somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাঁতারে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

১০ ই জুলাই, ২০১১ বিকাল ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা: বাংলাদেশ আনসারের সাঁতার কোচ এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন আনসারের উদীয়মান একজন মহিলা সাঁতারু। ২০১১ সালের জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় ৯টি স্বর্ণপদক জয়ী ওই সাঁতারু এমদাদুলের বিরুদ্ধে আনসার ও ভিডিপি উপ-মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয় ২১ জুন চট্টগ্রামের বিএমএ তে সাঁতার প্রশিক্ষণের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার আগে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেন কোচ এমদাদুল। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আনসার থেকে চাকরিচ্যুত করারও হুমকি দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রোববার মেয়েটির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন,“আমি যৌন নিপীড়নের শিকার। কোচ এমদাদুল আমাকে প্রস্তাব করেন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন না করলে বিএমএতে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়া হবে না। উনার কু-প্রস্তাবের প্রতিবাদ করলে চাকরি থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দেন। আমার অফিস আনসারে লিখিত অভিযোগ করেছি। চরিত্রহীন কোচ আজ আমাকে প্রস্তাব করেছে ভবিষ্যতে অন্য মেয়েকেও কুপ্রস্তাব করবে। মেয়েরা যাতে শারীরিক ভাবে অপমানিত না হয় সেজন্য আমি লিখিত দিয়েছি।”

এমদাদুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন,“আমি অনেক মেয়েকে সাঁতারু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমার বিরুদ্ধে কেউ খারাপ কথা বলতে পারেনি। আসলে আমার ভাতিজি মমতাজ শিরিনকে ভাটিয়ারিতে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করায় সে (নাম বলেছেন) আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। শিরিন অনেক সিনিয়র সাঁতারু সেজন্য তাকে পাঠানো হয়েছে। ভাটিয়ারিতে গেলে মাসে ১০ হাজার করে পাঁচ মাসে ৫০ হাজার টাকা পেতো সে। সেটা পাচ্ছে না বলে যৌন হয়রানির অভিযোগ দিয়ে আমার ক্ষতি করতে চায়। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে আমি তাকে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছি তাহলে যে শাস্তি দেবে আমি তা মাথা পেতে নেবো। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সিনিয়র কোচ, কর্মকর্তা ও অন্য মেয়ে সাঁতারুদের কাছে খোঁজ নিলেই সত্য মিথ্যার প্রমাণ পাওয়া যাবে।”

এদিকে আনসারের ক্রীড়া কর্মকর্তা এসএম আলম যৌন নিপীড়িত মেয়ের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান,“লিখিত অভিযোগের সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে আনসার থেকে। ঘটনার সত্যমিথ্যার প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কোন মন্তব্য করা যাবে না। তবে আমি প্রাথমিক ভাবে দু’জনের সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়েটি অভিযোগ করছে, ছেলেটি অস্বীকার করছে। এমদাদুল অনেক বছর ধরে কাজ করছে। নামাজ কালাম পড়ে। দাঁড়ি রেখেছে। আগে কখনো এমন অভিযোগ শোনা যায়নি। মেয়েটিও আমাদের সাঁতারু। তার ভালোমন্দ দেখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করি।”

কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসছে। অভিযুক্ত কোচের বিরুদ্ধে আগেও যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে এমদাদুলের লালসার শিকার হওয়ায় আনসারের প্রয়াত সাঁতারু আরিফা খাতুন আত্মহননের পথ বেছে নেন। ২০১১ সালের ৩০ জানুয়ারি আত্মহত্যা করেন আরিফা। এমদাদুলের ভাইয়ের মেয়ে জামাই আনসারের জুনিয়র সাঁতার কোচ কামাল জানিয়েছেন,“এমদাদুলের লালশার শিকারে পরিণত হলে একপর্যায় আরিফার পেটে বাচ্চা এসে যায়। উপায়ান্তর না দেখে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় মেয়েটির গর্ভপাত ঘটানোর।”

আরিফার পরিবারের সঙ্গে বাংলানিউজের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি শরিফ বিশ্বাস যোগাযোগ করলে এমদাদুলের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই বলে জানিয়েছে। এদিকে কুষ্টিয়ার আমলার সাঁতারুদের অভিভাবক হিসেবে পরিচিত একজন সাঁতার কোচ আরিফার আত্মহনন এবং যৌন হয়রানির বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছেন এমন কথাও বলছেন আমলার সাঁতার কর্মকর্তারা। আরিফার পরিবারকে চাপের মুখে রেখে মামলা করতে দেওয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বর্ষিয়ান সাঁতার কোচ বলেন,“আমি দেখেছি আরিফার পরিবারকে শেষ করে ফেলতো। সেজন্য বুঝিয়ে পরিবারকে শান্ত করেছি। এমদাদুলকে বাঁচাতে নয়। আরিফার পরিবারকে বাঁচানোই ছিলো আমার লক্ষ্য।”

তবে গোপনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় আমলায় এমদাদুল হকের পরিবারের প্রভাব খুব বেশি। প্রভাব খাটিয়ে তিনি যা খুশি তাই করতে পারেন। যদিও এমদাদুল হকের দাবি,“সামাজিক গোত্রের রেশারেশিতে আমাকে নানা ভাবে হয়রানির চেষ্টা করা হচ্ছে। আমার ভাইয়ের মেয়ে জামাই কামাল তো পরিবারচ্যুত। সে তো আমার বিরুদ্ধে বলবেই। আরিফার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক ছিলো না। ঢাকা থেকে নারীবাদিরা এসে অনেক চেষ্টা করেও কিছু বার করতে পারেনি। কোন কিছু খুঁজে পায়নি। এখন যে অভিযোগ উঠেছে তাও ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হবে।”
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×