somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার লেখার আনন্দ

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কয়েকদিন আগে মনিরা সুলতানা আপুর আমার কাছে চমৎকার একটা কবিতা পাঠের অনুভূতি অমরাবতী সম আনন্দের! লেখাটি পড়েছিলাম । আপুর লেখার মুল বিষয় ছিল কবিতা পড়ার আনন্দ । আমি সহ আমাদের আরও অনেক সহব্লগার সেখানে তাদের মনোভাব প্রকাশ করেছেন ।
সেই পোষ্টে মন্তব্য করতে গিয়ে আর্কিওপটেরিক্স ভাইয়া তো পুরো এক কবিতাই লিখে ফেলেছেন ও পোস্ট করেছেন :|| আমার কাছে কবিতা
মনিরা আপু তার পোস্টের প্রতিমন্তব্যে আমাকে আমার লেখার আনন্দ নিয়ে লিখতে বলেছিলেন । লিখতে অনেক ভালোলাগে, আনন্দ লাগে তবে সেই অনুভূতি নিয়েও যে কিছু লেখা যায় তা তো মাথায়ই আসেনি । কিন্তু আপুর কথার সুত্র ধরে আজকে লিখেই ফেললাম আমার লেখার আনন্দ !:#P

কবিতা সহ গল্প, উপন্যাস, ফিচার যে কোন কিছু পড়াকে আমরা মনের খোরাক হিসেবে নিতে পারি । সাধারন ও সহজ কথায় বলতে পারি ভালো লাগে তাই পড়ি । তবে ভালোলাগা ছাড়াও কখনো আমরা শেখার জন্য জানার জন্যও পড়ি ।

কিন্তু আমরা কেন লিখি ? আমাদের কার কাছে লেখার আনন্দ কেমন, কতটুকু ? এখানে সবার ক্ষেত্রে যে কমন একটা বিষয় থাকবে সেটা হচ্ছে ভালোলাগা । যে কোন কাজ করার সময় যদি সেই বিষয়টি আমাদের ভালোলাগে, আমরা তাকে ভালোবাসি তখন কিন্তু সেই কাজের মান বা ফল অনেক বেশী ভালো হবে । আর যখন সেটা ভালো লাগবেনা তখন কাজটি হবে কোন রকম দায়সারা গোছের ।

কিন্তু লেখালেখি এমন একটি জিনিস সেটাকে আপনার ভালো লাগতেই হবে , ভালো বাসতেই হবে তা না হলে লেখা দায়সারা গোছের তো দূরের কথা লেখা আসবেই না ভেতর থেকে, অন্তত আমার ক্ষেত্রে না । পড়া কিন্তু আমাদের ভালো না লাগলেও কখনো কখনো পড়তে হয়, যেমন স্কুলের পড়ার কথাই যদি বলি কিংবা যখন আমার মতো আবোল তাবোল গোছের কোন লেখিকা তার কোন লেখা নিয়ে এলো তখন কিন্তু আপনি ভালো মানুষ হলে তার মন রক্ষার জন্য হলেও সেটা পড়বেন :P

যাই হোক, এবার আসি আমার লেখার আনন্দ নিয়ে ।

আমি প্রথম কবিতা লিখি আজ থেকে অনেক বছর আগে যখন এক কিশোরীর মনে সবে মাত্র এক কল্পনার রাজকুমারকে নিয়ে স্বপ্ন গুলো বাসা বাঁধতে শুরু করেছিল । তখন দু চারটি লেখা লিখে আর লিখিনি এবং সেই লেখাগুলো কাউকে দেখাইওনি ।
তখনকার সময়ে লেখা আমার কিশোর বেলার ভাবনায় তুমি
তারপর আরও অনেক বছর পর যখন আমার জীবনে কল্পনার সেই রাজকুমার বাস্তবে আসে এবং একবার হারিয়ে ফেলে তাকে আবার ফিরে পাই তখন তাকে আবার ফিরে পাওয়া নিয়ে লেখা আমার প্রথম পাঁচটি লাইন

বহুদিন ধরে বৃষ্টির দেখা না পেয়ে
মনের জমিন যখন ফেটে চৌচির
হঠাৎ কোন বিকেলে
মৃতপ্রায় এ মনকে জীবন ফিরিয়ে দিতে
এক পশলা বৃষ্টি যেন তুমি !

