সিংগাপুরে নি-সুন(neea soon) নামে একটা শহর আছে যা সিংগাপুর এর মনোরম শহর গুলোর মধ্যে একটি।এখানে যারা নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে থাকেন তাদের HDB ব্লক নামে কিছু এরিয়ার বাড়িতে থাকার সুবিধা থাকে।ভি আই পি দের জন্য হায়ার লেভেলের সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে সেখানে।বাড়ি,গাড়ি এমনকি পোষা প্রাণী টি ও ফ্রি দেওয়া হয়ে থাকে বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য।
বাড়ির ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলে ই দেখা যায় একটা নির্দিষ্ট যায়গায় এই পোষা প্রানীদের রাখা হয়েছে।এখানে সবাই তাদের আদর করতে পারে,গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে পারে,ইচ্ছে মত তাদের সাথে সেলফি তুলতে পারে।শুধু পারে না এদের ইচ্ছে মত খাবার দিতে।মানে খাওয়াতে।
এ বাড়ির বাসিন্দাও না!এই পোষা প্রাণী গুলোর জন্য খাবার সরবরাহ করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে,এবং সে খাবার গুলো ও থাকে শতভাগ পরিক্ষিত।
বছর পাঁচেক আগের ঘটনা,
এখানকার ই এক ভি আই পি নেতার বাড়িতে একদিন আচমকা মারা যায় একটি বিড়াল।
বিড়াল টা মারা যাওয়ার পর ই তাৎক্ষণিক এম্বুলেন্স এসে হাজির হয়।পাশের ভি আই পি হসপিটালে করা হয় এর পোস্টমর্টেম।
পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এ উঠে আসে যে খাবারে বিষক্রিয়ার ফলে বিড়াল বেচারা পগারপার!
পুরো শহর,ধুর ছাই,শহর বললে ভুল হবে।পুরো সিংগাপুরে ই ব্যাপার টা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় ওঠার মত ঘটনা ঘটে গেল।নানান ভাবে লোকে ধুয়ে দিচ্ছেন সে বাড়ির নেতাকে।
কথা উঠছে যে,তিনি যদি সামান্য একটা বিড়ালের রক্ষণাবেক্ষণ না করতে পারেন তাহলে জনগনের জানমালের নিরাপত্তা কি করে দিবেন!
এমন ই তোপের মুখে পদত্যাগ করেন সেই নির্বাচিত নেতা।আর সেটাও স্বেচ্ছায় ই।তিনি উল্লেখ ও করেন যে তিনি সম্পূর্ণ ব্যর্থ এ কাজে।
এভার ভুলেযান সিংগাপুরকে,আসুন আমাদের দেশে।এখানে ডজনে ডজনে মানুষ মরলে ও কোন নেতা ভ্রুক্ষেপ করেন না।তারা কেবল ছোট একটা কার্য সম্পাদন করেন।আর তা হল,বেশ কয়েক সদস্যের এক ছাপোষা কমিটি গঠন করে দেন।ব্যস,খেল খতম।দেশ আবার আগের মত স্বাভাবিক।
এখানে নতুন ইস্যু তৈরি আর কদিন পর পর সেসব ইস্যুতে হিসু করার প্রক্রিয়া চলে অবিরাম।
কোন কোন নেতা-মন্ত্রী তো আবার এটাও বলে ওঠেন যে,"আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়া গেছে"!
এখানে পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন করলে,এমপিও ভুক্তির দাবিতে অনশন করলে ছাত্র-শিক্ষকদের বেদম লাঠি শিল্প প্রদর্শন করে এস এস সি পাস পুলিশ কন্সটেবল ও!
অথচ দেশ ই স্বাধীন হয়েছিল এই ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলনের সুচনার ফলে।
এখানে ধর্ষণ এর বিচার চাইতে গিয়ে প্রভাবশালীদের কাছ থেকে খুনের হুমকি-ধমকি পেতে হয় ধর্ষিতার পরিবারকে।
এখানে সংখ্যালঘু বলে নেতা নামক ভূমিদস্যুদের প্রধান টার্গেট হতে হয় কোথাও কোথাও।
এখানে নেতার ছেলে-মেয়ে কিংবা আত্মীয় বলে খুন করে,গাড়ি চাপা দিয়েও পার পেয়ে যায় আসামী নামের আতেলরা!
সবচেয়ে বড় অবাক করা নিউজ তো এটাই যে এদেশে দেশ স্বাধীন করে মুক্তিযোদ্ধারা মাথা গুজার জন্য ভিটা পায় না,আর ম্যাচ জিতিয়ে বাড়ি-গাড়ি পেয়ে যায় ক্রিকেটাররা!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ ভোর ৫:২৭