শতাব্দীর সেরা সংবাদ
শতাব্দীর সেরা সংবাদটি তালাশ করতে করতে
আমার কেটে গেল আটটি বছর ।
আসলে, গবেষক মানেই ছুতো খোঁজা এক অদ্ভূত জীব।
না হলে , দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পাশে
বৃটিশ রাজপুত্রের সিংহাসন ত্যাগের ঘটনা
কী করে স্থান পায়!
লেডি ব্যাটেনের সাথে নেহেরুর সম্পর্কের প্রভাব নিয়ে এত কিসের মাতামাতি।
আমি বুঝিনে !
লাল ফৌজের সাথে জাপানের বিজয়ের সম্পর্ক না হয় পেলাম
কিন্তু রেসকোর্সের সাথে বাংলার স্বাধীনতার ?
নবাব সলিমুল্লার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক
যদি যথার্থভাবে নির্ণীত হয়
তাহলে দ্বিধাহীন বচনে বলা যায় : স্বাধীনতার সাথেও তিনি আছেন।
তাহলেতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যলের জন্ম
শতাব্দীর সেরা ঘটনা।
কিন্তু পত্রিকাওয়ালারা ঐসব দেখেনা
ওরা বার্লিন প্রাচীরের ধ্বংসস্তুপে
অক্টোবর বিপ্লবের ব্যার্থতা তালাশ করে।
ওরা প্রথম মহাযুদ্ধের শোণিত ধারায়
তুর্কী পতনের ইতিহাস লেখে - ভালো ;
কিন্তু সেরা লেখক জম্মের সূত্র খুঁজে
কোন অজুহাতে!
আমি বুঝিনে।
যে যাই বলুক-
যে সংবাদে কলাম পূরণ করুক
কিচ্ছু যায় আসেনা।
আসলে তুমি আসবে, তুমি আসবেই
এ ছিল শতাব্দীর সেরা সংবাদ।
তোমার জন্য ছেঁড়া ধুতিতে শরীর জড়িয়ে
গ্রাম্য মুজুর প্রতীক্ষায় প্রহর গুনেছে ;
ছত্রিশকোটি ভারতবাসী রক্তে সাঁতার কেটেও
তোমার আসবার সংবাদে ক্লান্তি ভুলেছে ।
তুমি আসবে এবং আসছো - এটিই ছিল
মসজিদ আর মন্দিরের নিত্য আলাপের বিষয়।
পুরোটা শতাব্দী ধরে প্রতিটি মুহূর্তে
শুধু তোমার আগমনী সংবাদে বিশ্বব্যপী
অগণিত মানুষ বিষন্ন পুলকে
পরষ্পরের পানে তাকিয়েছিল।
আমার মনে হয় এ সবই ভুল ;
জন্ম-মৃত্যু, ধ্বংস-সৃষ্টি, স্বাধীনতা আর পরাধীনতা
যুদ্ধ-শান্তি, বিচ্ছিন্ন-অবিচ্ছিন্ন সব।
আসলে, তোমার সাথে আমার জানাজানিই
শতাব্দীর সেরা ঘটনা।
তোমার সাথে সামান্য পরিচয়
আমাকে অসামান্য করে তুলেছে ;
পুরো বিশ্বব্যাপী ;
আমি দীপ্তপদে অগ্রসরমান ;
প্রতিটি মুহূর্তে
জয়-পরাজয়, ধ্বংস এবং সৃষ্টিতে
আমি পিছুটানহীন।
সেই তুমি -যে রয়েছ
আকাঙখার শিখর চূড়ায় ;
স্মরণের সর্ব্বোচ্চ শিখরে বিরাজিত হয়ে
বোধের কংকালে পরিয়েছ তুমি
রক্ত-মাংশের আভরণ
এনেছ এক অনন্য সুঠাম অবয়বে ;
আর নিজেই গিয়েছ মিশে
যেন এক দ্রবণের উপাদানে ।
সেই তুমি শতাব্দীর সেরা অর্জন,
শতাব্দীর সেরা ঘটনা,
শতাব্দীর সেরা সংবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৭