এই বকুল ফুলের মালাকে উপলক্ষ করে কত ছড়া কবিতা সৃষ্টি হয়েছে, বালক-বালিকার প্রেম হয়েছে, কত তরুন-তরুনীর প্রণয় হয়েছে এর হিসেব কারো কাছে নেই।
শিবানীদের বাড়ি কুমার পাড়ায়, পাড়া বলতে তাদের তিন চারটা ঘরই আছে এখন বাকিরা সব ইন্ডিয়া চলে গেছে। তাদের বাড়ির সামনেই উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র এর আঙ্গিনাতেই বকুল গাছ। বিশাল বড় বকুল গাছ, বয়স কত হবে সেটা কেউ বলতে পারেনি। অনুমান! সেটাও বলতে পারবো না। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তার বাবার বন্ধু প্রায়ই আসতাম বাবার সাথে। বাবা ডাক্তারের সাথে বসে গল্প করতো আমি শিবানিদের বাড়িতে চাকতি ঘুরিয়ে মাটির হাড়ি পাতিল বানানো দেখতাম অথবা শিবানীর মালা গাথা। বড় হয়ে শিবানীর কাছ থেকে মালাও কিনেছি।
বাবা মারা গেলো, বাবার ডাক্তার বন্ধু অবসরে গেলো। আমিও গ্রাম ছেড়েছি ওদের খোজ খবর জানি না।চলার পথেও তাদের দেখিনা অন্যদেরও দেখি না মালা বেচতে।
একদিন গেলাম শিবানীদের বাড়িতে, কত বছর হবে? প্রায় দশ বছর।গিয়ে দেখি মাটির পুতুলে রং করছে মনের সমস্থ মনোযোগ দিয়ে।কেমন আছো শিবানী? আমাকে দেখে চমকে গেলো, চিনতেও মনে হয় কষ্ট হচ্ছে। ভালো মন্দ অনেক কথাই হলো। আমি কি করি, কত পড়াশুনা করেছি, বিয়ে করেছি কিনা সেটাও।
শিবানীকে জিগ্যেস করলাম বকুল গাছটা তো মরে গেলো।তবে তোমার হাতে গাথা ফুলের মালা দিয়ে যতজন তাদের প্রেমের মালা গেথেছিলো তাদের প্রেম কি আছে? নাকি তাদের প্রেমও বকুল গাছের মত মরে গেছে।এর উত্তরে সে কি বলবে কিছুই খুজে পেলো না।শুধু ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।কি করে বলবে নিজের হাতের গাথা মালা দিয়ে সঞ্জয়ের সাথে যে ভালোবাসার মালাটি গেঁথেছিলো সেটিই যে ছিড়ে গেছে...।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৮ ভোর ৪:৫০