somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ই-ফ্রেন্ড : পর্ব-৩

০২ রা মার্চ, ২০০৯ রাত ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিন

রাগ করে, কিংবা বিরক্ত হয়ে, ক্ষুব্ধ মিমি যখন কথা না বলেই খট করে রিসিভার নামিয়ে রেখে দিয়েছিল, নিজের প্রতি শাহিদের খুব ঘৃণা ধরে গিয়েছিল। মনে মনে প্রতিঞ্চা করেছিল, আর কখনোই মিমিকে ফোন করবে না। কী-ই বা এমন যাদু আছে তার কণ্ঠস্বরে যে তাকে ফোন করতেই হবে? মাস দুয়েক পর্যন্ত সে মিমিকে আর ফোনই করলো না।
কিন্তু যতোই সে নিজের প্রতিঞ্চায় অটল থাকতে চায়, ততোই ফোন করার জন্য তার ইচ্ছে প্রবল হয়ে ওঠে।
বৃষ্টি-ধোয়া একটি বিকেল, বাইরে বেরুবার ইচ্ছে নেই, মনটা তার দারুণ বিষাদময়, শাহিদ আর নিজেকে স্থির রাখতে পারলো না।
৭৪১৭০৯৯
ক্রিংক্রিং ক্রিংক্রি ক্রিংক্রিং
হ্যালো স্লামালাইকুম। মিমির নরম ও মিষ্টি কণ্ঠস্বর।
স্লামালাইকুম। ভালো আছেন? শাহিদও নরম করে জিঞ্চাসা করে।
মিমি স্বল্পক্ষণের দম নেয়। তারপর সামান্য টেনে টেনে বলে, হ্যাঁ-----।
দুঃখিত যে আপনাকে বিরক্ত করছি। আপনি কি এখন খুবই ব্যস্ত?
একটুন
ঠিক আছে তাহলে, রেখে দিই?
ঠিক আছে, কথা বলতে না চাইলে রেখে দিন।
আপনি এতো নিষ্ঠুর কেন, বলুন তো?
এতে নিষ্ঠুরতার কী হলো?
আপনি খুবই আঘাত দিয়ে কথা বলেন।
কী জানি ভাই, আমি আমার মতো করে বলি, তাতে কেউ আঘাত পেলে আমি কী করতে পারি?
আপনার এ কথাটিও শেলের মতো আমার বুকে বিঁধছে।
কেন?
আপনার কথায় আমি কষ্ট পাই, আপনি সব সময়ই এটা চান। তাই না?
আমি আসলে এভাবেই কথা বলি।
হ্যাঁ, তা খুবই বুঝতে পারছি।
আচ্ছা, আপনি কী করেন জানতে পারি কি?
অবশ্যই পারেন।
কী করেন?
এখন বলতে চাইছি না যে।
আচ্ছা ঠিক আছে, না বললে না বলবেন, এটা জানার এতো শখ নেই আমার।
ওওউফ, কী সাংঘাতিক নিষ্ঠুর আপনি!
এসব পেঁচাল বাদ দিন।
বাদ দিলাম। আচ্ছা আপনি কী করেন?
পড়ালেখা করি।
ও ইয়েস, মনে পড়ছে, জুলাইয়ে আপনার পরীক্ষা, না?
জুলাইয়ে মানে?
আপনি বলেছিলেন জুলাইয়ে আপনার মাস্টার্স ফার্ষ্ট পাঢর্~ পরীক্ষা।
ওওফনমিমি হেসে ওঠে। আপনি দেখি আমার সব কথা একেবারে অক্ষরে অক্ষরে মনে রাখেন।
তাহলে কি ওটা ভুল ছিল?
কোন্টা?
জুলাইয়ে পরীক্ষা হওয়ার কথা?
কী জানি, আমি কি সত্যিই বলেছিলাম?
বলেছিলেন।
আমার মনে নেই।
আপনি কোন্ বিষয়ে পড়ছেন?
সোশ্যাল ষ্টাডিজে।
অনার্স?
হুম।
কোন্ ইয়ার?
থার্ড ইয়ার।
ঢাকা ভার্সিটি?
ইডেন কলেজ।
আপনার রোল নম্বর কতো?
ও মাই গড, আমি দেখি আপনাকে সবই বলে দিচ্ছি। নো নো নো, নো মোর ডিটেইলস এবাউট মি।
ও-কে, নো প্রোবলেম। কলেজের ঠিকানায় আপনাকে চিঠি পাঠাবো, কোন অসুবিধে নেই তো?
মানে?
আপনার কাছে চিঠি লিখবো।
সর্বনাশ!
কেন?
ঐ চিঠি আমার হাতে তো আসবেই না, উল্টো কার হাতে পড়ে যায়নশেষে সারা কলেজে রটে যাবেনখবরদার, এ কাজ কক্ষণোই করবেন না, বিলকুল না।
তাহলে আপনাদের বাসার ঠিকানায় পাঠাই?
ও-মা, তাহলে তো আর রক্ষা-ই নেই।
কেন?
আমাকে কলংকিনী কংকাবতী করে ঘর থেকে চুলের মুঠি ধরে বের করে দিবে।
ক্ষতি কী?
ক্ষতি নেই বলছেন? আপনি জানেন আমার হাজব্যান্ডের কথা?
আমি এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছিনআপনার স্বামীকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসবেন, দেখবেন আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি আপনার প্রতীক্ষায়।
বাব্বাহন
বিশ্বাস হয় না?
না।
কেন?
আপনার স্ত্রী কি আপনার কথাগুলো শুনতে পাচ্ছেন না?
কীভাবে শুনবে?
উনি এখন বাসায় নেই?
না, একটু বাইরে গেছে।
বাসায় অন্য কেউ নেই?
হ্যাঁ, আছে।
আর কারা কারা আছে?
আমার নাতি আছে। দুই ছেলের দুই বউ আছে।
তারা শুনতে পাচ্ছে না?
আমার রুমের দরজা বন্ধ করে রেখেছি।
আপনি খুব চতুর।
তবু বুদ্ধিমান বলবেন না?
আপনার ছেলেরা কে কী করে?
চাকরি করে।
দুজনেই?
দুজনেই।
কোথায়?
একজন দেশে, আরেকজন বিদেশে।
বিদেশে কতো বছর ধরে?
প্রায় তিন চার বছর।
এক নাগাড়ে?
বছর খানেক পর পর বাড়ি আসে।
বিদেশে চাকরি করে কেন? দেশেই তো একটা কিছু করতে পারতো।
মনে নেই, একদিন বলেছিলাম?
আপনার বউরা কি আপনার সেবা করে?
