আমরা মহানন্দে, বিদেশি শব্দ ব্যবহার করে সগর্বে বলি, আমি মুক্তমনা এবং চলিত ভাষায় কথা বলি, সহজভাবে ভাবপ্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
বাস্তবে কি তা?
নিচে তিনটা শব্দ দিলাম, মনোযোগ দিয়ে পড়লে বিষয় আপসে বিশ্লেষিত হবে।
মস্তিষ্ক [ mastiṣka ] বি. 1 মাথার খুলির নীচে যে নরম পদার্থ থাকে, মগ়জ, ঘিলু; 2 (গৌণ অর্থে) বুদ্ধি, বোধশক্তি। [সং. মস্ + তি = মস্তি +মুষ্ক্ + অ]।
মস্যাধার [ masyādhāra ] বি. কালি রাখার পাত্র, দোয়াত [সং. মসি + আধার]।
মহ-কুমা [ maha-kumā ] বি. কয়েকটি থানার সমষ্টি, জেলা যে প্রশাসনিক অংশে বিভক্ত [আ. মহকুমা]।
এখন বলি আমার দুঃখের কথা...
আমার লেখা পড়ে অনেকে অনেক জাতের মন্তব্য করে। কেউ বলে বাংলার ধারে পাশে নেই। কেউ বলে অত্যন্ত অদ্ভুত ভাষা। কেউ বলে তৎসম, তদ্ভব এবং অর্ধতৎসম এসব এখন বর্জনীয়।
তৎসম (সংস্কৃত উচ্চারণ: [tɐtsɐmɐ]; অর্থ: "তার সমান") আধুনিক বাংলা, মারাঠি, ওড়িয়া, হিন্দি, গুজরাটি ও সিংহলীর মতো ইন্দো-আর্য ভাষায় এবং মালায়ালম, কন্নড, তেলুগু ও তামিলের মতো দ্রাবিড় ভাষাসমূহে সংস্কৃত ভাষা থেকে ঋণকৃত শব্দসমূহকে বোঝায়।
তদ্ভব ও অর্ধতৎসম শব্দের পার্থক্য
তদ্ভব শব্দের জন্ম হয়েছে বিবর্তনের পথ ধরে, অপরদিকে অর্ধতৎসম শব্দ বিবর্তনের ফসল নয়। সংস্কৃত শব্দ সরাসরি বাংলা ভাষায় ঢুকেছে, কিন্তু উচ্চারণ বিকৃত হয়েছে। তদ্ভব ও সংস্কৃত শব্দের মাঝে এক বা একাধিক বিবর্তনের স্তর পাওয়া যাবে, যেমন: হস্ত > হত্থ > হাথ > হাত।
অবর্জনীয়, অবর্জ্য [ abarjanīẏa, abarjya ] বিণ. বর্জন বা পরিত্যাগ করা যায় না বা করা উচিত নয় এমন, অপরিত্যাজ্য, অপরিহার্য (অবর্জনীয় প্রথা)। [সং. ন + বর্জনীয়, বর্জ্য]।
অপ-শব্দ [ apa-śabda ] বি. 1 অপভ্রংশ; বিকৃত শব্দ; 2 ব্যাকরণদুষ্ট শব্দ; 3 অশ্লীল শব্দ। [সং. অপ (=অপকৃষ্ট) + শব্দ]।
বাংলা সংস্কৃতের সাথে সম্পৃক্ত এবং সংস্কৃত শব্দ অবর্জ্য। যে জানে না তা তার ব্যক্তিগত সমস্যা। শব্দের অর্থ জানার জন্য অভিধান এবং শব্দকোষ আছে। ভাষাকে বুঝার জন্য ব্যাকরণ আছে।
এখন আমার প্রশ্ন হলো, যে ভাষার জন্য জান মান দেওয়া হয়েছিল সে ভাষা কেন এত অবহেলিত হলো?
© Mohammed Abdulhaque
author and publisher
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:৫৪