বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, পৃথিবীতে মোট জনসংখ্যার ১০ ভাগ প্রতিবন্ধী। তাদের মধ্যে বড় অংশ প্রতিবন্ধী মানসিকভাবে। কেউ কেউ মনে করেন, পাকিস্তানী সাবেক ক্রিকেটার এবং ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজাও তাদের একজন।
বাংলাদেশের কাছে সাউথ আফ্রিকা পর পর দুটি ম্যাচে বিশাল ব্যবধানে হারার পর রমিজ রাজা তার টুইটারে লিখেছেন: বাংলাদেশ এবং সাউথ আফ্রিকার মধ্যে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ম্যাচ দুটি আইসিসিকে তদন্ত করে দেখার জন্য অনুরোধ করছি এবং আমি বিশ্বাস করি যে, বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করার জন্যই সিএসএ’র সঙ্গে চুক্তি করেছিলো।
মূলত: ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিতব্য সেরা আট দলের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে পাকিস্তানের বাদ পড়ার সম্ভাবনা প্রবল হওয়াতেই রমিজ রাজার এই মন্তব্য। কারণ বর্তমানে আইসিসি র্যাংকিং এ তাদের অবস্থান নয় নম্বরে আর শ্রীলংকা সফরে হেরে গেলে আরো পিছিয়ে পড়তে হতে পারে তাদের।
রমিজের বক্তব্যের পর এমনকি সাবেক বিশ্ব তারকাদের কলামে সমালোচনার মুখে তার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ না আসায় ধরে নেওয়া যায় ওই টুইটার অ্যাকাউন্টটি রমিজ রাজার। তার প্রকাশ্য ধারাভাষ্যে বাংলাদেশবিরোধিতা তো সকলেরই জানা।
এর আগে পাকিস্তানী ক্রিকেটার নাসির জামশেদও টুইটারে বাংলাদেশের খেলা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। পরে অবশ্য দেখা যায় যে, তার টুইটার একাউন্টটি ভুয়া। অামরা বিশ্বাস করতে চাই যে ওই টুইটার অ্যাকাউন্টটি রমিজ রাজার নয়। তবে অন্য কয়েকজন সাবেক পাকিস্তানী ক্রিকেটার এবং পাকিস্তানী গণমাধ্যমের একটি অংশ যেভাবে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজকে পাতানো বলেছে, তাতে মনে হয় তাদের বড় অংশ মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী।
নিশ্চয়ই মনে আছে, পাকিস্তানের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘দুনিয়া নিউজ’ এর ‘ইয়ে হ্যায় ক্রিকেট দিওয়াঙ্গি’ অনুষ্ঠানে উপস্থাপক আলিনা ফারুক বাংলাদেশের কাছে ভারতের হারের কারণ সম্পর্কে পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বেলার সরফরাজ নেওয়াজের কাছে। সরফরাজ টেলিফোনে যুক্ত হয়ে বলেন: পাকিস্তান যেনো ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নিতে না পারে, সেজন্যই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাংলাদেশকে ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশকে ভালো দলের স্বীকৃতি দিতে এখনো নারাজ পাকিস্তান। অথচ তারাই ৩-০তে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগারদের কাছে। কিন্তু হিংসুটে স্বভাবের কারণে তারা ক্রিকেটে দাম্ভিকতা দেখিয়েই যাচ্ছে।
পাকিস্তানী অনেক খেলোয়াড়কে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম যারা বাংলদেশ ক্রিকেট লীগে খেলে গেছেন। বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই মুখে ধর্মের কথা বললেও আফিম, গাজা, মদ, জুয়া, যৌনতা-- হেন অপকর্ম নেই যার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। লীগ থেকে যে টাকা পেতেন তার বড় অংশই তারা খরচ করতেন এসবের পেছনে।
তবে রাশেদ হানিফের মতো দু'একজন ভাল মানুষও ছিলেন। আবার ইমরান ফাহাদের মত হার্ড হিটার খেলোয়াড় এখানে খেলতে এসে দিনাজপুরের বিহারী মেয়েকে বিয়ে করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ায় তার পরিবার ও পাকিস্তান ক্রিকেট থেকে অভিযোগ আসায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে বিব্রত হতে হয়েছিলো।
শুধু সরফরাজ বা রমিজ রাজা নন, অনেক পাকিস্তানীই বাংলাদেশ নিয়ে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত। সেটা অবশ্যই একাত্তরের কারণে। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে কোনো কিছু মেনে না নেওয়াটা এবং প্রতিবন্ধিতা সৃষ্টিকরা মানসিক প্রতিবন্ধীর লক্ষণ। বয়স, লিঙ্গ, জাতি, সংস্কৃতি বা সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী আর দশজন যে কাজগুলো করতে পারেন, ইমপেয়ারমেন্টের কারণে সে কাজগুলো প্রাত্যহিক জীবনে করতে না পারার অবস্থাটাই হলো ডিসএবিলিটি বা প্রতিবন্ধিকতা। প্রতিবন্ধীদের আবর্জনা মনে না করে তাদের সুস্থতার স্বার্থে আপন করে নেওয়া উচিত এই জন্য যে তারা প্রতিবন্ধী/
পৃষ্ঠপোষকতা আর সহানুভূতি পেলে এরাও পরিপুর্ণ স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারেন। তাই রমিজ রাজাকে স্বাভাবিক মানুষের কাতারে আনতে হলে বাংলাদেশসহ অন্য দেশের মানুষদের তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ানো উচিত। তার আগে অবশ্য ধারাভাষ্যকারের মতো নিরপেক্ষ পেশা থেকে আপাতত: তাকে বিরত রাখা উচিত। তাকে এই শিক্ষায় শিক্ষিত করা উচিত যে, অশিক্ষা এবং অপসংস্কৃতির মধ্যে জন্মগ্রহণ করেও স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠা যায় ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