খুউব।
তাদের সাথে রাগারাগি করেন না?
তারা আমার মেয়ের মতো।
তাই?
ভীষণ বিরক্ত করে।
কী রকম?
দশটার মধ্যেই নাস্তা খেতে হবে। অথচ এগারটার আগে আমার ঘুমই ভাঙ্গে না।
বড় অদ্ভুত তো, এগারটা পর্যন্ত কেউ ঘুমায়?
হ্যাঁ, ঘুমায় তো, আমার ছোট বউটা খুব অলস, আর ঝগড়াটে। অবশ্য খুব শিক্ষিত, সে বারোটার সময় ঘুম থেকে উঠে তার শাশুড়িকে বলবে, মা, লাঞ্চ কি রেডি হয়েছে?
মিমি কলকল শব্দে হাসতে থাকে।
শাহিদ বলে, হাসছেন যে?
হাসির কথা বললে কি কেউ কাঁদে?
এটা মোটেও হাসির কথা নয়।
আপনি মাঝে মধ্যে এমন কথা বলেন যে ঘুমের মধ্যেও কখনো কখনো হেসে ওঠি।
আমি ধন্য হয়ে গেলাম।
কেন?
আমার ধারণা ছিল যে দীর্ঘ দিবস ও দীর্ঘ রজনী কেবল আমিই একজনের কথা ভাবি, এখন দেখছিন
আপনার ধারণা ভুল ছিলনতাই বলতে চাইছেন?
একজ্যাক্টলি।
আচ্ছা, আমার কথা কি আপনার বউকে বলেছেন?
হ্যাঁনএকটা শব্দও গোপন রাখি না।
উনি কী বলেন?
মিটিমিটি হাসেন।
অবিশ্বাস্য।
বিশ্বাস করানোর জন্য কী করতে পারি?
কিচ্ছু না।
আপনি বই টই পড়েন?
আগে প্রচুর পড়তাম। এখন পড়ি খুব কম।
কম কেন?
ঘর-সংসার সামলানো, কলেজের পড়ালেখান্সময় কোথায়?
পড়ালেখা করবেন, আবার ঘর-সংসারও করবেন? দুটো তো একসঙ্গে হয় না। এসব সংসার টংসার বাদ দিন।
সংসার বাদ দিব? মেয়েদের জন্মই তো রান্নাঘর সামলানোর জন্য, বাচ্চা কাচ্চাদের বিছানা-বালিশ-পায়খানা-প্রসাব পরিস্কার করার জন্য, এর মধ্যে লেখাপড়া করাটা হলো একটা উপড়ি কাজ।
মানলাম না।
মানবেন কেন? আপনিও কি পুরুষ না?
মানে?
পুরুষ শাসিত সমাজে পুরুষরা কি নারীদের কথা মানে? তারা যা বলবে নারীদেরকে তার সবই মাথা পেতে নিতে হবে, সইতে হবে।
বাব্বাহ, আপনার অন্তরেও তাহলে একজন তসলিমা নাসরিন আছেন?
আমি তসলিমা নাসরিন হতে যাবো কেন? এটা সব নারীরই মনের ক্ষোভ।
আমি কি তাহলে ধরে নিতে পারি না যে প্রত্যেকটা নারীই একেকটা তসলিমা নাসরিন?
আমি এ কথাটা অন্যভাবেও বলতে পারি।
কেমন?
মাটির নিচে সবখানেই আগুন চাপা আছে। বিস্ফোরণ এবং লাভা উদ্গীরণ কিন্তু সব জায়গাতে হয় না।
আপনার মনেও কি ক্ষোভ জমে উঠছে?
নাহ্। জমলেও আমার বিস্ফোরণের কোন সম্ভাবনাই নেই।
কেন?
সব কেনর জবাব নেই।
আপনার উচিত তসলিমা নাসরিনের বই পড়া।
আমি তাঁকে পছন্দ করি না।
কেন?
এটা আপনাকে বুঝিয়ে বলতে পারবো না।
কিন্তু আশ্চর্য।
কী?
তসলিমা সম্পর্কে আমার স্ত্রীরও একই ধারণা।
আপনার?
তসলিমা সম্পর্কে আমার ধারণা আগের চেয়ে একটু পাল্টেছে।
আপনি তাঁর খুবই ভক্ত, বুঝতে পারছি।
কীভাবে বুঝলেন?
আমার ধারণা, আপনি তসলিমার লেখাকে পছন্দ করেন না। পছন্দ করেন তাঁর গ্ল্যামারকে।
মানে?
তসলিমা একজন আকর্ষণীয়া মহিলা, তাঁর লেখায় একটু অন্য ধরণের স্বাদ আছে, পুরুষরা সেগুলো চানাচুরের মতো লুফে নেয়।
আপনার ইংগিতটার অর্থ অত্যন্ত পরিষ্কার। কিন্তু আমি সে রকম নই।
সে রকম মানে?
মূলত তসলিমা সম্পর্কে আমার, আপনার এবং আমার স্ত্রীর মনোভাবে কোন পার্থক্য নেই।
আমি খুব কম পুরুষের কথাই জানি যারা তসলিমাকে অপছন্দ করেন।
আপনার ধারণাটা ঠিক নয়। তসলিমাকে শুরু থেকেই আমি অত্যন্ত অপছন্দ এবং ঘৃণা করি। তসলিমার ভক্তরা তাঁকে নারীবাদী মহীয়সী বলে, আমার কাছে মনে হচ্ছেনহ্যালো।
জ্বি বলুন, শুনছি।
আমার কাছে মনে হচ্ছে তসলিমা একটা ভীষণ ভোগবাদী মহিলা। আমি কি বোঝাতে পেরেছি?
কিন্তু উনি নিজেকে কী মনে করেন, জানেন?
মনে করেন নারী জাগরণের পথিকৃৎন
ঠিক তাইনউনি ভাবেন যে উনি এদেশের আরেকজন বেগম রোকেয়া।
কিন্তু দুজনের মধ্যে কী বিস্তর ব্যবধান!
তসলিমা যে কী বলতে চান তা কিন্তু পরিষ্কার নয়।
আমার মনে হয় তসলিমা তাঁর উগ্রতা এবং যুক্তিহীনতার জন্যই সাহিত্যে একটা কলংক হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন।
আমি সাহিত্য ততোখানি বুঝি না এবং এর শিল্পগুণ বা দোষ সম্পর্কেও আমার স্বচ্ছ ধারণা নেই। আমি যেটুকু বুঝি তাহলো, উনি যদি বিতর্কিত বিষয়গুলো না টেনে কেবল নারী মুক্তির জন্য আন্দোলন করতেন, তাহলে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবার মনেই একটা শাশ্বত স্থান করে নিতে পারতেন।
আমি ঠিক এই কথাটাই বলতে চাইছিলাম। আপনি কি তাঁর জ্ঞকঞ্চ পড়েছেন?
