ধার্মিক মানুষ তাকেই বলে যে তার ধর্ম যথাযথ ভাবে পালন করে। শুধু মুসলিম না,হিন্দু,খ্রিস্টানরাও ধার্মিক যদি সে তার ধর্ম যথাযথ পালন করে। আপনি রোজা করলেই ধার্মিক হবেন না,যদি না আপনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। আবার শুধু দাড়ি রাখলে আর টুপি পরলেও ধার্মিক হবেন না। যদি না আপনি অন্যান্য নিয়ম মানেন। তেমন কোনো মেয়ে হিজাব করলেই বলতে পারেন না সে ধার্মিক,যদি না সে পর্দা করে যথাযথভাবে,যদি না সে নামাজ আদায় করে।
তেমন ইসলামী রাষ্ট্র আর মুসলিম প্রধান দেশ এক নয়। মুসলিম প্রধান দেশ সেটাই যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক মুসলিম। আর ইসলামী রাষ্ট্র সেটা যেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম কায়েম আছে। বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ,কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র না। সুতরাং আপনি যতই ধর্ম প্রচার করেন,যতই মানুষকে ধার্মিক করার চেষ্টা করেন,যদি ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম না হয় তাহলে ব্যক্তিগত পর্যায়েই ধর্ম সীমাবদ্ধ থাকবে। ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে চলবে ধর্মহীনতা। দুদিন পর পর অভিজিৎ রায়,আসিফ মহীউদ্দীনরা জন্ম নিবে। পার্লামেন্টে গাফফার চৌধুরী ,লতিফ সিদ্দীকি তৈরি হবে। আর পীরের মুরিদগ্ণ আরামসে পীরের সিজদায় লুটোপুটি খাবে,আর তথাকথিত তাবলীগী ধার্মিকগ্ণ তসবি হাতে নিজেদের সওয়াব গোণায় ব্যস্ত থাকবে।
কি মনে হয়?? কোরআনের একটা অক্ষরে দশটা নেকী তাইনা? ৬৬৬৬ আয়াতে তাহলে কতগুলো?? হিসাব করছেন?? কিন্তু সেই কোরআনেই লেখা আছে নামাজ কায়েম করো,পর্দা করো,জিহাদ করো,কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই করো,দ্বীন কায়েম করো। সেইগুলো করছেন?? কি ভাবছেন? ৬৬৬৬ অক্ষরের সওয়াবের বিনিময়ে জান্নাত পেয়ে যাবেন?? এত সস্তা?? পড়ে দেখেন সূরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াত। বুঝতে পারবেন।
যে দেশের ক্ষমতায় একজন নারী বসে আছে যেখানে ইসলামে নারী নেতৃত্ব জায়েজ নেই। যেখানে পার্লামেন্টে মহান আল্লাহকে,হজ্বকে অবমাননা করা হয় যে দেশে পীরকে সিজদা করা হয়,আর আপনি পড়ে থাকেন বিদায়াত নিয়ে। সেখানে আপনি কিভাবে তসবি হাতে ধার্মিক পরিচিত হন???
আপনি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি অপছন্দ করেন। জানতে চাই,জাহিলিয়াতের যুগে কাফির-মুশরিক নেতৃত্ব সরিয়ে রাসূল (সাঃ) কি দ্বীন কায়েম করেননি?? মুশরিক নেতাদের,আবু জেহেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি?? মদীনার সনদ,হুদায়বিয়ার সন্ধি কি রাজনীতির মধ্যে পড়ে না?? রাসূল (সাঃ) পারস্যসহ অন্যান্য দেশের নেতাদের কাছে ইসলামের দাওয়াতের চিঠি দিয়েছিলেন। সেগুলো কি রাজনৈতিক দূরদর্শিতা নয়??? আপনি নামাজ কালাম পড়লেন,দাড়ি,পাঞ্জাবী রাখলেন কিন্তু আপনি ইসলামী রাজনীতি পছন্দ করেন না। তাহলে কিভাবে আপনি ধার্মিক যদি এই অংশ অস্বীকার করেন?? পড়ে দেখেন সুরা আল ইমরানের ১০৩-১০৪ নম্বর আয়াত। বুঝতে পারবেন।
শুধু তসবি গুণে যদি জান্নাত পাওয়া যেতো তাহলে এত বড় জীবন বিধান আল কুর'আন কি দরকার? যদি ব্যক্তিগতভাবে ধর্ম মেনেই হতো তাহলে রাসূল (সাঃ) কেন যুদ্ধ করেছেন?? দ্বীন মানার জন্য,কায়েম করার জন্য। দ্বীন প্রতিষ্ঠিত না করে বা করার চেষ্টাও না করে আপনি ধার্মিক হতে পারবেন বলে মনে হয়না। দ্বীন কায়েমের অর্থ সামগ্রিক ভাবে ইসলামের বিধি বিধান কায়েম। রাষ্ট্রীয় ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা। সামাজিক, আর্থিক,শিক্ষাব্যবস্থা সকল সেক্টরে দ্বীনের বিধান প্রতিষ্ঠা। এই বিধান কায়েমের জন্যও ধার্মিক হওয়া আবশ্যক।
জাযাকাল্লাহ
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:১০