ফটোশপ লেভেল অ্যাট ইটস বেস্ট। মুভিটা দেখতে দেখতে মাঝে এক সময় মনে হইতেছিল যা দেখতেছি সবই ফটোশপ। উইন্ডোজের ওয়ালপেপার ব্যাকগ্রাউন্ডে লাগায়ে দুইজন মিলে নাচানাচি করতেছে। আর একেকটা গানে যে ডান্স স্টেপ দ্যাখাইছে!!! মাশাল্লাহ!!! খোদার কসম জিন্দেগীতে এই এই রকম ডান্স স্টেপ দ্যাখার সৌভাগ্য হয় নাই। এর আগে জলিল ভাইয়ের নিঃস্বার্থ ভালবাসা দেখছিলাম। অইটার ডান্সগুলানও এইরকম ভয়ংকর আছিল না।
এখন আসা যাক অভিনয়ের প্রসঙ্গে। বলাই বাহুল্য জলিলের অভিনয় আগের চাইতে বহুত ইম্প্রুভ হইছে। ইংরেজিটাও ডেভেলপ করছে। কিন্তু ভুলভাল ইংরেজি বলার স্বভাব এখনো যায় নাই। অবশ্য অইটাই ওর সিগ্নেচার হয়ে গেছে। ওর মুখে ভুলভাল ইংরেজি শোনার জন্যই ওর ডায়ালগ গুলা এত্ত মনোযোগ দিয়ে শুনি। অবশ্য বিদেশীরাও যে অ্যাক্সেন্টে ইংরেজি কইছে আর ভুল করছে, তার পরে আর কিইবা বলার আছে। আফটার অল, স্ক্রিপ্টটাতো জলিল ভাইয়েই লিখছে। আর বর্ষার অভিনয় হইতেছে সিরিয়াস লেভেলের জোকারি। একটা স্ক্রিপ্ট মুখস্থ করে ন্যাকা ন্যাকা কন্ঠে সেটা বললেই অভিনয় হয়ে যায়!!! হাউ কিউট!!!
অসম্ভবকে সম্ভব করাই অনন্তর কাজ-এই ব্যপারটার ব্যত্যয় তার আগের ছবিগুলোর মত এই ছবিতেও ঘটেনি। একটা গাড়ির উপর লাফাই পড়লে সামনে রাখা দুইটা গাড়িও আকাশে উড়ে এটা নিজ চক্ষে না দ্যাখলে বিশ্বাস করা যাবে না। নিউটন, গ্যালিলিও, আর্কিমিডিস যাকিছু আছে সব কিছুরেই বুড়ো আঙ্গুল দেখানো হইছে, মাশাল্লাহ।
ক্রিস্টোফার নোলান বলেছিলেন, "মানুষ যা কল্পনা করে আমি মুভিতে তা করে দেখায়।" আর জলিল ভাইয়ের মুভি দেখে আমার উপলব্ধি, "মানুষ যা কল্পনাও করতে পারে না তাই তিনি মুভিতে করে দেখান।" #রেসপেক্ট
সমালোচনার পার্ট শেষ। এখন মেইন কথায় আসা যাক। আস্তে আস্তে অনন্তর সিনেমায় ইম্প্রুভমেন্ট আসতেছে। এক সময় দেখা যাবে হাজার চেষ্টা করেও তার মুভিতে আমরা খুঁত ধরতে পারতেছিনা। যত যাই বলি না কেন, বাংলা সিনেমার 'আমি-তুমি, তুমি-আমি' টাইপের সস্তা প্রেমের ছবি থেকে বের হয়ে এসেছে সে এবং সব মুভিতেই তার দেশের জন্য কিছু করার একটা আকূলতা প্রকাশ পায়। মিঠুন চক্রবর্তী যদি ফাটাকেষ্ট টাইপ মুভি করে বাহবা পেতে পারে তাহলে অনন্তও তার চাইতে বেশি বাহবা পাওয়ার যোগ্য। তুমি সালমান খানের মুভি দেইখ্যা ফিদা হয়ে যাও আর অনন্তর মুভি দেখলে বলবা খ্যাত ,তাইলে বলতেই হবে তোমার মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন।
এদেশে উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর সিনেমার সূচনা করেছেন এই অনন্ত জলিল। সে হয়তো খুব ভাল অভিনয় করতে পারে না কিন্তু দেশের সিনেমা শিল্পে একটা বিপ্লব ঘটানোর স্বপ্নদ্রষ্টা তিনিই। তাই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এই স্বপ্নদ্রষ্টার নাম চিরকালই শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হবে।