somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সত্য প্রেম (উপন্যাস) পৃষ্টা ১০-১২

২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




অনিল… ‘নির্ভয় এবং সস্নেহে মাথায় হাত বুলালে বিষাক্ত সাপ অনড় হয়, গুনগুন করে গান গেয়ে ঘুমপাড়াতে হয় না।’
নুরি... ‘মিথ্যা বলার জন্য তিন সত্যের কিরা খেয়ে টিকটিকির লেজ কেটো না, খামোখা বিপদে পড়বে। টিকটিকির লেজ বারবার গজায়।’
অনিল... ‘স্বপ্ন, সাধনা এবং আরাধনা তিন বিষয়। তিনটা যখন এক হয় তখন সফলতা আসে। একা সফল হওয়া যায় না। যা জানার জেনেছি। শিখা জ্বালিয়ে আগুনের ষোলোকলা শেখা যায়, আগুনের সাথে খেলা যায় না।’
নুরি... ‘সই গো, বন্ধুর ঘাড়ে কুটিল ভূতের ভর পড়েছে, বারোবেলায় মির্মির করে তাকায়, ও সই বন্ধুর চোখের দিকে তাকালে আমার হাত পা কামড়ায়।’
অনিল... ‘তুই বলছিস ভূতরা আবার আমাকে জেঁতেছে?’
নুরি... ‘আমি বলতে চেয়েছিলাম মগ ডালে আম আছে, নিচ ডালে বড়ুই, চাটনি খাবো দয়া করে এক চিমটি নুন দাও।’
অনিল... ‘জিওল মাছের মত আমি আমার মনকে নয়নে জলে জিইয়ে রাখতে চাই।’
নুরি... ‘আহা, মিষ্টি হৃদয়।’
অনিল... ‘জীবনে রহস্য থাকে। স্বপ্ন চোখে এবং মনে কৌতূহল থাকা ভালো।’
নুরি... ‘নীরব খুনি হতে চাও নাকি?’
অনিল... ‘আমাকে মারধর করলেও আমি ভেরেণ্ডা ভাজা খাব না। ভেরেণ্ডা ভাজা খাওয়ার পর বাঁচা মরা সমান। পাগল হয়ে বাঁচার চাইতে মরে মাটি হওয়া বহুত উত্তম।’
নুরি... ‘মন এবং মণ দুইটা শব্দ। এক মন নাকি এক মণ তুলার চেয়ে ভার।’
অনিল... ‘কোঁড়ার বাড়ি সহ্য করতে পারলেও মূঢ়া নারীর ছায়ায় পাড়া মেরে জোয়ানরা বিপাকে পড়ে।’
নুরি... ‘পান্তাভাতের জলে যারা মদমত্ত হয় তাদের জন্য বালুশাই জীবনীশক্তিবর্ধক খাবার।’
অনিল... ‘কোনোএক কালে কবি হতে চেয়েছিলাম, চিন্তাশক্তি ছিল প্রবল। খুলাকাশের নিচে বসে ছবি আঁকতাম, সৃজনশীল মনে ছিল শৈল্পিকশক্তি। কবিতায় মনের কথা লুকিয়ে থাকে এবং সত্য কবি হতে হলে সৃজনশীল এবং চিন্তাশীল হতে হয়। বয়সের ভারে ভাবুক হতে পারিনি, বুড়োটে হচ্ছি।’
নুরি... ‘সুন্দর ভাব প্রকাশ। গম্ভীর ভাবে বেদনার গভীরতা বিশ্লেষিত হয়েছে। কেউ কেউ কষ্টোপভোগ করে, তুমি হয়তো তাদের একজন।’
অনিল... ‘তিন সত্য করে বলছি, অধমকে উত্তম উপদেশ করলে সত্যি উপকৃত হব।’
নুরি... ‘উপদেষ্টার ভালোবাসা মাপার জন্য কুনিকা কিনতে হবে। আদিষ্ট হয়েছি উপদিষ্ট হওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ। তুমি নিশ্চয় জানো, যার যা প্রাপ্য তাকে তা না দিলে পাপ হয়।’
অনিল... ‘অন্তর অন্তর চিন্তা করে জেনেছি, দ্যোতনা শব্দ ভাবের দ্যোতক এবং নিরন্তর চিন্তার প্রভাব অন্তরে পড়ে মতান্তর হয়। অনেক চিন্তা সাধনায় জেনেছি অক্ষর হলো চিন্তার খোরাক এবং শব্দ হল ভাবের বাহক।’
নুরি... ‘ভালোবাসার জনকে গোলাপের পাপড়িতে বসিয়ে আমি কাঁটায় বসি। দোয়া করি স্বর্গ হোক তোমার আঙিনা।’
অনিল... ‘‘আল্লাহ আমাদের একমাত্র গন্তব্য এবং আল্লাহকে খুশি করাই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। এই সত্য মনেপ্রাণে বিশ্বাস করলে দুষ্টু মন দুরস্ত হয় এবং আত্মা হয় প্রশান্ত। একে অন্যের জন্য দোয়া করলে নিশ্চয় সত্যের পথে পথিক হব এবং আমাদের গন্তব্য হবে জান্নাতুল ফেরদাউস।’
নুরি… ‘আমার জন্য দোয়া করবে। আমি তোমার স্বর্গসঙ্গিনী হতে চাই।’
