দেশে রাজনীতির মাঠে চলছে এখন দারুণ ক্ষরা । বিরোধী দল যখন তখন হরতাল দিচ্ছে। এর ই মধ্যে শোনা গেল আগামী সোমবার থেকে টানা ৩৬ ঘন্টার হরতাল ।তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে উপর থেকে ফোন এলো হরতাল এর সময় বিরোধী দল এর যে কোন নেতা নেত্রীকে ধরে ঠেঙানি দিতে হবে। নইলে কিন্তু চাকরি থাকবে না। নতুবা পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলি হতে হবে। সুতরাং এইবার আপনি বুঝে দেখেন।
সাথে সাথে প্রতি উত্তর থিক আসে স্যার। আপনি যা বলছেন তাই হবে। আপনি ত জানেন ই ছাত্র জীবনে আমি ক্যাডার ছিলাম, জীবনে বহু টেন্ডারবাজী করছি, মারপিট আমার জন্য কোন ব্যাপার না। স্যার আপনি শুধু বলেন কাকে একটু বেশি দিতে হবে। কি যে বলেন আপনি বুজি জানেন না। ওই যে আপনার এলাকার একজন আছেনা ইদানিং একটু বেশি বেশি মিডিয়ার সামনে আসে, উলটা পাল্টা কথা বলে। ঠিক আছে স্যার আপনি কোন চিন্তা করবেন না। আগামীকাল উনাকে পাইলেই চলে।
যথারিতী হরতাল হল। সেই নেতাও মাঠে নামল। কিন্তু পুলিশ অফিসার মার দিতে গিয়ে একটু বেশীই দিয়ে ফেলছিল। পরদিন ফলাও করে সব পত্রিকায় খবর এলো বিরোধী দলীয় নেতা মিস্টার ...... ঢাকা মেডিকেল কলেজে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লরছেন।এর মাধ্যমে আন্দোলণ আরো জোরদার হলো।পুলিশ অফিসার ভাবতে লাগলো ভালই ত হইছে এই সুজোগে দেশে দশে সবাই আমার নামটা জানলো অন্তত। পরদিন আবার সেই ফোন এলো যে আমরা আপনার পদন্নোতি নিয়ে ভাবছি। আপনার মত যদি আর কিছু পুলিশ অফিসার থাকতো তাইলে ত উরা মাঠেই নামতে পারত না।
এখানেই শেষ নয়। সময়ের সাথে সাথে সেই পিটনি খাওয়া নেতা সুস্থ হয়ে উথল। দিনে দিনে বাড়তে থাকল জনপ্রিয়তা। দেশে প্রতি বারের মত এইবার ও ক্ষমতার পালা বদল হলো। মানুষ ই বা কি করবে, কাকেই বা ভোট দিবে। সবাই ত মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। দুই দল ই শুকুনের মত দেশের মানচিত্র টেনে হিঁচড়ে খাচ্ছে। এর ই মধ্যে সেই নেতা এখন দিব্যি সরকারের বড় কোন মন্ত্রী বনে গেল। হঠাৎ কোন একদিন মন্ত্রী সাহেব ভাবতে লাগলেন আচ্ছা কে জানি একজন আমাকে বিরোধী দলে থাকা কালীন সময় পিটনি দিয়েছিল। এখন ও অমাবশ্যা পূর্ণিমাতে মাঝে মধ্যে পিঠে ব্যথা করে। কত ডাক্তার দেখালাম কিন্তু ব্যথা ত আর গেলনা।
মহামন্য মন্ত্রী মহোদয় ভাবলেন দেখি ওই দুষ্ট ফাজিল পুলিশ অফিসার টাকে একটু দেখিয়ে দেই। জানেনা কার সাথে কিভাবে আচরণ করতে হয়। মানুষ চেনেনা। উনি যথাযথ কতৃপক্ষকে নির্দেশ দিলেন ওই দুষ্ট টাকে খুঁজে বের করে শাস্থির ব্যাবস্থা কর।কতৃপক্ষ হুকুম পালণ করলেন। পুলিশ অফিসার কে চাকরি থেকে সাময়িক বহিষ্কার করতে গিয়ে একদম চাকরিই খেয়ে ফেলেছ।
সেই পুলিশ এখন ঢাকা শহর ছেরে গ্রামের বাড়ীতে থাকতে লাগ্লেন।সংসারে কোন আয় উন্নতি নেই। কিভাবে চলবে এখন তার সংসার। ছেলে মেয়ের পড়াশোনার খরচ যোগাবে কে।কিভাবে কি করবে। কোন এক পড়ন্ত বিকালে সে ভাবতে লাগলো হায়রে কি পাপ করলাম। কেন এমন হল। আমার ত কোন দোষ ছিলনা। আমি ত শুধুমাত্র আমার চাকরির দায়িত্ব পালন করেছিলাম মাত্র। এর জন্য দায়ী কে ? এতগুলু জীবনের দুর্ভোগের দায়িত্ব নিবে কে ? কেন এই সব সাধারন ছাপোষা চাকরিজীবী পুলিশদেরকে এধরণের মারমুখী পরিস্থিতিতে ঠেলে দেয়া হয়। কেন এই রাজনীতি । কার জন্য করছে এসব। মরছে মানুষ।
কামরুল হাসান , Lund, Sweden