যে শিক্ষা বুকের ভিতর সত্যের স্ফুলিংগ তৈরি করতে পারেনা, সত্য উম্মোচনে ভয় পায়। যে শিক্ষা হাজার কোটি টাকা নিমিষেই পাচার করে। যে শিক্ষা শেয়ার মার্কেট খায়, ব্রীজ খায়, ব্যাংক খায়, রাস্তা খায়, ভবন খায়, নীতি খায়, শ্রমিকের অধিকার খায়। যে শিক্ষায় কেরানীর টেবিল থেকে সচিবের অফিস পর্যন্ত সবকিছু মাকড়শার জালের মতো ঘুষ চক্রে আটকা । শিক্ষার নামে স্কুলে চলে কোটি টাকার ভর্তি বাণিজ্য । শিক্ষার কুঁড়িতেই একটি শিশু ঘুষের মাধ্যমে পিতা মাতার হাত ধরে শিক্ষালয়ে প্রবেশ করে অবৈধ জীবনের প্রথম সবক নেয়। আর যে শিশুকে কর্তৃপক্ষ ঘুষের মাধ্যমে ভর্তি করলো- সেই স্কুল কর্তৃপক্ষইতো শিশুকে জীবনের প্রথম অবৈধতার শিক্ষা দিলো। ঘুষ দিয়ে যে শিশু জীবনের প্রথম পাঠশালায় ঢুকে- সে শিশুতো বড় হয়ে জীবনশালায় ঘুষখোরই হবে। সবচেয়ে আশ্চর্য্য- এসব কিছুই আমরা দৈনন্দিন সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের মতো অতি স্বাভাবিক নিয়মের মতো মেনে নিয়েছি। সেখানে শফি হুজুর যদি বলেন- মেয়েদের স্কুল শিক্ষার দরকার নেই- তবে এতেতো এমন চিল্লাফাল্লা করারও কিছুই নাই। শফি হুজুরের এই কথা নাকি অসাংবিধানিক। তাহলে , ওপরে যা বয়ান করা হলো তার সবগুলোই কি সাংবিধানিক??
একজন মজুরের মাসিক বেতন ৮৮৭৫ টাকা - যেখানে মোটা চালের দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা। যা গত আট বছরে হয়েছে দ্বিগুন। চাল কিনতেই তো তাঁর সব টাকা শেষ। রইলো বাকি সংসারের যাবতীয় খরচ। এই শ্রমিকতো ফাইল আটিকিয়ে ঘুষও খেতে পারবেনা । তখন, সংসার চালানোর জন্য হয় তাকে ইয়াবার পাচারকারী না হয় বাধ্য হয়েই ছিনতাইকারি হতে হবে। পেটের ক্ষুধাতো বুঝবেনা- ইয়াবা কি আর ছিনতাই কি??? মেয়েরা স্কুলে যাক বা না যাক- এসব বলার পরও শফি হুজুর সরকারী বন্দোবস্তে বিশাল জায়গা জমির বরাদ্ধ পেয়েছেন এবং পাবেন। কিন্তু গতরখাটা এই শ্রমিকরা কি পাচ্ছে?? এতো অল্প টাকায় তাদের সংসার চলছে কেমন করে- এসব নিয়ে মিডিয়া কয়টা লেখা, কয়টা রিপোর্ট, কয়টা টকশো'র আয়োজন করেছে??
আর শফি হুজুররা সারা বছর ধরেই এসব বয়ান করেন। কিন্তু তা নিয়ে আলোচনা হয়না। ন্যায্য মজুরীর জন্য শত শত গার্মেন্টেসের বোন, শ্রমিকরা যখন এই মুহুর্তে রাস্তায়। তখন মিডিয়ার ইনটেনসিভলি শফি হুজুরকে নিয়ে বিশাল এই হাইপ তৈরী করার কারণ কি? মানুষকে বাদর নাচ নাচানোর মতো অসাধারণ কারিশমা রয়েছে এই দেশের মিডিয়ার । আপনারা পারেনও বটে????
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৪৮