আর্জেন্টিনা
আমার এক ভাই ছিল
জুলিও কোরতাজার
আমার এক ভাই ছিল
আমরা কেউ কাউকে দেখিনি কখনো
কিন্তু এটা কোনো বিষয়ই নয়...
আমার এক ভাই ছিল
আমি যখন ঘুমিয়ে ছিলাম
পর্বতমালা অতিক্রম করে সে চলে
গেছে বহুদূর।
আমি তাকে খুব ভালোবাসতাম
আমার মতো করে
অবারিত জলের মতো তার
কণ্ঠস্বর আমি শুনেছি
কখনো কখনো তার ছায়ার পাশ দিয়ে
হেঁটে গেছি সন্তর্পণে
আমরা কেউ কাউকে দেখিনি কখনো
কিন্তু এটা কোনো বিষয়ই নয়...
আমি যখন ঘুমিয়ে ছিলাম
আমার পাশ দিয়ে সে হেঁটে গেছে
আমার ভাইটা আমাকে দেখিয়েছিল
রাতের আকাশে তার সবচেয়ে
প্রিয় জ্বলজ্বলে তারাটিকে।
কিউবা
চে
মিগুয়েল বারনেট
চে, এ সবকিছুই তোমার চেনা
দীর্ঘ পর্বতমালার খানাখন্দ এবং কোনাকাঞ্চি
ঠান্ডা ঘাসের মধ্যে বসে হাঁপানো
বক্তৃতার মঞ্চ,
রাতের জোয়ার-ভাটা
এমনকি কীভাবে ফল জন্মায়
তার বিশদ বৃত্তান্ত।
গৃহপালিত ষাঁড়ের বিদ্রোহী হয়ে ওঠা।
আমি কোনো দিন তোমার হাতে বন্দুকের বদলে কলম তুলে দিইনি
তবু তুমি এক মহান কবি।
১৯৬৫
ইংল্যান্ড
চের জন্য কবিতা
ক্রিস্টোফার লগ
ডিসেম্বর মাস। বরফে ঢাকা
গাড়ির সামনের কাচে
পাখিরা এসে ডানা ঝাপটাল।
যেখানে আমি লিখে রেখেছিলাম
‘চে, যুগ যুগ জিয়ো’।
১৯৬৮
নিকারাগুয়া
চে গুয়েভারা
জর্জ এদুয়ার্দ এরেলানো
তোমাকে দেখেছিলাম নিকারাগুয়ায়, রিভাসে
নোংরা জামাকাপড়ে, রোগাপটকা
মুখভর্তি দাড়িগোঁফ।
অন্য ভ্রমণসঙ্গীদের সাথে গাইছিলে ট্যাঙ্গো গান।
তুমি এসেছিলে আন্দিজ পর্বতমালা থেকে
তুমি এসেছিলে তোমার ক্যারিবিয়ান
সমুদ্র থেকে
ঠান্ডা লাগিয়ে এবং খুবই ক্লান্ত হয়ে।
আমরা, মানে ছেলেছোকরারা
জানালা দিয়ে তোমাকে দেখেছিলাম
মুরগির মাংস দিয়ে তুমি ভাত খাচ্ছিলে
তারপর তুমি চলে গেলে।
তোমার সম্পর্কে আমরা কিছুই জানলাম না
যত দিন না তুমি জ্বলে উঠলে, চে গুয়েভারা।
১৯৭২
যুক্তরাষ্ট্র
চে গুয়েভারা
জন হেইনেস
আমার ভেতরের এখানে সেখানে,
সম্ভবত বাম বাহুর নিচে
একটি দেশ আছে, তার নাম চে গুয়েভারা।
অক্টোবরের কোনো একদিন আমি তাকে
আবিষ্কার করেছি।
যখন আমি নিক্ষেপিত হচ্ছিলাম
একটি গুহার ভেতর
আমি তখন হঠাৎ করেই আমার বুক
মেলে ধরেছিলাম।
আমি আমাকে দেখলাম
একটি পর্বতারোহণ করছি খুব খাড়া এবং রক্তমাখা পিচ্ছিল পথে।
সংবাদপত্রের ভূতেরা আমাকে
তখন ভাসিয়েছিল
পাণ্ডুর রঙের ঘুড়ির মতো।
আমি যখন থামলাম
চেয়ে দেখি, চূড়া থেকে অনেক ওপরে।
বুঝলাম, আমার জীবনে ঘটে যাওয়া
অনেক ভুলের মতো
আরও কিছু ভুল হয়ে গেছে।
গোপনে ক্ষতস্থান বহন করে আমি পাহাড় থেকে নিচে নেমে এলাম।
আমি আসলে কোন অসুখে ভুগছি,
তা আমি এখনো জানি না।
আমার নিজস্ব অন্ধকারে চলছে
এখন সাময়িক যুদ্ধবিরতি
অথবা
আমার হূদয়ের লালে চলছে কিছু
অন্ধকারের পরাজয়।
১৯৬৮
অনুবাদ করেছেন পারভেজ চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১১ রাত ১:৩৮