somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এরই নাম কি পুলিশ? এরাই আমাদের রক্ষাকর্তা?

০৪ ঠা জুলাই, ২০১০ দুপুর ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলায় পুলিশ দেখলে অকারনেই ভয় পেতাম। তখন ছিল এরশাদ চাচা'র আমল; কথায় কথায় কারফিউ। পাড়া মহল্লায় বিচ্ছিন্নভাবে পুলিশের টহল চলে। একদিন একজন অতি উৎসাহী হয়ে জোড়ে ডাক দিল "ঠোলা"!!! আর যায় কোথায়। লাঠি, বন্দুক উচিয়ে ঠোলাদের একশন শুরু। আমরা নেহায়েতই ছোট ছিলাম, তাই সেই যাত্রায় বেচে গেলাম, কিন্তু বড় ভাইরা অনেকেই আশে পাশের বাড়িতে লুকিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারল না। ঠোলার মোটা লাঠির বাড়ি শেষে ১ জনকে ধরে থানায় নিয়ে যেতে চাইল তারা। পরে এলাকার বয়োয্যেষ্ঠদের হস্তক্ষেপে সে যাত্রায় রেহাই পেল সে।

এই তথাকথিত গনতন্ত্রের জামানায়ও ঠোলা, সেই ঠোলাই আছে, বরং এখন হয়েছে আরও শক্তিশালী, হিংস্র। এখন আর ঠোলা বলে ডাক দেবার দরকার হয় না। তার আগেই তারা ঝাপিয়ে পড়ে। শুধু ঝাপিয়ে পড়েই ক্ষান্ত হয় না, তারা হয়রানি না করার বিনিময়ে অর্থ চায়, না পেলে হত্যা পর্যন্ত করতে দ্বিধা করে না। তারা পত্রিকার শিরোনাম হয় পুলিশ হিসাবে নয়, খুনি হিসাবে।

কেন এই অধঃপতন? টাকার অভাব? টাকার অভাবে একজন ভাল মানুষ কি খুন করতে পারে? কখনই না। এইসব পশুদের আমাদের রাজনৈতিক নেতারাই বেছে বেছে নিজেদের স্বার্থে নিয়োগ দিয়েছেন। এদের দিয়েই তারা একের পর এক বে-আইনী কাজ করাচ্ছেন, তাই এদের স্পর্ধা আজ এই পর্যায়ে গেছে যে এরা মানুষ খুন করতেও দ্বিধা বোধ করে না। তারা জানে যে, সরকার নিজের প্রয়োজনেই তাদের রক্ষা করবে।

মজিবর, ছেলেকে নিয়ে ফুটবল কিনতে বেরিয়েছিল। মজিবরকে তার ৭ বছরের ছেলের সামনেই ধরা হয়, লাথি-ঘুষি মারা হয়, পানিতে চুবানো হয়। পুলিশ নাকি টাকা চাইছিল। ভীত ছেলে দৌড়ে নানার বাসায় আসে এবং নানাকে নিয়ে আসে ঘটনাস্থলে। কিন্তু ততক্ষনে যা হবার হয়ে গেছে। পরদিন লাশ মেলে তুরাগ নদীতে।

এবার শুনি এই ৭ বছরের ছেলে, যার চোখের সামনে তার বাবাকে মারা হয়েছে, তার বক্তব্যের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের বক্তব্য "সাত বছরই হোক আর পাঁচ বছরই হোক, তার কথা বিশ্বাস করার কোন কারন নেই। তারা ছোট থেকেই ক্রাইমের সাথে থাকতে থাকতে সেরকম হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে আমার বিষয়টিকে সত্য বলে মনে হয় না।" খেয়াল করবেন, এর মতই কেউ একজন এই মামলার রিপোর্ট তৈরী করবে যে কিনা প্রাথমিকভাবে ধরেই নিয়েছে ঘটনা মিথ্যা।

ঠোলা বাহিনীর আরেক শিকার মিজান, যার নামে থানায় কোন সাধারন ডায়েরী পর্যন্ত বের করতে পারে নাই পুলিশ, অথচ ছিনতাইকারী সাজিয়ে গুলি করে খুন করে ফেলেছে পর্যন্ত। পরিবারের দাবি পুলিশ তার কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল।

এমনি হয়ত আরও অনেক ঘটনা ঘটে যেটা পত্রিকার প্রথম পাতা পর্যন্ত পৌছাতে পারেনা, তার আগেই ধামাচাপা পড়ে যায়। এমনকি এত কিছুর পরেও কি ঐ খুনি পুলিশ অফিসারদের কোন শাস্তি আদৌ হবে? মনে হয় না। যারা খুন হল, তারা দোষী, না নির্দোষ সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু পুলিশ যে অর্থের জন্য তাদের হয়রানি করেছে এবং অর্থ আদায় করতে না পেরে মেরে ফেলেছে সে বিষয়টা মোটামুটি পরিস্কার। পুলিশের উর্দি গায়ে এই জঘন্যতম কাজগুলো করেও কিভাবে একেকজন খুনি আবার পুলিশ হিসাবে বহাল থাকে সেটা আমার কল্পনাতেও আসে না। এদের কাছে বিপদে পড়ে কোন মানুষ যাবে? এক খুনির হাত থেকে বাঁচতে আরেক খুনির কাছে যাওয়ার চাইতে মনের কষ্ট চাপা রাখাই তো মনে হয় ভাল, হয়রানি কমে। উপরওয়ালা আমাদের এইসব ঠোলাদের হাত থেকে রক্ষা করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১০ দুপুর ১:৫৩
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×