জ্ঞকঞ্চ আমি পড়িনি। তবে এটা নিয়ে যে সারাদেশে ~েহ ~েচ পড়ে গেছে তা জানি। সর্বশেষ ~েসয়দ শামসুল হকের দশ কোটি টাকার মানহানি মামলার ঘটনাটা আমার কাছে সবচাইতে উদ্ভট মনে হয়েছে। পৃথিবীতে কি এ রকম ঘটনা আর কোথাও ঘটেছে?
আগের ঘটনার কথা আমার জানা নেই, তবে এর পরের ঘটনার কথা জানি। পশ্চিমবঙ্গে এর আরেকটি সংস্করণ আছে, যার নাম জ্ঞদ্বিখন্ডিতঞ্চ, সেখানে অবশ্য কিছু অতিরিক্ত তথ্য বা ঘটনা যাই বলুন না কেন, আছে। তা পড়ে পশ্চিম বঙ্গীয় অনেকেই ক্ষেপে গেছেন এবং কবি ~েসয়দ হাসমত জালাল ১১ কোটি রুপির মানহালি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা করে কি এঁদের কোন লাভ হবে?
এরূপ তাৎক্ষণিক প্রতিবাদের ফলে জ্ঞকঞ্চ এর বিষয়বস্তুর সত্যতা নিয়ে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হবে, তার ফলে একটা সাময়িক ফায়দা এবং সমর্থন হয়তো এঁরা পাবেন। কিন্তু মামলা নিস্পত্তি হোক বা না হোক, এই মামলা বা তার ফলাফলেরর কথা আজকের পাঠকরা ভুলে না গেলেও সময়ের বিবর্তনে আগামী দিনের পাঠকদের কাছে তা হয়তো অজানা রয়ে যাবে। তখন তাঁরা জ্ঞকঞ্চ এর সব কথাই সত্য বলে ধরে নিবেন।
এঁদের উচিত ছিল মামলা না করে প্রতিবাদ স্বরূপ আরেকটা বই লিখা।
কিন্তু এঁরা তা করেননি। এজন্যই এঁরাও বিতর্কিত হয়ে গেলেন।
আচ্ছা, জ্ঞকঞ্চ এর পর কি তসলিমা জ্ঞখঞ্চ লিখবেন? আমি বলতে চাচ্ছি যে, এটা কি জ্ঞকঞ্চ দিয়ে শুরু ধারাবাহিক আত্মজীবনী?
এটা অনেকইে বলেন। কেউ কেউ না জেনে না বুঝে এই ধারণা করেন, কেউ কেউ ঠা-া করে বলেন।
আপনি কী বলেন?
আমি কী বলি তার আগে আমার নিজের অবস্থানটা সুনির্দিষ্ট করে বলে নিচ্ছিনআমি তসলিমার মত বা মতবাদের সাথে একমত নই। জ্ঞকঞ্চ পড়ার আগ পর্যন্ত তাঁর নাম শুনলে আমার গায়ে আগুন জ্বলে উঠতো, তাঁর লেখা পড়ে আমার শরীর রি রি করতোনযতোসব অযৌক্তিক যুক্তি, অসত্য তথ্য, উগ্রতা আর যৌনতায় ভর্তি। কিন্তু জ্ঞকঞ্চ পড়ার পর আমার মনের মধ্যে সামান্য পরিবর্তন এসেছে। খুব হাসছেন যে?
তসলিমা নামে যে পুরুষমাত্রই পাগল, এখন হাতে নাতে তার প্রমাণ পেলাম।
আমার কথা কিন্তু শেষ হয়নি।
মনে হয় শেষ হবেও না।
কেন?
এ আলোচনার কোন আদি-অন্ত নেই।
আপনি বোধ হয় বিরক্ত হচ্ছেন।
নাহ্, বলুন।
স্যরি, আপনার মতো আমি সুন্দর করে কথা বলতে পারি না।
আমি কি সুন্দর করে কথা বলি?
আপনি সুন্দর করে কথা বলেন, গুছিয়ে বলেন, শুনতে খুব ভালো লাগে। কবিতার মতোনচুল তার কবেকারনন।
আপনি একেবারেই অন্য রকম, ব- অন্য রকম। খুব হাসাতে পারেন। কিন্তু নিজে হাসেন না।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
কেন?
অতি সুন্দর করে একটা মিথ্যে বলে আমাকে সন্তুষ্ট করবার জন্য।
যাহ্, মোটেও মিথ্যে বলিনি।
আচ্ছা, আপনি কি জ্ঞকঞ্চ পড়বেন?
হয়তো পড়বো, তবে এখন না, পরীক্ষার পর।
পরীক্ষা কবে?
নভেম্বরের ২৬ তারিখে।
সে তো বহু দেরি।
কঠিন সিলেবাস। হিমশিম খাচ্ছি।
আচ্ছা ঠিক আছে। পরে হলেও অন্তত পড়ে নিবেন।
বললেন না যে বইটির নাম জ্ঞকঞ্চ হলো কেন?
আমার ধারণা, বইটির নামকরণের মধ্যে তসলিমা তাঁর অসাধারণ সৃষ্টিশীলতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। বইটির প্রচ্ছদে নাম লেখা জ্ঞকঞ্চ। মলাট উল্টোলেই তিন শব্দে লেখা জ্ঞকথা ক বকুলিঞ্চ। আমি যখন পড়তে শুরু করি, এ কথাগুলোকে তখন মোটেও পর্যাপ্ত অর্থবহ মনে হয়নি। সাত আটটা পরিচ্ছেদ পড়ার পর যে কাহিনীটা শুরু হলো তা এ রকমনএকদিন সকালে তসলিমা তাঁর নিজ কর্মস্থল হাসপাতালে উপসিহত হয়েই দেখেন এক মাঝ বয়সী মহিলা তার মেয়েকে নিয়ে তাঁর চেম্বারে বসে অপেক্ষায় আছে। মেয়েটির সর্বাঙ্গে অত্যাচারের চিহ্ন। নিষ্ঠুর নির্দয় স্বামী ~েপশাচিক আঘাতে তার সারা গায়ে দাগ করে ফেলেছে। করুণ বিষণ্ন জড়োসড়ো মেয়েটি চেম্বারের এক কোনে বসে। তার জন্য ওষুধ, চিকিৎসা চাই। শুনছেন?
