somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে ইমরানে বৈঠক

০১ লা জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ইমরান খানের পাশে বসা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাসিনার এই ছবিটি আমি সম্মানের চোখে দেখি। শুধু তাইনা- হাসিনা, মোদী, ইমরান তিনজনে যদি একসাথে বসেন -সেটাও ইজ্জতের হবে। বরং এরকমই হওয়া উচিত। স্বাধীনতার পর ভূট্টোর হাত যখন বঙ্গবন্ধু স্পর্শ করেন-সেটাও ইজ্জতের। রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বের। দুই সতীনের নয়।

আমেরিকা জাপানে বোমা মেরেছিলো। জাপান পার্ল হারবার উড়িয়ে দিয়েছিলো। এখন প্রতি বছর আমেরিকা জাপানের মাঝে দুই লক্ষ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়।
কিন্তু যে জিনিসটা খারাপ লাগে। তা হলো ডাবল স্টাণ্ডার্ড, হিপোক্রিসি, বায়াসড জাজমেন্ট।

বেশীরভাগ পাকিস্তানীদের আমি ঘৃণা করি। কারণ- আমি ডাইরেক্ট ভুক্তভোগী। পাকিস্তানী এক ছেলের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো -আটলান্টার এক মসজিদে।
আচরণে মার্জিত, কথাবার্তায় ভদ্র, চলাফেরায় নম্র। বাড়ি ভাড়া চাইলে কোনো কিছু যাচাই বাছাই না করেই আমি তাকে বাড়ি ভাড়া দেই।
প্রথম দু মাসের ভাড়া দেয়ার পর তাকে আর পাওয়াই যায়না। মাঝে মাঝে ফোনে কথা হলেও- অনেক সময় আমি লজ্জায় চাইতেও পারিনা। এভাবে গেলো ছয়মাস।
একদিন ফোন করলাম-
আজিজ ভাই- আপনি কই?
আমিতো ভাই আটলান্টার বাইরে। আগামী সপ্তাহে ফিরবো। দুঃখিত ভাই আপনার ভাড়া দিতে দেরি হয়ে গেলো। শহরে ফিরেই দিয়ে দিবো।
ঐদিনই- আব্বা-আম্মাকে নিয়ে আমি বিকেলে গ্রোাসারি কিনতে বের হয়েছি। গ্রোসারি করে ফিরার পথে মনে করলাম- যে বাড়ীতে আজিজ থাকে সেই বাড়িটা একটু দেখে যাই। ওমা বাড়ির সামনে গিয়ে দেখি- আজিজ মিয়ার গাড়ী পার্ক করা।

মনে করলাম- হয়তোবা নিজের গাড়ি রেখে অন্য কোনোভাবে শহরের বাইরে গেছে।
নক করলাম- আজিজ মিয়া দরজা খুললো। আমাদের দেখে একটু লজ্জিত।
দু ব্যাগ আম ছিলো। আম্মা আমাদের জন্য এক ব্যাগ রেখে আজিজকে এক ব্যাগ দিলেন।

আমরা নীচে বসা। আজিজ ওপরে গিয়ে ফিরে এলো। হাতে দুটো চেক।
আজিজ খুবই নম্র ভাষায় বললো- এই তোমার গত ছয়মাসের বাকি চেক। আর এটি অগ্রিম আগামী ছয়মাসের। কারণ-আমি প্রায় সময়ই শহরের বাইরে থাকি। তোমার সাথে নিয়মিত দেখা হয়না। ফলে, আমার ঠিকমতো বাড়ী ভাড়াও দেয়া হয়না।

আমি লজ্জায় মরে গেলাম। ছিঃ।আমার মনমানসিকতা। এরকম একটা ভালো ছেলেকে নিয়ে আমি কি খারাপ ধারণাই না পোষণ করেছি।
পরদিন অফিসের ব্রেকে ব্যাংকে গিয়ে আজিজের চেক জমা দিলাম। প্রায় এক সপ্তাহ পর-চ্যাক বাউন্স হলো। আজিজের একাউন্টে কোনো টাকাই নেই। আমার কাছ থেকে ৫০ ডলার জরিমানা হলো। পাকিস্তানীদের বাটপারির এরকম নানা ঘটনার আমি সাক্ষী। অথচ, এই ছেলেটির সাথে আমার মসজিদেই পরিচয় হয়েছিলো।

কিন্তু তারপরও একচেটিয়াভাবে সব পাকিস্তানীদের গালাগালি করতে পারিনা। কারণ- শুধুমাত্র রাষ্ট্র নায়ক, সেনানায়করাই এদেশের নিরাপরাধ মানুষকে খুন করে রক্তের হোলি উৎসবে মেতে ওঠেছিলো। তাই, শাসকগোষ্টীর বিরুদ্ধে অবস্থান বৈধ । কিন্তু একচেটিয়াভাবে দেশের সব জনগোষ্ঠির বিরুদ্ধে অবস্থান-বোকামি। প্রতিটি দেশেই শোষিত আছে, শান্তিকামী মানুষ আছে। তাছাড়া, বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে শুধু রাষ্ট্র কেন কোনো মানুষই আরেক মানুষের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেনা। এটা শুধু সামাজিকতা না এটা বাস্তবতা। এটা আত্মিক না এটা আর্থিক।

সবচয়ে খারাপ লাগে যখন দেখি- মানুষের ভণ্ডামি। মানুষের ডাবল স্টান্ডার্ড।
বিশেষ করে এ ব্যাপারগুলো বিদেশে খুবই চোখে পড়ে।
নিজের চোখে দেখা- বিশাল বড় নেতারা সারাদিন বক্তৃতায়, ফেসবুকের পাতায়-পাকিস্তানকে গালাগালি করতে করতে চেতনাকে একেবারে মঙ্গলে পৌঁছে দিয়ে- বিকেলেই পাকিস্তানী মালিকানাধীন গ্যাস স্টেশন কিংবা অন্য প্রতিষ্ঠানে দিব্যি কাজ করছেন। রোগী হয়ে পাকিস্তানী ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পাকিস্তানীদেরও দেখেছি- বিশ্বাসঘাতক বাংগালী বলতে বলতে 'তুম হামারা ধোকা দিয়া'' জপ করতে করতে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানে মন উজাড় করে কাজ করছে।
বাংলাদেশী অধ্যাপকের অধীনে পিএইচডি'র থিসিস তৈরি করে-নিজের জৌলুস বাড়াচ্ছে।
এসব দেখি আর হাসি। শয়তানেরও কিন্তু একটা নীতি আছে। কিন্তু এদেরতো কোনো নীতিগ্যান নেই। এরাতো গিরগিটি। শুধুই রং বদলায়। গালাগালি করে জোশ আনা যায়। কিন্তু পেটের ক্ষুধাতো মিটানো যায়না।

ফেমাস সোসিওলজিস্ট ডার্কহেইম একটা ডার্ক সত্য কথা বলেছিলেন-"আইডিয়া আর চেতনায় পেট ভরায় না। অর্থই পেট ভরায়। অর্থের কাছে চেতনা-আইডোলজি সবকিছু ফুটা বেলুনের মতোই চুপসে যায়"।









সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৯ রাত ১০:১০
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×