somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা কশাই

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় একটু বেশি দাগায়া ফেলছিলাম ভুল কইরা। এই ভুলের মাশুল দিতে আসা লাগছে অচেনা ঢাকায়; জীবনেও শুনি নাই এমন হিব্রু টাইপ ইংরেজিতে পড়া লাগছে এনাটমি, প্যাথোলজির মত বিষয়; কয়টা উপস্থিতি কম থাকলেই দুই দিন পর পর ক্লাস করা লাগে জুনিয়র ব্যাচের সাথে; হুটহাট ফেইল করা তো পরের কথা, পরীক্ষায় বসতে না পাইরা অনেক বন্ধুই পিছাইয়া গেছে; আজীবন ৮০ পাওয়া নিয়া চিন্তা থাকলেও এখন পাশ মার্ক ৬০ ই পাই না সহজে; একই বিষয়ে বছরের পর বছর ফেইল কইরা যাইতেছে আশেপাশের মানুষ; দুর্গন্ধযুক্ত হাসপাতাল ওয়ার্ডে যেখানে স্বাভাবিক মানুষ ৩০ মিনিট থাকতে পারেনা, সেইখানে প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়াইয়া থাকা লাগে; মরা মানুষের শরীর হাতাইয়া, রোগীর পাছায় আঙুল দিয়া, বিচি ধইরা নাড়াচাড়া কইরা আবার হাত ধুইয়া ওই হাত দিয়া ভাতও খাওয়া লাগে; একটু ভুলভাবে বিচি ধরলে কিছু শিক্ষকের কাছে ‘কুত্তার বাচ্চা’ গালিও শোনা লাগে; এতসব কইরা কমপক্ষে পাঁচ বছর পর যখন নামের বাম পাশে ডাক্তার বসামু, তখন থেকে আমি তোমাদের ভাষায় হব সার্টিফাইড কশাই। এত গালির পরও দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আমরা কশাইরাই তোমাদের মত ভদ্রলোকের চিকিৎসা দিব দিন-রাত চব্বিশ ঘন্টা একটা টাকা পারিশ্রমিক না পাইয়াও এইচএমও হিসেবে, সরকারি দলের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো পূরণের হাতিয়ার হিসেবে বিসিএস-অ্যাডহকের নামে আমরা দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের সেবায় দায়িত্ব পালন করব বছরের ৩৬৫ দিন, অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত চেয়ারম্যান-মেম্বার এর হাতে মাইর খাইয়াও চিকিৎসা দিব আমরা কশাইরাই। দাও ভাই আরো গালি দাও, দিতে দিতে মুখ ব্যাথা করলে বইল। একটা পেইনকিলার ব্যবস্থা কইরা দিব। আরো ভাঙো প্রতিদিন সারা বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসা দেয়া ঢাকা মেডিকেলের ইমারজেন্সী। ভাঙতে গিয়া হাত-পা কাটলে বা ফ্রাকচার হইলেও চইলা আইসো লুকাইয়া এই ইমারজেন্সিতেই। চুপচাপ একটা এক্স-রে কইরা তোমারে টি.টি টিকা দিয়া দিবো; সেলাই লাগলে সেলাইও দিব; ওষুধ কেনার টাকা না থাকলে আমরাই টাকা যোগাড় করে দিব; আর বাই চান্স রক্ত লাগলেও সমস্যা নাই, সন্ধানী থেকে বিনামুল্যে রক্তও ব্যবস্থা করে দিব। সুস্থ হইয়া বের হইয়াই আরেকবার কশাই কইয়া গালি দিয়া যাইও। ওইটারেই কমপ্লিমেন্ট মনে কইরা নিব।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×