হুম। তারপর?
তসলিমা মেয়েটিকে জিঞ্চাসা করেন, তোমার কী হয়েছে? মেয়েটি কথা বলে না, মায়াবী আর্দ্র চোখে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকায়। তসলিমা আবার বলেন, বলো, কী হয়েছে তোমার? মেয়েটি কিছুই বলে না। বলে না, বলে না। দুঃখিনী জননী তখন মেয়েকে হাত দিয়ে মৃদু ঠেলা দিয়ে বলে, কথা ক বকুলি। সেই বকুলি আর কথা বলেনি। আমাদের এমন কতো অজানা অত্যাচারিত মেয়ে আছেনযাদের প্রতীক হিসাবে বকুলিকে উপস্থাপন করা হয়েছে। সত্যি কথা বলতে কী বকুলির ঘটনা আমার মনের মধ্যে একটা গভীর ছাপ ফেলে দিয়েছে।
নামকরণটা আমার কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ মনে হচ্ছে।
আমার কী মনে হয় জানেন, জ্ঞকঞ্চ থেকে যদি বিতর্কিত এবং আপত্তিকর কথাগুলো কেটে দেয়া হতো তবে এটা একটা উৎকৃষ্ট সাহিত্যগুণ সম্পন্ন আত্মজীবনী হতে পারতো।
আমার কাছে তাই মনে হয় না।
কারণ?
কারণ, তসলিমার অস্ত্রই হলো বিতর্কিত বিষয়ের অবতারণা করা। এটা তাঁর স্টান্টবাজি, লাইম লাইটে আসার জন্য এবং বইয়ের কাটতি বাড়ানোর জন্য।
তা তো আছেই, আমি স্বীকার করছি। তবে বিতর্কিত বিষয়গুলো না থাকলে এ বইয়ের আবেদন আরো বহুগুণ বেড়ে যেত। আপনাকে বলি, প্রথম তিনটি পরিচ্ছেদে কোন বিতর্কিত বিষয় নেইনতাঁর আত্ম-সমালোচনা এবং অনুশোচনার কথা আছে এতে। ছোট বোনের বান্ধবীর ভাইকে বাসায় গিয়ে দেখে আসেন, তাঁর বাবার অনুপস্থিতিতে। ভিজিট ফি বাবদ তাঁকে ষাটটি টাকাও দেয়া হয়, তিনি ওটা নেন। পরে জানতে পারেন তাঁর বাবা কোনদিন ওখান থেকে ফি নেননি। তিনি টাকা ফেরত দিতে মনস্থ করেন, কিন্তু তার আগেই বান্ধবীর ভাইটি মারা যায়, কোনদিনই টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। কাহিনীটা সম্পূর্ণ মনে নেই, তবে এটি আমাকে খুব ভাবিয়েছে এবং কাঁদিয়েছেও। এর পরের দুটো পরিচ্ছেদও এ রকম করুণ বেদনাময়।
কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না বইটি এতো ঝড় তুললো কেন?
প্রথমতঃ ~েসয়দ শামসুল হককে তাঁর স্বরচিত জ্ঞখেলারাম খেলে যাঞ্চ উপন্যাসের জ্ঞলোচ্চাঞ্চ নায়ক হাসনাতের সাথে তুলনা করা হয়েছে, বলা হয়েছে আসলে হাসনাতের চরিত্রটা ~েসয়দ শামসুল হকেরই চরিত্রের প্রতিরূপ। তাঁর শ্যালিকার সাথে প্রণয় ঘটিত ব্যাপার স্যাপার নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে। তাঁর সম্পর্কে আরো কটু কথাবার্তা আছে। তবে আমার মনে হয়েছে তসলিমা ধর্মের ওপর সবচাইতে বেশি ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের নামই তিনি শুনতে পারেন না। তিনি বলেছেন, মুনতাসীর মামুনের মতো একজন শীর্ষ বুদ্ধিজীবীর কথাও শুনেছি যে তিনি শুক্রবারে জুম্মার নামাজ পড়তে মসজিদে যান। অর্থাৎ তাঁর ভাষায় ধর্ম কেবলই মূর্খ ও অবুদ্ধিজীবীদের জন্য। তিনি বলেছেন, ধর্ম কোন কালে কোন দেশে শান্তি দিতে পারেনি, দিয়েছে অশান্তি। এখানেই শেষ নয়, বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষ স্থানীয় লেখকগণও নাস্তিক নয়। অর্থ্যাৎ, তাঁর ভাষায় শীর্ষ স্থানীয় লেখক হলেই তাঁকে নাস্তিক হতে হবে, অর্থাৎ নাস্তিক হলেই শীর্ষ স্থানীয় লেখক হওয়া যায়, তাঁরা শীর্ষে উঠেই তখন বুঝে যাবেন যে আসলে সৃষ্টিকর্তা বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই। আপনি বলুন, এসব কথা শুনে কার না গা জ্বলে? এসব কেউ সহ্য করতে পারে?
আমার তো এখনই তাঁর চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে।
একজন বাঙ্গালি মুসলিম মেয়ে হয়ে তিনি যা চাইছেন আমার মনে হয় পৃথিবীর উন্নততম দেশেও তা নেই। তিনি চান ফ্রিডম অব সেক্স, জরায়ুর স্বাধীনতা। যখন যার সাথে ইচ্ছে তার সাথে সেক্স করায় বাঁধা থাকবে কেন? দুটি মন দুটি দেহ পরস্পরকে চাইতেই পারে, তাতে বাঁধা থাকতেই তার বিপত্তি হয়ে গেছে। কোন্ দেশের স্ত্রীরা স্বামীর বর্তমানে অন্যের সাথে সেক্স করতে পারে? পৃথিবীর সভ্য ইতিহাসে তা নেই। কিন্তু উনি তা-ই চান। বিকৃত রুচি আর কতোখানি হয়!
শাহিদ একটু থামে। মিমিও কোন কথা বলে না। একটু পরে সে বলে, বলুন না, আমি শুনছি।
আচ্ছা, আপনি কি জ্ঞদূরভাষিণীঞ্চ গল্পটা পড়েছেন?
ইম-মম--ম, না, পড়িনি। ওটা কার লেখা?
ঠিক মনে নেই, তবে খুব সম্ভবত সেলিনা হোসেনের, অথবা রাবেয়া খাতুনের।
গল্পটার ~েবশিষ্ট্য কী জানতে পারি?
নাহ্, থাক।
বলুন না প্লিজ।
দূরভাষিণী শব্দের অর্থটা বুঝতে পেরেছেন তো?
কিছুটা।
যেমন?
