somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসাহীন মৃত্যু.......

২৫ শে মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাল রাতের ঝড়ে সামনের লাউমাচাটা পড়ে গেছে । আর এমন ভাবে পড়েছে যে , দেখে মনে হচ্ছে মাটিকে সে কতদিন ধরে কাছে পায় না । তাই তো অসীম মায়াময় ভালবাসা,প্রেম একাকার হয়ে গভীর থেকে আরও গভীরতায় মাটিকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে নিবিড় থেকে নিবিড়তায় দীর্ঘ চুম্বন দিতে ব্যস্ত । ভাব টা এমন যে,"তোমাকে আমি আর ছাড়ছি না বাবা কতদিন কত যুগ পর কাছে পেয়েছি "। এ চুম্বন যেন শেষ হবে না । সকালে এমন এক র্দৃশ্য দেখে তিয়াসার মনটা কেমন যেন অজানা অচেনা শূণ্যতায় ভরে গেল । তাহলে তো বেশ ঝড় হয়েছে রাতে । সামনের বস্তির একটা ঘরের টিন উড়ে পড়েছে কিছুদূর গিয়ে । ঐতো ধান ক্ষেতের ধান গাছগুলো হেলে পড়েছে । আহারে !! কাল বিকেলেও ওগুলো দাড়িয়ে ছিল বীরদর্পে বুক ফুলিয়ে,আর আজ মুখ থুবড়ে পড়ে আছে অবাধ্য ঝড়ের কাছে পরাজয় মেনে । রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই । মোবাইলে চার্য শেষ । রান্না হয়নি এখনও । পেট টা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে । গতকাল বমিখারাপ লাগতে লাগতে শেষে বমিই করেছে ৪ বার তিয়াসা । কাল কিছুই পেটে থাকেনি। আর তাই হয়ত শরীরটা দুর্বল লাগছে । ফোনটা হাতে নিয়ে নীলয়কে কল দিল রিং হচ্ছে টুউ, টুউ, টুউ এভাবে ৯ বার ,টুউউউ টুউউউ ২ বার বেজে নো অ্যানসার । ঘুমাচ্ছে নীলয় । ঘুমাক এত সকালে কখনও ঘুম থেকে ওঠে না সে । রাতে হয়ত জেগে পড়েছে, ফেসবুকিং, মুভি অথবা গভীর রাত অবধি নতুন প্রেমিকার সাথে গল্প করেছে । হাহ্ নতুন প্রেমিকায় বটে ! নীলয় আর তিয়াসাকে ফোন করে না । এস এম এস করে না । তিয়াসার কোন খবর রাখে না,রাখার প্রয়োজন বোধ করে না,প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে । তিয়াসার জন্য এখন নীলয়ের মনে আর কোন ভালবাসা নেই । কোন দায় নেই,কর্তব্য নেই কিচ্ছুটি নেই এই মেয়েটির জন্য । নীলয়ের জীবনে আজ তিয়াসার কোন মূল্যই নেই । মূল্যহীন মেয়েটা পৃথিবীতে আছে কি নেই তা নিয়েও নীলয়ের কোন মাথাব্যাথা নেই । অবহেলার রাজ্যে বাস করছে তিয়াসা । নীলয়ের এত অবহেলা,অপমান পেয়েও তার কন্ঠস্বরটা শুনতে এতটা উদগ্রীব কেন তিয়াসা ভেবে কোন কুল কিনারা করতে পারে না । নীলয়ের বুকটা এত ভালবাসায় টইটুম্বর যে কয়েকটা প্রেমিকাকেই ভালবাসা দিতে পেরেছে,পারে আর ভবিষ্যতেও পারবে । কিন্তু তিয়াসা তো তার বুকভরা সকল ভালবাসা শুধুমাত্র নীলয়কেই ঢেলে দিয়েছে । কিছু রাখেনি ,এমনকি নিজের জন্যও নয় । তাহলে ??? হ্যা নীলয় ওকে ভালবেসেছিল এটা সত্যি । তবে ঐ ভালবাসাটা ছিল কিছু সময়ের হিসেব নীলয়ের কাছে । ওর জন্য সে কাঁদতো,হাসতো । তিযাসাকে নীলয় তার জীবনের একটা প্রাপ্তি ভাবতো । তিয়াসাই ছিল তার সকল অনুপ্রেরণার উৎস । ঐ সময়টাতে নীলয় তিয়াসাকে ভালবেসেছিল, কিন্তু কিছু ভালবাসা রেখে দিয়েছিল অন্য কারো জন্য । আজ তাইতো তিয়াসা বুঝতে পেরেছে কিছু সময়ের ভাল লাগা,ভালবাসা ছিল সে নীলয়ের কাছে । তিয়াসার জীবনে আজ ঐ সময়টা অমূল্য রতন । খূব যত্ন করে সে সময়টাকে বেধে রেখেছে । ভুলতে পারে না,চাইও না ভুলতে । কখনও পারবে না সে তার ঐ স্মৃতিময়,সুখকর,তৃপ্তির,প্রাপ্তির, ভালবাসার বণ্যায় ভেসে যাওয়া স্বর্ণসময়টাকে হারিয়ে ফেলতে । ওগুলোকে আকরেই যে তিয়াসা আজও বেঁচে আছে । সুন্দর স্মৃতিবিজাড়িত সুখজড়ানো দিনগুলো ছাড়া তার যে আর কিছুই নেই । ওগুলোয় তার বাঁচার একমাত্র অবলম্বন । তিয়াসার সকল ভালবাসাই আজ নীলয়ের কাছে মৃত । অতীতকে নীলয় ভুলে গেছে । ভুলে যাক । ভাল থাক তিয়াসার নীলয় । তিয়াসার বুক থেকে তো কখনও নীলয় নিজেকে কেড়ে নিতে পারবে না । ওখানে যে নীলয়ের বসবাস । এইভাবে নীলয়ের কাছে তিয়াসার হারিয়ে যাওয়া ভালবাসার হয়ত মৃত্যু হবে । নীলয় হত্যা করবে তার সব ভালবাসা । আর একদিন ভালবাসাহীন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবে হতভাগ্য তিয়াসা ।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×