ছবির বালকটির নাম ড্যানিয়েল। দরিদ্র সীমার নীচে থাকা এই বালকটির বয়স মাত্র ৯ বছর।
বসবাস করে ফিলিপাইন শহরের ম্যানড্যায়ু এলাকায় দরজা জানালা ছাদ বিহীন একটি ফুড স্টলে তার বিধবা মা ক্রিস্টিনার সাথে, যেখানে সেই বিধবা কাজ করে এবং বিনিময় পায় বাংলাদেশী টাকায় মাত্র ১৫০-২০০ টাকা আর একটু শোবার যায়গা।
কোন অকারেন্স করে নয়তো ফেঁসে গিয়ে বছর খানেক আগে বালকটির বাবাকে জেলে যেতে হয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়, ফলে অল্প বয়সেই বালকটি হয়ে যায় পিতৃহীন। তার কিছুদিন পর আগুনে পুড়ে তাদের শেষ সম্বল নিজের বাড়িটি আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ায় একেবারে পথে নেমে আসতে হয় তাদের পরিবারকে। তারা হয়ে যায় ভিটেমাটিহীন।
৯ বছরের কোন বালকের উপর দিয়ে এতো ঝর ঝাপটা বয়ে গেলে তার বখে যাওয়াটাই স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। কিন্ত লেখাপড়ার অদম্য ইচ্ছে থাকলে যা হয় আর কি! এসব ঝড় তুফানের মতো কোন বাধাই তার পড়ালেখার ইচ্ছেটাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। পারেনি তাকে লিখাপড়া থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে।
ঘর না থাকলে কি হবে, নিজের হাতে বানানো একটি বেঞ্চ, খাতা আর পেন্সিল নিয়ে ফিলিপাইনের ম্যাকডোনাল্ড ফাস্ট ফুডের পাশের রাস্তাটাকেই বানিয়ে নিয়েছিল সে নিজের পড়ার ঘর। ফাস্টফুডের দোকান থেকে চুইয়ে আসা সেই অস্পষ্ট আলোয় বসেই সে তার প্রতিদিনের পড়ালেখা এবং হোমওয়ার্ক শেষ করতো।
Joyce Gilos Torrefranca নামের এক ফিলিপাইনি সোশ্যাল ওয়ার্কার সেই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এই অদম্য ইচ্ছে শক্তির বালকটিকে দেখতে পায় হোমওয়ার্ক করারত অবস্তায়। এবং সেই অবস্তার ছবিটি তুলে তার ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করে এ বছরের জুন মাসে। যে ছবিটি ফিলিপাইনের হাজারো মানুষের মন নাড়া দিয়ে যায়। যার ফলশ্রুতিতে সেখানকার পলিটিশিয়ান থেকে শুরু করে অনেক ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বালকটির লেখাপড়া সহ সকল ব্যয় বহন করার ইচ্ছে পোষণ করে। বর্তমানে বালকটি স্কলারশিপ পেয়ে ফিলিপাইনের ভালো একটু স্কুলে পড়াশোনা করছে।
পরিশেষে বলি,
লাইফে কিছু করার জন্য ফ্যাসিলিটি নয়, ইচ্ছে, মনোবল আর চেষ্টাটাই যে মুল, ৯ বছরের এই ড্যানিয়েল তার জলন্ত উদাহরণ!!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৭