তারপর থেকে এখন পর্যন্ত যত কবিতা লিখেছি, লিখছি এবং লিখবো সব তাকে নিয়ে । আমার যখন যা মনে আসে আমি তাই নিয়েই লিখি তা সে প্রেম, ভালোবাসা, বিরহ যাই হোক সব তাকে নিয়েই । ব্লগে সবাই নিজের লেখা উৎসর্গ করে কিন্তু আমি এখনও কাউকে কোন লেখা উৎসর্গ করিনি এবং করবোও না কারন আমার সব কবিতা সব লেখা আমিযে মনে মনে তাকেই উৎসর্গ করে রেখেছি যে আমাকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে, কবিতা লিখতে শিখিয়েছে, লিখতে শিখিয়েছে ।

তাই আমার কাছে কবিতা মানেই সে, আর কবিতা লেখার আনন্দ মানে তাকে ভালোবাসার আনন্দ ।

যখন তাকে নিয়ে কবিতা লিখি তখন আমার মনের মধ্যে এমন অনুভূতি হয় যেন আমি আমার হৃদয় দিয়ে তাকে জড়িয়ে আছি । যখন লেখার সময় এক একটি শব্দ নিয়ে ভাবাভাবি করি তখন মনে হয় যেন আমি তার পাশে বসেই তার সাথে কথা বলছি । আমার যখন মন খারাপ থাকে আমি কবিতা লিখি, তাকে মিস করলে লিখি, তার জন্য মনে প্রেম জাগলে লিখি, আনন্দ অনুভূত হলে লিখি, অভিমান হলে লিখি, রাগ হলে লিখি, তাই সে যেখানেই থাকুক সবসময়ই সে আছে আমার কাছে এমনটি অনুভব হয় আমার মনে শুধুমাত্র এই কবিতার জন্যই। আর লিখতে লিখতে বিষয়টি এখন এমন হয়ে গিয়েছে যে তাকে নিয়ে কোন ভাবনা হলেই তা লিখতে হবে ।

আমার কাছে মনের মতো একটি কবিতা মানে হৃদয়ের সমস্ত আবেগ অনুভূতি দিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে তাকে ভালোবাসার আনন্দ । তাকে নিয়ে একটি কবিতা মানে আমার ভালোবাসার হৃদয় সমুদ্র থেকে এক ফোঁটা ভালোবাসা ।

আমি ভালোবাসি তাই লিখি, আমার লিখতে ভালোলাগে তাই লিখি । তাকে ভালোবাসি তাই ভালোবাসা ও বিরহের কবিতা লিখি, আর এসব ছাড়াও বাকী যা কিছু লিখি সেগুলোও কিন্তু ভালোলাগা ও ভালোবাসা থেকেই লিখি । সেটি হচ্ছে সামুকে এবং সামুতে আমার সহব্লগারদের প্রতি ভালোবাসা ।
কখনো ভাবিনি আমার নিজের মনের এই অনুভূতি নিয়ে লেখা কবিতা গুলো কেউ পড়বে, কেমন লাগলো জানাবে । মাঝে শুধুমাত্র দু একটি কবিতা ফেসবুকে পোস্ট করেছি । তবে ফেসবুক আমার ভালো লাগেনা এবং চালাইও না ফেসবুক । সবচেয়ে বড় কথা আমি ব্যক্তিগত জীবনে আমার আসে পাশের মানুষের সাথে আমার আবেগ অনুভূতি নিয়ে কথা বলিনা, বলা পছন্দ করিনা । ব্লগে আসা একদম হঠাৎ করে । কখনো ভাবিনি ব্লগে লিখবো আমি । তাকে যেমন প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছিলাম তেমন সামুকেও প্রথম দেখেই ভালোবেসে ফেলেছি । এখন এই দুই ভালোবাসা নিয়েই সামুতে আমার পথচলা ।

আর ব্লগে কেউ আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনেনা আমার ব্যক্তিজীবনের কেউও কথার ফুলঝুরি কে চিনেনা তাই আমার ব্লগ ভালো লাগে ।আমার বাস্তব একরকম আর লেখা আমার কল্পনা । বাস্তবের চাইতে কল্পনাই বেশী সুন্দর, যাকে নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে নেওয়া যায় তাই কল্পনাকেই আমি বেশী ভালোবাসি ।

নিজের লেখার আনন্দ নিয়ে অনেক কথা বলে আপনাদের অনেক সময় নিয়ে নিলাম :P আপনারা চাইলে আপনাদের নিজেদের লেখার আনন্দ আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন । খুশী হবো আমার সহব্লগারদের লেখার আনন্দ অনুভূতি সম্পর্কে জানতে পারলে ।

লেখার আনন্দ নিয়ে লিখতে গিয়ে আসলেই কি লিখলাম ঠিক বুঝতে পারছিনা কারন আমি বরাবরই অনুভূতি প্রকাশে ব্যর্থ ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:০১
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×