যে মেয়ে দূর থেকে কথা বলে।
ঠিক বলেছেন।
গল্পটার মেইন এট্রাকশন কী ছিল?
গল্পটাতে কোন এট্রাকশন ছিল না।
মানে? একদম নীরস একটা গল্প?
মোটেও নীরস নয়। এমন গল্প আমার জীবনে খুব কমই পড়েছি।
তাহলে বললেন যে কোন এট্রাকশনই নেই গল্পটায়?
ওটা ভুল করে বলেছি। যা বলতে চেয়েছিলাম তা বোঝাতে পারিনি।
আচ্ছা, এতো ভণিতা করছেন কেন, বলুনই না কী আছে গল্পটাতে?
আমি গল্পটা বলতে পারবো না। ওটা একটা করুণ গল্প। আমি ওরকম কিছু ভাবতেও চাই না।
টেলিফোনের অপর প্রান্তে মিমি নীরব থাকে, শাহিদও কোন কথা বলে না। কিছুক্ষণ পর মিমি নীরবতা ভেঙ্গে বলে, বলুন না, চুপ করে আছেন যে বড়?
নাহ্, স্টকে আর নেই। যা ছিল সব বলে ফেলেছি।
আপনি খুবই পড়েন, তাই না?
খুবই পড়ি না, তবে আমি প্রচুর বই কিনি। আমার ড্রইং রুম ভর্তি শুধু বই আর বই।
বই কি পাওয়া যাবে, পড়ার জন্য?
স্যরি, এটা যে পাবলিক লাইব্রেরি নয়।
ও-কে, মাফ করবেন, স্যরি।
আজকে বেরুবেন কোথাও?
আজ বা কালও না, পরশু।
কোথায় বেরুবেন?
ধানমন্ডিতে একটা বিটিক মেলা হবে। সেখানে যাবো।
পরশু কেন, কালই আসুন না?
হ্যাঁ, কালই আসবো, তাতে আপনার লাভ কী?
দেখা হবেনআপনার সাথে একটু ঘুরবো, এতোটুকুই।
কেন, আমার স্বামী নেই? আমি তাঁর সাথে হাত ধরাধরি করে ঘুরবো। আপনার সাথে কেন?
এতোখানি কড়া কথা বলতে পারলেন?
আপনি পারবেন আর আমি পারবো না?
আমি আবার কী কড়া কথা বললাম? কখন?
বই চাইতেই তো মুখের ওপর বলে দিলেন আপনার ঘর পাবলিক লাইব্রেরি না।
আই এ্যাম সো স্যরি মিমি, প্লিজ, আমি আমার কথাটা ফিরিয়ে নিচ্ছি। আমি বুঝতেই পারিনি যে কথাটা এতোখানি কঠিন হয়ে গেছে। আমি এখন বুঝতে পারছি।
আচ্ছা ঠিক আছে।
আমি আপনাকে অনেকক্ষণ ধরে বিরক্ত করলাম।
আমি বিরক্তবোধ করিনি।
অজস্র ধন্যবাদ। আমার বুকটা ভরে গেল।
কিছু মনে করবেন না, এ সময়ে আমার হাজব্যান্ড ফোন করে।
আচ্ছা রেখে দিচ্ছি। আরেকটা কথা বলি?
বলুন।
আজ কি আরেকবার ফোন করতে পারবো?
কেন ভাই, একটানা দেড় ঘন্টা কথা বললেন, সাধ মিটেনি?
আপনার কথা যতো শুনি ততোই আমি মুগ্ধ হয়ে যাই।
কিন্তু স্যরি, আজ আর না।
একদিন কিন্তু রাত ১২ টায় ফোন করে বসবো।
প্লিজনপ্লিজনওটা করবেন না। রাত এগারটার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ি তো, আমি খুব ডিস্টার্বড ফিল করবো।
তাহলে কাল এমন সময়ে?
কাল আমি থাকবো না।
কোথায় যাবেন?
আমার হাজব্যান্ডের বাসায়।
ও-বাসায় টেলিফোন নেই?
হ্যাঁ আছে।
দেয়া যাবে?
ও গডনতামাম পৃথিবী মাথায় করে নিবে আমার শাশুড়ি।
আবার কবে ফিরবেন?
সামনে মাসের ২৬ তারিখে।
এতোদিন! আরো আগে আসা যায় না?
স্যরি জনাব।
আমি ২৬ তারিখ ঠিক পাঁচটায় ফোন করবো।
ঠিক আছে।
রাখি তাহলে। এতোক্ষণ সময় দেয়ার জন্য সত্যিই আপনার কাছে আমি কৃতঞ্চ।
ধন্যবাদ।
খোদা হাফেজ।
খোদা হাফেজ।
ও, ভালো কথা।
আরো?
আপনি আমাকে কখনো ফোন করেন না কেন?
ফোন করতে আমার খুব আলসেমি লাগে।
এমন কি আমার কাছেও?
যে-কারো কাছেই।
খুব কষ্ট~ পেলাম।
কেন?
এখনো আমি যে কারোর দলেই রয়ে গেলাম বলে।
মিমি খুব হাসতে থাকে। শাহিদ জিঞ্চাসা করে, আপনার কি মোবাইল আছে?
হুম।
নম্বর কতো?
না বাবা, ওটা দেয়া যাবে না।
কেন?
বেশির ভাগ সময়েই ওটা আমার হাজব্যান্ডের কাছে থাকে। সত্যি বলতে কী, ওটা আমার নয়, বলতে পারেন আমাদের মোবাইল।
আপনার হাজব্যান্ড বাসায় থাকাকালে মোবাইল বাজলে কে রিসিভ করে?
আমিই করি। তবেন
কী?
আমার জামাইটা একটু অন্য ধরণের। এক ফাঁকে দেখে নিবে কে ফোন করেছিল।
কখনো কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে না?
হ্যাঁ, ঘটে।
তখন কী করেন?
আমি কিছুই করি না।
আপনার স্বামী? কী করেন?
কেঁদে কুটে বাড়ি ঘর মাথায় তুলে নেয়।
আর আপনি তখন মনে মনে হাসতে থাকেন?
খু-উ-ব।
আপনি সত্যিই খুব নিষ্ঠুর।
আমার হাজব্যান্ড আসলে খুব গোমড়া। হাসি-ঠা-া কিছুই পছন্দ করে না। রুটিন মাফিক সকাল আটটায় বের হয়ে যায়, আসে রাত-আটটা ন-টা বাজলে। খাওয়া-দাওয়া সেরে ভীষণ ক্লান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে নাক ডেকে ঘুমনএক ঘুমেই রাত পার।
আপনার জন্য সত্যিই আমার খুব আফসোস হয়।
কেন?
