ি পরে, কাঁচের চুড়ি পরে তোমার পাশে। তোমাকে গান শুনাচ্ছি। দিনের বেলায় ঘুমের ভেতর স্বপ্ন।
- তাই? হতেও পারে তুমি আমাকে গান শুনিয়ে গিয়েছ। সাবকনসাস মাইন্ডে যে কোন কিছু ঘটতে পারে।
- যাহ। তুমি না আগের মতই আছো। আজব সব কথা বল। কিন্ত রোজ রোজ এই স্বপ্ন দেখার মানে কী?
- সবকিছুর মানে খোঁজার কি দরকার নীলা?
- আচ্ছা।

চোখদুটো আবার বুজলো সুমন। জানে আগামীকালও নীলা যথাসময়ে এসে পড়বে। তাকে স্পর্শ করে যাবে। কারণ সে নিজেই তাকে টেনে এনেছে। মানুষের মন খুব অদ্ভুত। শরীরকে আনতে না পারলেও মন দ্বিতীয় সত্তা তৈরি করতে পারে। সুমনের টানে নীলা সেই দ্বিতীয় সত্তা তৈরি করেছে। যেখানে আসল সত্তা কখনো সুমনকে “পছন্দ করি” এটুকু বলেনি, সেখানে আরেক সত্তা সবসময় “ভালোবাসি, ভালোবাসি” বলে যায়।
একটা নিঃশ্বাস ফেলে সুমন। হালকা স্বরে এবার গুনগুণ করে নিজেই গান ধরে-“গোপনে তোমারে কতো ভালোবাসি।।
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×