অনিল... ‘যাকে যত চাওয়া হয় সে ততো কাম্য হয় এবং যে কামনা করে তার মনে লোভ থাকে না।’
নুরি... ‘সত্য প্রেমীকরা পাওয়ার চিন্তা করে না। ভালোবাসা সত্য হলে ভালোবাসা উড়ে উরে আসে।’
অনিল... ‘ভোরে পাখি উড়ে যায় ফিরে আসলে দিনের হয় অন্ত। ফেরতা ঘোরে ফিরে আসে, বারোমাস পরে ফিরে বসন্ত।’
নুরি... ‘অবশেষে বাক্য এবং শব্দবিন্যাসে বিপর্যয় ঘটেছে, ভাবার্থেও ঝামেলা আছে।’
অনিল... ‘বুঝেছি, দোকলার কারণ একলা শালিকের আহাল হয়েছে, চিন্তার কারণ নেই সময়মত সব ঠিকঠাক হবে।’
নুরি... ‘কাকাতাড়ুয়া ভাবে, ফুরসত পেলে ভাবি ভাবীকে বগলদাবা করে ভাবের আকাশে উড়াবে।’
অনিল... ‘ভালোবাসায় লাভ লোভ নেই। অকাতরে ভালোবাসতে পারলে প্রেমীক সফল হয়।’
নুরি... ‘কৃপণের সাথে অনিথিনীরা দূরত্ব বজায় রাখে।’
অনিল... ‘সত্য তিক্ত হলেও মানতে হয়, যেমন পচা ভাতের পানি মাতালরা মাত্রাধিক পছন্দ করে।’
নুরি... ‘মনে রাখতে হবে গ্রাহক এবং পাঠককে অপেক্ষা করালে ক্ষতি হয়। অন্য দোকানে চলে যায়।’
‘মুখ বুজে এখন তুই দৌড়ে বাড়ি যা।’ বলে অনিল দৌড়াতে শুরু করে। জনমানবহীন রাস্তা, শা শা বেগে বাতাস সঞ্চালিত হচ্ছিল। শুকনো আগাছা এবং দূর্বার বলয় ঘুরে উড়ে বাতাসের দিশায় যাচ্ছিল। ভিতুরা মনের চোখে শঙ্কিল সুন্দরীর গঠন-গড়ন দেখছিল। দোকানপাট বন্ধ। চায়ের দোকানের কর্মচারী জানালার ফাঁক দিয়ে কিছু দেখছিল দেখে মহাজন দাঁত কটমট কর বলল, ‘জানালার পাশ থেকে সরে আয়।’
কমর্চারী দেয়ালে হেলান দিয়ে সরে দাঁড়ায়। মস্তান যুবকরা দৌড়ে লোকায়। কেউ ছাদে, কেউ আম গাছে উঠে পাতার আড়ালে লোকাবার সময় পাকা আম দেখে লোভ সামলাতে না পেরে খেতে শুরু করে। চৌরাস্তার মোড়ে নুরি যখন মত বদলায় অনিল তখন অদ্ভুতদর্শন লোকের মুখোমুখি হয়। লোক পাশ কেটে চলে যেতে চায়। তার হাতে জাদুরবাঁশি কি না জানার জন্য ডেকে অনিল বলল, ‘এই যে ভায়া! একটু দাঁড়াবেন?’
লোক দাঁড়ালে পাশে যেয়ে অনিল বলল, ‘হাতের ওটা কী, ঝাঁটা সোঁটা?’
‘বাঁশের কোঁড়া।’
‘গায়ের জোরে ফুঁ দিয়ে বাজাতে পারেন?’
‘চাইলে পারব।’
‘এখন বাজালে সর্বনাশ হবে। পাশের বাড়ির নুরি আশেপাশে আছে। বাঁশির সুর শুনলে উদাসিনীর মত দৌড়ে এসে ঝগড়া করবে।’
‘জোয়ান কালে সুর এবং ছন্দের সাধনা করতে চেয়েছিলাম। সুরের সাথে বনিবনা হয়নি। সুর সাধন করতে হলে ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। কথায় সুর থাকে, সুর থাকে বাতাসে। সাধনা সাধিত হলে সাধক সিদ্ধ হয়।’
‘বাঁশ বাগানে বসে বন্ধু বাজায় বেসুরো বাঁশি, গানের সুরে উদাসিনী মন ভেসেছে বাতাসে।’
‘আমি নিশ্চয় উদ্ভ্রান্ত হয়ে দিগ্ভ্রান্ত হয়েছি?’
‘শুনেছিলাম উদ্ভ্রান্তরা কখনো দিগ্ভ্রান্ত হয় না।’
‘আর কিচ্ছু বলার নেই রে ভাই।’
‘লাঠি নাচিয়ে লাঠিয়ালি না লাঠ্যৌষধি করেন?’
‘লাটের সাথে লাঠালাঠি করলে মাথা ফাটে।’
‘গূঢ়তত্ত্বের গূঢ়ার্থ এবং গূঢ়ৈষণার রহস্য জেনে গোলকধাঁধার সূত্র এবং সূত্রপাত আন্দাজ করতে পারলেও দৌড়ে বেরোতে পারছেন না। গুরু গো! ডর লাগে। ধর্মের ষাড়ে কোরবানি আদায় হয় না।’

প্রথম প্রকোশ ২০/১২/২০১৭
Copyright © 2017 by Mohammed abdulhaque
ISBN-13: 978-1982087326
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৫৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×