কারণ, আপনার ভিতরে একটা তসলিমা নাসরিন অহর্নিশি ফুলে ফেঁপে ফুঁসে উঠছে।
কীভাবে বুঝলেন?
ম্যাডাম, আমি তো কচি খোকা নই, দাদা হয়েছি।
মিমি হাসতে থাকে। শাহিদ বলে, তসলিমার একটা কবিতা আছেন
আমি আসলে কবিতা সবচাইতে কম পছন্দ করি।
আমিও কবিতা খুব পছন্দ করি না। তবে আমি কবিতাটা বলছি না, শুধু তার সারমর্মটা শুনুন।
ঠিক আছে বলুন।
গভীর রাত্রে রুদ্র বাসায় ফিরে, তসলিমার শরীরে তখন দাউ দাউ আগুন। হ্যালোন
শুনছি।
বহ্নিমান বুকের ওপর রুদ্র ঝাঁপিয়ে পড়ে, মাত্র দু-দন্ডনতারপর তৃপ্ত অবসন্ন শরীর নিয়ে সে বুক থেকে নেমে গিয়ে পাশে বিভোরে ঘুমায়নতসলিমার বুকের আগুন বহুগুণ বেড়ে যায়, পাশে শায়িত নপুংশক স্বামীটি তা অনুভবও করতে পারে না।
একটু নীরবতা। শাহিদ বলে, বোঝাতে পেরেছি?
মিমি একটু টেনে টেনে বলে, হ্যাঁ, পেরেছেন। একটা কথা বলবো, আশা করি মাইন্ড করবেন না।
শাহিদ ব্যাপারটা বুঝতে পারে। বলে স্যরিন
আমাদের আলোচনার পরিধির একটা নির্দিষ্ট সীমা থাকা উচিৎনআমি বলতে চাইছি যেনএসবন মানেনঐসব বিষয়ে আমি কারো সাথে কথা বলতে পছন্দ করি না। আমরা সর্বদাই আরেকটু সংযত এবং সচেতন থাকবো, কেমন?
আমি দুঃখিত, অত্যন্ত দুঃখিত।
তাহলে রাখি এখন?
ও, আসল কথাটা কিন্তু জানা হলো না।
পরে জানলে হয় না? অনেক সময় ধরে টেলিফোন এনগেজড তো, দেড় ঘন্টারও বেশি, দেখা যাবে যে আমার স্বামী ক্ষেপে ভূত হয়ে বাসায় চলে এসেছে।
তখন যদি দেখেন আপনি পরকীয়ায় মগ্নন
নাহ্, কে বলেছে আমি পরকীয়া করছি? আমি কি আপনার সাথে প্রেম করছি?
তাহলে?
আমি কিন্তু ফোন রেখে দিব।
স্যরি। আচ্ছা, যেটা জানতে চেয়েছিলাম, আপনার হাজব্যান্ড কী করেন?
গার্মেন্টস বিজনেস। ইসলামপুরে হোল-সেলার শপ আছে। মগবাজারেও একটা আছে।
ও, আপনি তো দেখছি কোটিপতির স্ত্রী।
না ভাই, এখানে আমার হাজব্যান্ড চাকর খাটে।
মানে?
বিজনেসের হর্তাকর্তা আমার শ্বশুর। আমার স্বামীসহ তাঁর চার ছেলে সার্বক্ষণিক সহায়তাকারী।
কিন্তু আপনার শ্বশুর তো আপনার হাজব্যান্ড এবং দেবর-ভাসুরদের জন্যই এসব করছেন।
করলে কী হবে, কারো কোন স্বাধীনতা আছে?
স্বাধীনতা নেই কেন?
দেখুন, আমার স্বামী হলো চার ভাই আর দুই বোনের মধ্যে সবচাইতে বোকা, কিন্তু পরিশ্রম করে সবচাইতে বেশি। বাড়িতেও, আমার অন্যান্য জা-রা পায়ের ওপর পা তুলে দিব্যি টিভি দেখে, আর বাসন-কোসন মাজা থেকে শুরু করে রান্নাবান্না সবই আমি করি। কিন্তু আমার স্বামী কোনদিন একা আমার জন্য একটা শাড়ি আনতে পারে না। আনলে সবার জন্যই আনতে হবে, না আনলে নেই।
আপনার জন্য সত্যিই আমার দুঃখ হয়।
মিমির ঘরে দরজা খোলার শব্দ হয়। রিসিভার মুখের কাছ থেকে একটু দূরে সরিয়ে নিয়ে তার উদ্দেশে মৃদু ধমক দিয়ে বলে ওঠে, কী চাস? দরজা বন্ধ কর, যা আসছি। তারপর শাহিদের উদ্দেশে বলে, স্যরি, রাখতে হবে এখন।
আপনি একজন কড়া শাসক বোঝা যায়।
কীভাবে?
বুয়াকে যেভাবে হুকুম দিলেন।
বুয়া না, আমার খালাত বোন।
বেড়াতে এসেছে?
