somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোঃ খায়রুল ইসলাম অাশরাফুল
আমি সব সময়ই একটু অদ্ভুত ধরনের। কখন যে মন খারাপ হয় আর কখন যে মন ভাল হয় আমি নিজেই বুঝিনা। সবাইকে খুব সহজে বিশ্বাস করি, সবাইকে নিজের মত ভাবি। আর এ কারণে অনেক অনেক কষ্ট পাই।

বিপন্ন মানবতা অনন্য ভালোবাসা

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নাম তার ববিতা। সবাই ডাকেন পাগলী ববিতা। বয়সের ভারে ন্যুব্জ। ত্রিশ বছর ধরে এই শহরের অলি-গলিতে তার বসবাস। কষ্টের সীমাহীন যন্ত্রণা সয়ে আসছেন তিনি। রাস্তার ধারের দোকান পাটের সামনের খালি জায়গায় তিনি রাত পার করেন। শহরের কুকুরগুলো তার রাতের সাথী। যেখানে মানবতা বিপন্ন সেখানে ববিতার অনন্য ভালোবাসা এই শহরের মানুষগুলোকে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পৌষের কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে শীত নিবারণের বস্ত্র নেই তার শরীরে। ক’দিন ধরে শীতের প্রকোপ বেশি। তাই কুকুরকে নিজের পড়নের কাপড়ের এক অংশ দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করে ববিতা। বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে অন্যরা তাাড়িয়ে দিলেও ববিতার কাছে তারা পায় মাতৃ স্নেহের পরম মমতা। এলাকায় সে ববিতা পাগুল্লি হিসেবে পরিচিত। চলচিত্রের ববিতার মতো দেশব্যাপী জনপ্রিয়তা না থাকলেও এই ববিতার জনপ্রিয়তা রয়েছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে। বাবা মা’র দেওয়া নাম কি! এই ববিতা নামই বা কে দিয়েছে, তার সঠিক তথ্য কেউ জানে না। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে উপজেলার কলেজ মোড় থেকে বাসস্ট্যন্ডে তাকে দিন রাত ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। তার প্রকৃত বয়স কত, কোথা থেকে এসেছে, বাড়ি কোথায় তা সবার অজানা। ত্রিশ বছর আগে তার শারীরিক অবস্থা যেমন ছিল এখনো ঠিক তেমনি আছে। রাতের বেলায় ঘুমানোর জন্য সে বেছে নিয়েছে এনজিও নির্মাণ সংগঠনের বারান্দা।

ববিতা সবার অতি পরিচিত মুখ। দিন মুজুর, ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী এমনকি রাজনৈতিক ব্যক্তি সবাই ববিতাকে আদর করে নাম ধরে ডাকে। কখনো ডাকে সাড়া দেয় আবার কখনো দেয় না। সবার দেয়া খাবারও সে খায়না। আবার যাকে ভালো লাগে তার কাছ থেকে এটা ওটা চেয়ে খায়। খাবার হোটেলগুলোতে তার জন্য সবসময় দরজা খোলা থাকে। হোটেলগুলোতে ভিতরে কখনো গেলে কি যে আদর আপ্যায়ন তা আর বলে শেষ করা যায় না। কারো সাথে কথা তেমন একটা বলে না। আর যাও দু’একটা বলে তা বোঝা যায় না। তবে কি যেন মনে করে ক্ষণে ক্ষণে কাঁদে আবার পরক্ষণেই হাসে। সড়কের দু’ধারের দোকানদারগুলো ববিতাকে অনেক ভালোবাসে। কারো দোকানে গেলে দোকান মালিক তার চেয়ার ছেড়ে দেয় বসার জন্য। যতক্ষণ মন চায় দোকানে বসে থাকে। এর ভিতরে চলে আপ্যায়ন। চা এবং পান এ দুটোই সে বেশি ভালেবাসে। ব্যবসায়ীদের ধারণা ববিতা যেদিন দোকানে আসে তাদের বিক্রি নাকি বেড়ে যায়। তাকে সব সময় দেখেন এবং জানেন স্থানীয় এমন একজন মোহাম্মদ আলী জানান, ত্রিশ বছর ধরে সে এই এলাকাতে আছে কোনো দিন তাকে গোসল করতে দেখিনি। অথচ তার কাছে গিয়ে বসলে শরীর থেকে কোনো গন্ধ আসেনা। ববিতা কোনো দিন অসুস্থও হয় না। ত্রিশ বছর আগে তার শারীরিক অবস্থা যেমন ছিল এখনো ঠিক তেমনি আছে। কলেজ মোড় এলাকার জেমি ফার্মেসির মালিক জামাল হোসেন বলেন, তার ভিতরে মনে হয় অলৌকিক কিছু আছে। আমার দোকানের কর্মচারী একদিন চুরি করেছিল যা আমি নিজেও জানতাম না। কোথা থেকে যেন ববিতা এসে সেই কর্মচারীকে জুতা দিয়ে পিটানো শুরু করলো। পরে চুরির বিষয়টি জানতে পারি।

ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রায় ত্রিশ বছর ধরে আমি তাকে এ এলাকায় দেখে আসছি। তার ভিতরে অলৌকিক কিছু থাকতে পারে। দোকানদাররা আত্মবিশ্বস নিয়ে তাকে দোকানে বসায় এবং সেবা-যত্ন করে। আবার সবার দেওয়া খাবার সে খায় না যাকে ভালো লাগে তার কাছ থেকে চেয়ে খায়।

লেখক : মো. খায়রুল ইসলাম : Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:০৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×