somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জানি অনেকের কাছেই আমার এই নোটের বিষয়বস্তু বাহুল্যতা বা প্রগলভতা মনে হবে।কীট নই মানুষ।তাই মনে হতেই পারে।

১০ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোনো গল্প নয়।একটু আগেই ঘটা চরম বাস্তব ঘটনা।ব্যাক্তিগতভাবে সবাই আমকে বাস্তববাদী হিসেবেই চিনে।কিন্তু আমার মত বাস্তববাদিরাও বাস্তবিকতার কিছু যে জানি না বা দেখি না সেটা মাঝে মাঝেই অদৃষ্ট চোখে আঙ্গুল দিয়ে খোচা মেরে দেখিয়ে দেয়।
ব্রিটিশ কাউলসিল থেকে আইএলটীএস এর ক্লাস শেষ করে রবীন্দ্র সরোবর হয়ে বাড়ি ফিরছিলাম।রিক্সার ওয়ালাদের সাথে দরদাম করছিলাম আর সাথে এক বড়ো ভাই এর সঙ্গে ইংলিশ প্র্যাকটিস করছিলাম(মাস্টারস দেশের বাইরে করতে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর)।কিন্তু আমার সেই স্বপ্নে চপেটাঘাত করল এক তরুন রিক্সা ওয়ালা।পরিস্কার শুধ্য ইংলিশ উচ্চারণে আমাকে জিগ্যেস করল HOW MUCH YOU WANT TO GIVE ME?
আমি এবং বড়ো ভাই দুজনেই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম।এবং দুজনেই ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজিতে বললাম ২০ টাকা।রিক্সা ওয়ালা রাজি।এর পরের পুরো ঘটনাটাই আসলে ইংরেজিতে কথোপকথন।আমার কাছে যা কিনা আমাদের ব্রিটিশ কাউন্সিল এর টিচার এর থেকেও শুদ্ধ ইংলিশ মনে হয়েছে।

আমার সাথে ৪৫ মিনিট এর মত ছিল।আমি পরিচয় জানতে চাইলাম।বলল নাম ইকরামুল হাসান।তিতুমির কলেজ থেকে ফাইনান্স থেকে গ্র্যাজুয়্যট ।বয়স ২৫ বছর ৭ মাস(জী ঠিক এটাই আমাকে বলছে ,তাও ইংরেজিতে) । আমাদের মত মামা চাচা নাই তাই চাকরি ও না নাই।মার আর ছেলের সংসার।আর কোনো উপায় নাই দেখে রিক্সা চালাচ্ছে। আমি আরও অনেকক্ষণ গল্প করলাম।ভাড়া এবং গল্প করা সরূপ ১০০ টাকা দিলাম।৫০ টকা ফেরত দিতে চাইল।এবং আরো সুন্দর ইংরেজিতে বলল ভাড়ার বেশি এক টকাও নেবে না।কারন সে কাজ করে খেতে চায়।আমি আবদারের সুরে বললাম ইকরাম ভাই আপনি নাহয় একটা কোল্ড ড্রিঙ্কস খেয়ে নিয়েন।মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল।GOOD BYE AND TAKE CARE।এবং যাওয়ার সময় আমাকে উনার ইমেল এড্রেস দিয়ে গেল।বলল কোনোভাবে যদি হেল্প করতে পারি উনাকে যাতে জানাই।আমি শুধু একটা কথাই জিগ্যেস করলাম।ইকরাম ভাই এত কষ্ট কেন করেন?বলল ভাই কাজ তোঁ কাজ ই।আমি না খেয়ে থাকতে পারি কিন্তু মাকে তো না খাইয়ে রাখতে পারি না।ছেলেটার বাংলা শুনেও আমি মুগ্ধ।মনে মনে বললাম পরওয়ারদিগার তোমার লীলা,বুঝার চেষ্টা করাই আসলে বৃথা ।
আমি দ্রুত চলে আসলাম ।মানুষটার সামনে দাড়িয়ে থাকতে লজ্জা লাগছিল।নাহ ভুল বললাম আমার তক্ষণ যে অনুভুতি হচ্ছিল সেটাকে লজ্জা বলে না।একটা মানুষের যখন নিজেকে কীট পতঙ্গ মনে হয় সে অনুভুতিকে কি বলে আমার জানা নাই।

আমি জানি আমার মাথায় এই ঘটনা অনেক দিন ঘুরবে। হয়ত মাঝে মাঝেই আমার মন খারাপ এর কারন হবে।আমার আসে পাশের অনেক মানুষ কেই দেখলে তাচ্ছিল্য করতে ইচ্ছে করবে।(বাসায় আসার পরেই আমার ভাগিনা কে থাপপোর দিসি,কারন পড়া বাদ দিয়ে কার্টুন দেখছিল।যদিও নিজেকেই থাপড়াতে ইচ্ছে হচ্ছিল, আমাকে থাপ্পর মারার কেই নাই তাই ওকে মেরেই নিজের জালা মেটান আর কি?)খুব ইচ্ছে করছে নিজেকে ইকরাম ভাই এর সাথে তুলনা করতে।পারছি না।শুধু একটা কথাই মাথায় ঘুরছে মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত।কিন্তু আশরাফুল মাখলুকাত এর মাঝেও কতো ক্যাটাগরি।নিজেকে মনে হচ্ছে কীট পতঙ্গের ঠিক উপরের শ্রেণী।আর ইকরাম ভাই এর মত মানুষের অবস্থান নির্ণয় করার মত যোগ্যতা এবং মনুষত্য আমার এখনো হয় নাই।

(বীঃদ্র- ইকরাম ভাই এর ইমেল আইডি এবং সেল নাম্বার আমার কাছে আছে।কেউ যদি হেল্প করতে চায় .........।বিনা সংকোচে নিতে পারে।কারন আমার নিজের উনার জন্য কিছু করার সামর -থ খুব কম )


১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×