না, এ বাসায়ই থাকে।
ও।
আবারো দরজা খোলার শব্দ। মিমি তড়িঘড়ি বলে, স্যরি, রাখতে হবে।
কোন সমস্যা? এ কথা শেষ হবার আগেই ও-প্রান্তে মিমি রিসিভার নামিয়ে রাখে।


আজকের শুরুটা যেভাবে হয়েছিল শেষটা সে রকম হলো না। কেমন শেষ হয়েও হলো না শেষ, অন্তরে অতৃপ্তির রেশ। ভালোই, শাহিদ মনে মনে বলে, রবীন্দ্রনাথের কথাগুলোকে সে তার নিজের মতো করে ছন্দোবদ্ধ করে ফেললোনশেষ হয়েও হলো না শেষ, অন্তরে অতৃপ্তির রেশ।
অনেক দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলা হলো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কিছুই বলা হয়নি। মনে হচ্ছে মিমিকে আরো কতো কথা জিঞ্চাসা করার ছিল। কিন্তু সবচাইতে দরকারি কথা যে কোন্গুলো তাও সে বুঝতে পারছে না। মিমির কথাবার্তায় বেশ কিছু অসংলগ্নতা আছে বলে মনে হয়, কিন্তু ঠিক সেগুলোও সে চিহ্নিত করতে পারছে না।
কে এই মিমি? আসলে তার নাম কি মিমি? তাহলে তিশাটা কে? সে কি সত্যিই বিবাহিতা? তাহলে সব সময় এ বাসায়, মানে বাপের বাড়িতে পড়ে থাকে কেন? একবার সে বলেছিল সামনে জুলাইয়ে তার পরীক্ষা, মাষ্টার্স ফার্স্ট পার্ট। এখন বলছে জুলাইয়ে নয়, তার পরীক্ষা ২৬ নভেম্বরে, ইডেনে সোশ্যাল ষ্টাডিজে থার্ড ইয়ার অনার্স পড়ছে সে।
শাহিদ ভাবছে, মিমির টেলিফোনে বোধ হয় ডিসপ্লে বোর্ড আছে। ফোন করার সময় সেখানে নিশ্চয়ই তার নম্বরটা ভেসে ওঠে, তা না হলে যখন ফোন করার কথা বলা হলো সে তার ফোন নম্বর চাইতে পারতো।
একটা মোবাইল কেনা দরকার। সেটা টিএন্ডটি ইনকামিং হতে হবে। মিমিকে বলতে হবে, যখনই সে অবসরে থাকবে, যেখানেই সে থাক না কেন, তার মোবাইলে একটা মিসকল দিবে।
কিন্তু দিন যেতে চায় না। আগামী মাসের ২৬ তারিখ আসতে আরো বহুদিন। আজ কেবল এ মাসের ৬। পুরো এক মাস বিশ দিন বাকি।
অস্থির ~েধর্য্যের মধ্য দিয়ে পরের মাসের ২৫ তারিখ রাতে পৌঁছলো শাহিদ, কিন্তু উত্তেজনায় তার ভালো ঘুম হলো না।
২৬ তারিখ সকাল থেকেই তার বুক ছটফট করতে থাকলো। একবার সে ভাবলো সকাল বেলাতেই ফোন করলে কেমন হয়। আগে অবশ্য সকাল বেলায় ফোন কোনদিন করা হয়নি। পরে মনে হলো, ২৬ তারিখে তো এ বাসায় আসার কথা। নিশ্চয়ই এতো সকালে আসবে না। আবার তার মনে হলো, ২৬ তারিখে আসার কথা, দু-একদিন আগেও এসে থাকতে পারে; অবশ্য দু-একদিন পরে আসার সম্ভাবনাটাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। তবে সে সর্বদা পজিটিভ দিকটারই আশাবাদী।
বুকে ধুকধুকানি নিয়ে সকাল আটটার দিকে সে ডায়াল করলো। রিং বেজে ওঠার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রচণ্ডভাবে তার বুক কাঁপতে থাকলো, কিন্তু মিমির ফোন এনগেজড। এতো সকালে ফোন এনগেজড? শাহিদের মন খারাপ হয় অকারণ সন্দেহেনতার মতোই অন্য আরেকজনের সাথেও তার প্রেমালাপ জমে ওঠেনি তো? কিন্তু পরের মুহূর্তেই তার সেই আশংকা দূর হয়, মিমি যে এ বাসায়ই আছে তা তো এখনো নিশ্চিত করে বলা যায় নানঅন্য কেউও ফোনে ব্যস্ত থাকতে পারে।
মিনিট পাঁচেক পর আবার সে ডায়াল করে এবং এবার লাইন ক্লিয়ার পাওয়া যায়, রিং যেতে থাকেনক্রি²ংক্রিংক্রিংনশাহিদের বুক ধপধপ ধপধপ করতে থাকে। রিং বাজে ক্রিংক্রিংক্রিংনসেই ধড়পড়ানি অবশ্য ধীরে ধীরে কমে আসে।
ক্রিংক্রিংক্রিং করে অবিরাম রিং বেজে চলছেনকিন্তু আশ্চর্য, কেউ ফোন তুলছে না। শাহিদ ভাবে, সকালে প্রথম ফোন পেয়ে হয়তো মিমির ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল, ফোন শেষে হয়তো বাথরুমে বা অন্য কোথাও গেছে, অতএব, আরেকটু পরে করাটাই সর্বশ্রেয়।
আবার মিনিট পাঁচেক পর সে ফোন করে। কিন্তু এবারও ফোন এনগেজড। খুব খটকা লাগে শাহিদের কাছে। মিমি নিজেই কি অন্য কোথাও ফোন করছে, নাকি অন্য কেউ তার কাছে ফোন করেছে? সে রীতিমতো ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠতে থাকে, হয় বিরক্তও।
আবার মিনিট পাঁচেকের বিরতিনআবার ফোননরিং যেতে থাকে, অনেকক্ষণ ধরে রিং বাজে, কিন্তু কেউ ধরে না। শাহিদের মনে ক্ষোভ জমতে থাকে। খট করে রিসিভার নামিয়ে রাখে সে। তার সর্বাঙ্গে জ্বালা ধরে গেছে। এক মিনিটের মাথায় সে পুনরায় ফোন করেনকিন্তু বিরক্তির আর শেষ থাকে নানআবারো ফোন এনগেজড।
শাহিদ শান্ত হয়ে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করেনএমন হচ্ছে কেন। তার ধারণা যেটা হলোনরিং বাজার শব্দ পেয়ে মিমি যখন হ্যান্ডসেট তোলে ততোক্ষণে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে শাহিদও ফোন রেখে দেয়। পরের বার যখন রিং করে তখনও হয়তো মিমি কানের কাছে রিসিভার রেখে ক্র্যাডলে খটখট শব্দ করে হ্যালো হ্যালো করতে থাকে। অবশ্য এমনও হতে পারে যে হ্যান্ডসেটটা ঠিকমতো ক্র্যাডলের ওপর বসানোই হয় না।
এমন ধাঁধার মধ্যে কিছুক্ষণ থাকার পর তার মনে হলো সে খুবই উত্তেজিত অবস্থায় আছে। সে খেয়াল করে দেখলো যে ফোন একবার এনগেজড, আবার ক্লিয়ার পাওয়া যায়, ব্যাপারটা ঠিক এ রকম নয়। সে এতোই উত্তেজিত অবস্থায় ছিল যে ডায়াল করার সময় মাঝে মাঝেই ফোন নম্বর ভুল করে ফেলতো, আর তখনই ওটা এনগেজড পাওয়া যেত। রং নম্বরেও যে লাইন ক্লিয়ার পাওয়া যায়নি, হয়তো তা-ও নয়, কিন্তু সে-লাইনগুলো হয়তো অব্যবহৃত ছিল।
সুস্থ মস্তিস্কে পরপর তিনবার ডায়াল করলো শাহিদ। অবশ্য প্রতিবারই লাইন ক্লিয়ার পাওয়া গেল। কিন্তু একবারও অপর প্রান্তে কেউ রিসিভার তুললো না।
দুপুরেও দু-তিনবার সে চেষ্টা করলো, কিন্তু নো রিপ্লাই।
পাঁচটার দিকে সে রিং করলো। দুবার রিং বাজার সাথে সাথেই রিসিভার তুলে মিমি বললো, হ্যালো স্লামালাইকুম। মুহূর্তে ঝিলিক দিয়ে শাহিদের সারা মন-প্রাণে একটা আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। নিশ্চয়ই বিকালের দিকে সে বাড়ি এসেছে, সারাদিন অযথাই ফোন করে সে হয়রান হয়েছে।
মিমি আবার বলে, হ্যালোনকিন্তু স্বরটা সামান্য একটু রুক্ষ শোনায় আর তখনই তার মনে হলো এ মিমি নয়, অন্য কেউ। মিমির কণ্ঠস্বরের সাথে সামান্য মিল থাকলেও এর গলা শুস্ক মরুভূমি, রসকসহীন। বুয়াদের কণ্ঠস্বর সচরাচর এমন হয়।
বুয়া আবারো টেনে টেনে বলে, হ্যালোনহ্যালোন। শাহিদ খানিকক্ষণ চিন্তা করে কথা বলবে কি বলবে না, তারপর সে মধুর সুরে জবাব দেয়, হ্যালো স্লামালাইকুম।
বুয়া অতি বিগলিত কণ্ঠে সালামের জবাব দেয়নওয়ালাইকুম আসসালাম।
শাহিদ কী বলবে ভেবে পায় না। সে দ্বিধাগ্রস্ত ভাবে সামান্য বিরতি নেয়, তারপর জিঞ্চাসা করে, রুমেল আছে?
