somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তরুণ, তারুণ্য এবং আমরা

২৫ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পড়ালেখাটা আক্ষরিক এবং বাস্তবিক দুই অর্থেই চুলায় গেছে। পড়ালেখা মানুষ কেন করে? ছোট বেলায় এটার উত্তরে জানতাম যে, মানুষের মত মানুষ হবার জন্য। আবার এমন লাইনও পড়েছিলাম "পড়ালেখা করে যে গাড়ি ঘোড়ায় চড়ে সে।" এখন গাড়িতে চড়তে আর পড়ালেখাটা দরকার হয় না। কেউ মানুষের মত মানুষ হওয়ার জন্যও পড়ালেখা করে না। এখন অল্প কিছু মানুষ জানার জন্য পড়ে। আর বাকিরা পড়ে রেজাল্ট, চাকুরীর জন্য। অনেকেই আবার ভালো বিবাহের জন্য পড়ালেখা করে থাকে।

থ্রি ইডিয়ট মুভিটা দেখে অনেক এর প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু প্রয়োগ করার ইচ্ছে কিংবা কারো পক্ষে প্রয়োগ করা সম্ভব হয়েছে কিনা জানিনা।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটা খুবই অদ্ভুত রকমের। এই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রথমেই একজন গরীব সন্তান কে বোঝায় কৃষিকাজ, চাষাবাদ এইসব হলো নিরক্ষর দের কাজ। তাই শিক্ষিত কৃষক খুঁজে পাওয়া মুস্কিল। আর ক্লাস ৮-৯ অতিক্রম করার পরে পড়ালেখাটা বুঝিয়ে দেয় যে, পড়ালেখা হলো কেরানী হবার জন্য। যত ভালো মুখস্থ করতে পারবে তত ভালো কেরানী হবে।

আর এই কেরানী হবার চিন্তাটা নষ্ট করে দেয় সব ক্রিয়েটিভিটি। সবাই চাকুরী খুঁজে হন্য হয়ে।

অনেকে বিশ্বের নানান দেশের নানান তরুণদের উদাহরণ দেয়। আমাদের দেশেরও অনেকেরও উদাহরণ দেয়। এরা এই বয়সে এই করছে ওই বয়সে এই করছে। প্রয়োজন শুধু আইডিয়ার, প্রয়োজন চেষ্টার। তাদের কে একটা কথা বলার আছে। তা হলো যখন কোন তরুণ আপনাদের কাছে আইডিয়া নিয়ে যায় এবং বলেযে ইনভেস্টমেন্ট দরকার; তখন সে ইনভেস্টমেন্ট আপনারা করেন কি? আমার তো মনে হয় না বিল গেটস, ল্যারি পেইজ কিংবা মার্ক জুকার্সবার্গ আমাদের দেশে জন্মালে এত কিছু করতে পারত। বরং পড়ালেখা না করার অপরাধের গ্লানি টানতে টানতে যুবক বয়সে বুড়ো হয়ে যাইতো।

আমাদের সমাজে পড়ালেখা দিয়ে তেমন কিচ্ছুই হয়না আসলে। যেটা হয় ভালো একটা চাকুরী পাওয়া যেতে পারে, তাতেও আবার সুপারিশ লাগে। আমাদের দেশে ভালো তারাই করতেছে যারা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাদের ভাবনাগুলো শেয়ার করতে পারছে যারা কদর জানে তাদের সাথে। আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলাদলির উপরে আর কিছু নাই। দলগুলো কখনও বলবেনা আমার দলের উমুক জন বিজ্ঞানী, উমুক বিশ্বসেরা অর্থনীতিবিদ।

তরুণদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কেউ এগিয়ে আসেনা। কেউ ইনভেস্টমেন্ট করে না। একটা হরতাল করতে নাকি কোটি টাকা দরকার। একটা তরুণের একটা ক্রিয়েটিভ আইডিয়া বাস্তবায়ন করতে কয়েক লাখ টাকা দরকার পড়ে। আমারা হরতাল দিয়ে লক্ষ তরুণকে রাস্তায় নামিয়ে আনি, কিন্তু লক্ষ টাকা দিয়ে একটা তরুণরে স্বপ্নকে বাস্তব করতে পারিনা। তারুণের জয়গান গাই আমরা। তরুণদের রাস্তায় ভালো লাগে আমাদের কাছে। পড়ালেখাটা করিয়ে তাদেরকে বুঝানো হয় রাস্তাই ভালো। নামলে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।

মাঝে মাঝে আইটিতে কিছু নতুন মুখ হঠাৎ করে উঠে আসে নানান পত্র পত্রিকায়। ১৮ বছরের আগেই আমাদের দেশের মানুষ হয়েও অনেক কিছু করে ফেলে এমন সব প্রশংসা। কিন্তু এই ছেলে যেখানে ৫ বছর আগেই কম্পিউটার পায় সেখানে অন্যরা ১৮বছরেও কম্পিউটার কিনতে পারেনা। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ফেলে অনেকেই নিজের কম্পিউটার ছাড়া। তখন আর এইসব খবর, এইসব প্রশংসা ভালো লাগে না.... অনেক কষ্টকর মনে হয়।

তরুণদের ওদের মতই থাকতে দিন। নানান অনুষ্ঠান পত্রিকায় নানান কথা বলে ওদের আশা দিয়ে রাস্তায় নামানোর চেয়ে কৃষিকাজই করুক। ওটাই ভালো। অন্তত চরম হতাশা এবং আত্মগ্লানি থেকেতো মুক্ত থাকবে।

বি.দ্র. দুই একজন ব্যতিক্রম থাকতে পারেন। কিন্তু বেশিরভাগ তরুণেরই এই অবস্থা।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×