somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার কিছু বলার ছিল।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার ব্লগের সকল বন্ধুদের জানাই নমষ্কার। আমি লীলা চক্রবর্ত্তী।আবার এই আমিই কিন্তু সুপ্তি চক্রবর্ত্তী। বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ম্যাগাজিনে সুপ্তি চক্রবর্ত্তী এই নামেই আমার এই লেখাগুলো প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে " pothi.com " পাবলিসারের মাধ্যমে সোহম নাম করন দিয়ে এবং সুপ্তি চক্রবর্ত্তী নামে আমার একটি বই বেরিয়েছে। এটি আমার প্রথম গল্প গ্রন্থ।

১৯৪৯ সালে , ১১ই নভেম্বর আমার জন্ম। আদি নিবাস ছিল , পূর্ব বঙ্গের নোয়াখালিতে। দেশ ভাগেরও অনেক আগে , আমার বাবা চাকুরী সূত্রে বিশাল পরিবার সহ বিহারে জামসেদপুরে চলে আসেন। সুতরাং সে হিসেবে বলা যায় আমি একরকম বিহারেরই বাসিন্দা।এক বিরাট যৌথ পরিবারের কন্যা আমি।। বাড়ী ভর্তি ভাই-বোন মিলে বেশ আনন্দেই দিন কাটিয়েছি। কিছুটা বড় হয়ে কোলকাতাতে ঠাকুমা-দাদুর তত্ত্বাবধানে, আরও স্ফূর্তিতে, আরও আনন্দে স্কুল জীবন শেষ করেছি। অবশেষে মেদিনীপুরে "রাজা নরেন্দ্রলাল খান " ওমেনস কলেজ থেকে বায়ো সাইন্স নিয়ে পাশ করি। তখন আমি কলেজ হোস্টেলেই থাকতাম। সেটাও আমার জীবনে এক নতুন অভিজ্ঞতা।

এরপর সকলে মিলে আমায় বিয়ের পীঁড়িতে তোলার জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। আমার স্বামী একজন উচ্চ পদস্থ সরকারী অফিসার। চাকরী সূত্রে স্বামীর সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি। নিত্য নতুন অভিজ্ঞতা আমায় পরিপূর্ণ করেছে। গৃহ-বধূ হিসেবে মনোযোগ দিয়ে সংসার প্রতিপালন করেছি। বর্তমানে এক পুত্র ও কন্যাসম পুত্র বধূ। উভয়েই নিজ-নিজ যোগ্যতায় সুপ্রতিষ্ঠিত। কখনও স্বদেশে, কখনও বা বিদেশে। আমরাও কখনও গৃহকোনে, কখনও বা তাদের সনে। কেমন সুন্দর স্মৃতি রোমন্থনে দিন কেটে যায়।

জীবন মধ্যাহ্নে সংসার ছড়াতে ছড়াতে ক্রমশ ছোট এক বৃত্তের ভেতর গন্ডীবদ্ধ হয়ে গেলাম। সারাদিনে আর কোন ব্যাস্ততা রইলনা। স্বামী কাজে ব্যাস্ত, একমাত্র সন্তান সেও তার পড়া-শোনায় ব্যাস্ত। শুধুই অবসর। অখন্ড অবসর। বই পড়া, নয় টি,ভি দেখা, এছাড়া আর কাজ কতটুকু? এমন শান্ত, নিস্তরঙ্গ, একঘেয়ে জীবন আর ভালো লাগছিলনা। তাই পড়তে পড়তে কবে থেকে যেন লেখনী তুলে নিলাম হাতে। একমাত্র সম্বল ইচ্ছে, ছাড়া লেখার মত কোন যোগ্যতাই কিন্তু আমার নেই। সারা জীবন চোখ খুলে যা দেখেছি, যা শুনেছি, যা উপলদ্ধি করেছি , নিজের জ্ঞানের পরিধিতে যতটুকু বুঝেছি, তাইই গল্প আকারে লিখে গেলাম। কি লিখি, কেনই বা লিখি, কেমনই বা লিখি কেউ জানেনা আমি শুধু লিখেই চলেছি। কারন লিখতে যে আমার ভাল লাগে।

নিজের ওপর প্রবল আস্থা, সন্তানসম প্রতিটা লেখাই মনে হয় অপূর্ব। বারবার পড়ি, বারবার গড়ি। কিভাবে যে সময় কেটে যায় টেরই পাইনা। এতদিন কেন যে আমাকে এই নেশায় পায়নি ভেবে দুঃখ হয়।

এবার আর এক ধাপ এগোতে ইচ্ছে হয়। অসীম সাহসের সাথে বড়বড় পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার জন্য গোপনে সুপ্তি চক্রবর্ত্তী (ছদ্ম নামে ) নামে লেখা পাঠাতে শুরু করি। আমাকে নিরাশ করে, প্রতিটা লেখাই অমনোনীত অথবা অনুপযুক্ত আখ্যা নিয়ে আবার আমার কাছেই ফিরেফিরে আসে। ব্যাথা পাই, তবে ভেঙ্গে পড়িনা। আবার পাঠাই, বারবার পাঠাই। শেষে নিজেই নিজেকে বোঝাই,---- সত্যিই আমার লেখা হয়ত বড় পত্রিকার জন্য নয়। এবার শুরু হোল লিটল ম্যাগাজিনে লেখা পাঠান। মিথ্যে বলবনা তারা সানন্দে আমার লেখা গ্রহন করেছে। আমি তাতেই খুশি । তারা আমায় এগোতে সাহস জুগিয়েছে।

তবে মানুষের আশারতো শেষ নেই, এবার মনে হোল লিটল ম্যাগাজিন আর কজনাই বা পড়ে? এর চাইতে বড় কোথাও কি লেখা যায়না? এব্যাপারে আমার ছেলের সহযোগিতা আমার আশা পূর্ণ করেছে। আমার একমাত্র পুত্র, আমার বন্ধুর মত, সে আমার মনের কথাটা টের পেয়েছে। " সামহোয়ার ব্লগে " আমায় মেম্বার করে দিল। মনে হোল আমি যেন এতদিন এর অপেক্ষাতেই ছিলাম। মন ভরে নিজেই, নিজের লেখা টুকে গেলাম। আর তার বিনিময়ে আপনাদের থেকে যে সাড়া পেলাম তা এক কথায় অভূতপূর্ব। আপনাদের সকলকে জানাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা।

শারীরিক অসুস্থতার জন্য নতুন লেখা আর সম্ভব নয়। তাই ঠিক করেছি আর লেখা নয়, এবার আবার শুধুই পড়া। এতদিন নিজের লেখা নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম এবার শুধুই আপনাদের লেখা পড়ে নিজেকে ব্যাস্ত রাখব।

আবারও বলি, আমি বড়ই আশাবাদী, এখনও মনের কোনে, কে যেন উঁকি মেরে বলে, যদি আমার লেখা গল্পগুলো টেলিফিল্ম হোত, যদি রেডিওতে নাটক হোত, অথবা যদি আমি কোথাও আমার লেখা পাঠ করার সুযোগ পেতাম? --------------
এও কি সম্ভব? "পার্টনার " নামে আমার একটি গল্প কোলকাতা টি,ভি থেকে টেলিফিল্ম হয়েছিল। সময়টা ঠিক মনে নেই।

আমরা সকলে এক আকাশের তলার বাসিন্দা। হয়ত কোনদিন সাক্ষাৎ হবেনা, মুখোমুখি কথা হবেনা, কিন্তু বন্ধুত্ব কি এসবের অপেক্ষায় থাকে? ভালবাসা রেখে গেলাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:৩০
১৪টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×