রুমেল? রুমেল ক্যাডা বাবা?
স্যরি, এটা কি ৭৪১৭২৩৯?
না বাবা, এটা ৭৪১৭০৯৯। আপনি রং নাম্বারে ফোন করছেন।
স্যরি খালাম্মা, ডিস্টার্ব করলাম। বলেই শাহিদ হ্যান্ডসেট নামিয়ে রাখে। তার মেজাজটা ভীষণ তিরিক্ষি হতে থাকে। মিমি ২৬ তারিখে আসার কথাটা মিথ্যে বলেনি তো? সে অবশ্য আরো দু-একদিন পরও আসতে পারে।
কিন্তু শাহিদের মাথায় দুষ্টুবুদ্ধি চাপলো, অবশ্য একটু আশাও জাগলো। সারাদিন বাসায় কেউ ছিল না, বিকেলে অন্তত বুয়া ফোন তুলেছে, নিশ্চয়ই অন্য কেউ এখন বাসায় আছে, হয়তো মিমিও।
দ্বিতীয়বার সে ফোন করলো। এক ভদ্রলোক অতিশয় ভদ্রস্বরে উচ্চারণ করলেননহ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।
শাহিদ রিসিভারের মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরে থাকে কিছুক্ষণ। ভদ্রলোক কিছুক্ষণ হ্যালো হ্যালো বলে লাইন কেটে দেন। শাহিদ আশ্চর্য হয়, এ বাসায় এর আগে কখনো কোন পুরুষ লোক টেলিফোন রিসিভ করেনি। মিমি ছাড়া অন্য কেউও নয়। আজ অন্যরকম হলো, একবার বুয়া, আরেকবার এই ভদ্রলোক। ভদ্রলোক কে হতে পারেননতাঁর দরাজ গম্ভীর কণ্ঠস্বর শুনে তাঁকে বয়স্কই মনে হচ্ছে। মিমির বাবাই হয়তো হবেন।
শাহিদ আরেকবার ফোন করলো। এবার বুয়ার কণ্ঠস্বর। সে স্লামালাইকুম বলে উত্তরের অপেক্ষায় থাকে, কিন্তু শাহিদ নির্বাক। বুয়া ঝাঁঝালো স্বরে বলে, হ্যালো, কথা কন না ক্যান? কিন্তু শাহিদ থতমত খায় এবং বিব্রতবোধ করে। টেলিফোন রেখে দিয়ে মন খারাপ করে ঝিম ধরে বসে থাকে। খামোখাই বুয়ার কাছ থেকে একটা ঝাড়ি শুনতে হলো। আগের বারের মতো সে ভদ্রভাবে সালাম দিয়ে বলতে পারতোন্স্যরি খালাম্মা, আমার টেলিফোনটা একটু ডিস্টার্ব করছে, ডায়াল করছি ৭৪১৭২৩৯-এ, কিন্তু দেখুন বার বার আপনার নম্বরেই চালে আসছে।
কিন্তু শাহিদ আজ কিছুতেই দমবে না, যা কিছু জানার বা বোঝার দরকার তা আজই বুঝে নিতে হবে, পরিস্থিতি যতো উত্তপ্ত ও তিক্তই হোক না কেন। যার সাথে কোনদিন দেখা হয়নি, যে আমার সত্যিকারের পরিচয় জানে না, ভবিষ্যতেও জানতে পারবে কিনা তা নিয়েও প্রচুর সন্দেহ আছেনতার সাথে ফোনে যতো তিক্ততাই হোক না কেন কিচ্ছু যায় আসে না।
মাগরিবের ঠিক পর পর শাহিদ আবার ফোন করলো। বুয়া এবার খুব নরম স্বরে বললো, হ্যালো, স্লামালাইকুম। কথা বলার আগে শাহিদ দ্রুত ভেবে নিয়ে স্থির করলো, বুয়াকে সে নিজের পরিচয় দিবে, ভদ্রভাবে জিঞ্চাসা করবে এটা তিশা নাকি মিমিদের বাসা, এ মেয়ের আসল পরিচয় কী, তার স্বামীর ঘর কোথায়? জবাব দিতে বিলম্ব হওয়ায় বুয়া আবার ডাকে, হ্যালোন্মুহূর্তে শাহিদের সমস্ত মনপ্রাণ পুলকিত হয়ে ওঠেনএ তো বুয়া নয়, মিমি। সে উচ্ছ্বাস কোনমতে চেপে রেখে বলে ওঠে, হ্যালো স্লামালাইকুম, ভালো আছেন?
কিন্তু মিমির কণ্ঠস্বরে এক ফোঁটা আবেগ বা উচ্ছ্বাস নেই, এতোদিন পর কথা হলে যেরূপটা শাহিদ আশা করেছিল। মিমি অন্যন্ত নীরস স্বরে বলে, আপনি কি একটু পরে ফোন করতে পারবেন?
স্যরি, শাহিদ বলে, আপনাকে বোধ হয় অসময়ে বিরক্ত করলাম। ঘুমুচ
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:৩৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×