এই মাঝরাতে কৃষ্ণপক্ষ পঞ্চমীর চাঁদের সঙ্গে
কোনো মহাজনী চলে না।
সুসুপ্ত এই প্রহরে জেগে থাকে তারাই,
অন্তরে যাদের সৃষ্টির প্রসব বেদনা।
এই ঘোলাটে জোৎস্নার আলোয়
আঁকা যায়না মিথ্যের আঁকিবুকি।
রাত্রিশেষের এই বিশুদ্ধ বাতাস-
চুমে আসে ফুটন্ত বেলি গন্ধরাজের পাঁপড়ি।
সে বাতাসে শ্বাস নিয়ে কাৎরাই আরেকটি পল,
সম্মুখে পড়ে আছে একতাল মাটি
তারে গড়ে নিতে পারি পুতলের গড়নে,
কিন্তু সে পুতুল শক্ত করবার আগুণ কোথায়?
এই শহরের সব আগুণ শেষ
আমাদের ক্ষুধার অন্ন রাধতেই।
এই মাটি ছেনে গড়ে নিতে পারি প্রতিমার মুখ,
কি বসনে সাজাবো সে প্রতিমায়?
আমাদের সবগুলো তাত হাপিয়ে গেছে তবু
ছিন্ন বস্ত্র মানুষ কেবলই বাড়ায় লজ্জা আমাদের।
এই একতাল মাটি ঝুড়ঝুড়ে করে
বুনে দিতে পারি কিছু ধানের বীজ,
কিষাণের সেই পরিশ্রমের একাগ্রতা আমার কোথায়!
আমি যে আলস্যের আয়েসে পরিতৃপ্ত।
যদিবা ধানের গজায় চারা,
ওর গোড়ায় জল দেব কোথা থেকে?
সব জল ফুরোচ্ছে তেষ্টা মেটাতেই।
আহা, বীজ বুনে দিলেই যদি মিলতো সোনার ধান!
কিন্তু কৃষকের মত সেই ধৈর্য্য কোথায় মোর?
চিত্ত কেবল শাখামৃগসম লাফিয়ে চলে,
এ ডাল থেকে ও ডাল।
কৃষ্ণপক্ষ পঞ্চমীর রাতে তাই
ঘোলাটে জোৎস্নায় পড়ে থাকে একতাল মাটি।
না কবি না কৃষক আমি
উর্বর মাটি তাই পড়ে রয় ঢেলা হয়ে
না হয় ভাস্কর্য, কবিতা কিংবা সোনার ফসল,
পড়ে পড়ে জমে আগাছাই কেবল।
একদিন তাতেও কিছু ফুল ধরে বটে,
সে ফুল আমার-
কৃষ্ণপক্ষ জোৎস্নার রাতে অযুত দ্বিধার ফসল।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:০২