হাজার বৎসর পূর্বে; পশ্চিমের প্রাচীন খ্যাড়খ্যাড়া মরুঞ্চল হইতে ঊটের মাজায় চড়িয়া কাফেলা সমেত দিকহারা ভাগ্যাম্বেষি তুরানী বেদুঈনের দল; তরমুজ, খিরমীজ পর্বতমালা পল্টি দিয়া ভারতবর্ষে আসিয়া ভীষন বিপাকে পড়িল । চতুর্দিক চাহিয়া তাহাদের ভীমরি খাইবার দশা, ইহা কি সেই দেশ ! ! ! ডাইনে-বায়ে, আগে-পাছে, উপ্রে-নীচে জলাধার আর জলাধার; বালির চিহ্নমাত্র নাই । এইপ্রকার আবাল প্রান্তরের ধারনা, তাহাদের চৌদ্দপুরুষেও কেহ কল্পনাও করেনাই । আজিবই বটে ।
এরপরে আরও পূর্বে অগ্রসর হইলে, তাহাদের বিস্ময়ের বাঁধ, বাঁধভাঙ্গার আওয়াজের ন্যায় ভাঙ্গিয়া পড়ে (উপ্রের ব্যানারে ছবি আছে)। জলে জলে জলাকার এই ভুখন্ড দেখিয়া চোখ ভিজিয়া ওঠে, আহা ! এরাম মিষ্টি পানিঞ্চল সমৃদ্ধ বেহেস্তের ঈঙ্গিতই বুঝি গ্রন্থে বর্ণিত হইয়াছে ।
যাউগ্গা, বেদুইনকুলের অনুভুতির তীব্রতা, অতিমাত্রায় । বিস্ময়ের বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ প্রথম বস্তু আকার ধারন করে তলপেটে । সুদীর্ঘ পুবযাত্রায় অনেকক্ষন চাপিয়া রাখিয়া রাখিয়া বেগ শতগুন বাড়িয়াছে । উপায় কি ? বেদুইনের দল একে একে ঊষ্টক হইতে নামিয়া আসিল, এবং পথিমধ্যেই ঝোপের আড়াল বুঝিয়া, বসিতে উদ্যত হয় ।
কিন্তু, কিয়ের মদ্দে কি, পান্তা ভাতে ঘি । আদমকাল ধরিয়া যে জাতি বালুতে অভ্যস্ত তাহারা কি আর এই জলাকারে আসিয়া কুলাইতে পারে ? হাগনকার্য বরাবরই ধার্য ছিল বালিয়ারী কোল, এবং হাগনত্তর সৌচাদি সম্পন্ন হইত অতি সহজলভ্য বালি দিয়া ।
সৌচকার্যে মরুবুকের ঝরঝরা বালিকনা আর মরুপাত্থর ব্যবহার ছাড়া বিকল্প আর কিছুই ভাবা যাইতনা । পানের জন্য পানিই যেখানে দূষ্প্রাপ্য, সেখানে পানি দ্বারা সৌচাদি সমপন্ন করার বিলাসিতা তাহাদের চৌদ্দশত গুষ্টিতেও কেহ আগে ভাবেনাই ।
সে যাহাই হোক, উত্তেজনার বসে নাহয় বেদুঈনকুল পথপার্শ্বের ঝোপে যাইয়া কাজ সারিয়াই ফেলিল , এইবার সৌচাদি ! ? ! ? !
বিস্তর একুল ওকুল খুজিয়া পরস্পরের চোখ চাহিয়া বেদুঈনকুল বুঝিল আশে পাশে চৌদ্দ কিলোমিটারের মধ্যে বালির দেখা নাই । এখন কি উপায় । মাথায় হাত দিয়া ( মতান্তরে পাছায় ) তাহার বসিয়া পরে ।
উহাদের মধ্যে জনৈক ফইটকা ইবনে হরান তাহার ভৃত্যকে ডাকিয়া শলাপরামর্শ করিলে, ভৃত্য গোবাইজ্জা পশ্চাৎদেশ বিশেষ আঙ্গেলে চ্যাগাইয়া হাটিতে হাটিতে লোকালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয় ।
কিয়ৎক্ষন পরে কয়েকজন নেটিভ গ্রামবাসী সহ ফিরিয়া আসিলে ঈবনে হরান জিজ্ঞেস করে, উপায় কি ? পরিস্থিতি বুঝিয়া গ্রামবাসী সমস্বরে বলে, "ঐ যে জলাধার দেখিতেছেন ঐটায় নামিয়া সারিয়া লন"
বেদুঈনকুল দ্বিগুন সমস্বরে হায় হায় করিয়া ওঠে, "তওবা তওবা, এও কি হয়, পানি দিয়া সারিলে যে খোদার লানদ পড়িবে ! ! !"
কাহিনি বুঝিয়া গ্রামবাসী তাহাদের আশস্ত করে এই অঞ্চলে পানির অভাব নাই, সো নো টেনশন, আপনেরা পানিই ব্যবহার করেন"
ইবনে হরান এবং তার সহচরবৃন্দ নাছোড় । না ! তাহারা বালি ছাড়া পশ্চাৎদেশে আর কিছু লাগাইতে পারিবেনা, অনতিবিলম্বে গ্রামবাসী যেন তাহাদের বালির ব্যবস্থা করিয়া দেয় । তাহাদের প্রদত্তপুরুষ নাকি একই উপায়ে কার্যাদি সমপন্ন করিতেন বলিয়া , ঐ উপায়ে করিলে তাহাদের সোয়াবের খাতায় লালদাগ পড়িবেনা । তাই বালিই আবশ্যক ।
অথিতিপরায়ন গ্রামবাসী দেখিল তাহারা ভীষন বিপদে পড়িয়াছে, এখন কি করণ ?
গ্রামবাসী খেয়াল করিল বেদুইনকুলের সাথে সফরসঙ্গী বিরাট ভেড়ার পাল, যাত্রাপথে যথাসম্ভব তাহাদের গোসল হয় নাই, গায়ে একেক্টার তিন কেজি করিয়া ময়লা, ধুলোবালি । হঠাৎ বুদ্ধি আসিল, তাহাদের একেক্টিকে ধরিয়া বেদুঈনদের পাছার কাছে নিয়ে যাওয়া হইল, এবং বলা হইল, ঘষা দিতে।
নিরুপায় বেদুঈনকুল অগত্যা তাই করিল, যাই হোক একটু অন্তত বালি ম্যানেজ হইয়াছে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০০৯ ভোর ৬:৩২