somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিরক্তি - এটাকে ভালোবাসতে শিখে গেছি (১)

২৫ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেন জানি না, কিন্তু মনস্থির করেছিলাম যে লিখবোই ।

যাদের সাথে কোনরকম আনুষ্ঠানিক আত্মীয়তা নেই, কিন্তু কিছুদিন যাবত যারা আমার অনেক সময়কে প্রশ্রয় দেন, যাদের অনেক সময় আমি আবোল তাবোল বলে নষ্ট করি, তারাই যখন পড়েন লেখাগুলো, তখন ভাবি জীবনের কোনো একটা অংশের সাথে তাদের কোনো অংশের মিল নিশ্চয়ই আছে । নইলে ঘরে বা রেষ্টুরেন্টে, যেখানেই তারা খান না কেন, বনের মোষ কেন তাড়াবেন? কিছুটা হলেও "হুশ হাশ" যখন করেছেন তখন নিজে থেকে ই ধরে নিয়েছি, মোষ তাড়ানোর একটা ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা তাদের ছিলো - তাই আবারো লিখছি, ধন্যবাদ আপনাদের কে

ভোক্তা হিসেবে আমি বিরক্ত, কিন্তু মোদ্দা কথা এটাকে ভালোবাসতে শিখে গেছি । ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ব্যক্তিগত ভুল ত্রুটির মাশুল দেবার সময় বক্রোক্তি শুনেছি - " ভালোবাসতে ও শেখো নি " কিন্তু কিছু প্রবাদের, যেমন " When disgrace in some specific form is eminent, better enjoy it" অথবা "দেখে শিখতে না পারলে ঠেকে শেখো, ঠেকে শিখতে না পারলে অন্তত ঠকে শেখো " থেকে শিক্ষা নিয়ে আজকের এই পরিস্থিতি কে ভালোবাসতে শিখে গেছি ।

কিছু উদাহরন দিই - ক্রমিক এর ব্যপারটা শুধুই গানিতিক আদলে ফেলার জন্য -

১। যখন মোবাইল কোম্পানীগুলো কোনো প্রমোশন অফার দেয়, (শুধু স্ক্র্যাচ কার্ড এ) তখন ৩০০ টাকার কার্ড কমপক্ষে ৩১০ টাকায় কিনলে কিনেন, নইলে বিরক্তি কে ভালোবাসেন । এটি বুদ্ধি বা উপদেশ নয়, এটি বাস্তবতা ।

২। ওয়ারেন্টি সহকারে কোনো পন্য কিনেছেন, ওয়ারেন্টির শর্তাবলী ও মেয়াদকালের মধ্যে পন্যটি যথাযথ ভাবে বদলে দেওয়া বা সেরে দেওয়ার নিয়ম থাকলে ও, সে সেবা পাবেন তখন ই যখন -

ক। যে মার্কেট থেকে কিনেছেন সেই মার্কেট সমিতির সভাপতি/সচীব আপনার সাথে আছেন, অথবা

খ। শারিরীক এবং/অথবা দলগত পেশীবহুল কিছু ছেলেপুলে আপনার সঙ্গী, অথবা

গ। দোকানদার/সেলসম্যান এর কোনো দুর্বলতার খবর আপনি জানেন এবং সেটাকে ব্যবহার করবেন, অথবা

ঘ। হৈ চৈ বাধানোর কাজে আপনি প্রথিতযশা, এবং এ কৌশলে আজ পর্যন্ত দাবী আদায়ে অব্যর্থ, অথবা

ঙ। দোকানের সামনে গিয়ে এমন কাউকে দিয়ে দোকানে ফোন করাবেন, যিনি ফোন করলে দোকানদার ধন্য অথবা ভীত হয়, অথবা

চ। উপরোল্লিখিত সব কয়টি অথবা কিছু কিছুর সংমিশ্রন।

এ ধরনের আরো আইডিয়া/বুদ্ধি থাকতে পারে, কিন্তু সেটি বিবেচ্য নয় । বিবেচ্য বিষয় টি হলো হয় উপরের পদ্ধতি কে ভালোবাসবেন অথবা দোকানদার কতৃক প্রত্যাখাত হয়ে বিরক্তি কে ভালবাসবেন ।

৩। একটি দোকানে একই ব্র্যান্ডের একই দেশের একই প্রস্তুতকারকের একই মাসে প্রস্তুতকৃ্ত একই দ্রব্যের তিনটি সংস্করন পাবেন, যাদের দামের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত । এ রকম হওয়ার কারন জিজ্ঞেস করলে অনেক ধরনের জবাব পেতে পারেন, কিন্তু কোনটাই আপনার মনঃপুত হবে না । প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে সামর্থ্য ও বিবেচনা বোধের উপর ভরসা করে আপনি যে কি কিনলেন, তা নিয়ে কিছুক্ষনের মধ্য আপনার মনে নিম্নচাপ, ক্রমে তা ঘনীভূত হয়ে মধ্য লঘুচাপ, এবং অন্য কোন বিষয় নিয়ে ব্যস্ত না থাকলে কিছুক্ষনের মধ্যে মাঝারী ও দমকা হাওয়া সহকারে আপনার মানসিক পীড়া সৃষ্টিকারী ঘুর্নিঝড়ে পরিনত হতে পারে। এ সময়ে পরিবার ও প্রিয়জনদেরকে আপনার কাছ থেকে যথাযথ সতর্কতামুলক দুরত্বে অবস্থানের পরামর্শ দেয়া যেতে পারে । এ রকম পরিস্থিতি থেকে পরিত্রানের জন্য বিশ্বস্ত কারো কাছে যেতে হবে অথবা বিরক্তি সহকারে ঘুর্নিঝড়মুলক বিরক্তি কে প্রথমে মেনে নিতে ও পর্য্যায়ক্রমে ভালোবেসে ফেলতে হবে ।

৪। ক্রয়কৃ্ত যে কোন পন্য আকার বা আকৃ্তি জনিত কারনে বদল করার প্রয়োজন হলে আপনাকে মনে রাখতে ও দৃঢ়্ভাবে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, উন্নত বিশ্বের জীবানু অস্ত্র প্রস্তুতকারীদের ল্যাব এ যে সব গিনিপিগ বা স্তন্যপায়ী প্রানী আছে তারাও আপনার চেয়ে বেশী মাত্রার মানবাধিকার ভোগ করে । কি? আমার কথা এ মেনে নিতে পারলেন না? নিজে ভুক্তভোগী হয়ে এখানকার গিনিপিগ হোন, তারপর মেনে নিয়ে বিরক্ত হোন, এবং ধীরে ধীরে বিরক্তি কে ভালোবাসতে শিখুন ।

ওপরের অংশ টুকু পড়ে যে কেউ আমাকে হতাশাবাদী বা আধুনিক কবি নজরুল বলবেন না যেন । প্রথমে ই বলেছিলাম আমার উদ্দেশ্য লেখা নয়, কোথাও গিয়ে যদি দেয়াল এর সাথে ও কথা বলতে পারি, তাতে যদি মনে শান্তি পাই, ক্ষতি কি?

আশা করি সবাই ভালো থাকবেন, প্রাথর্না করি আমার মতো আপনারা বিরক্তি কে ভালবাসবেন না, আপনাদের মন থাকুক পদ্মফোটা টলটলে জলে ভরা পুকুরে ভেসে বেড়ানো রাজঁহাসের গ্রীবার মতো উষ্ণ । ধন্যবাদ




সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:২১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×