[বর্ণিত বিষয়ে আগে খন্ডিত পোস্ট দিয়েছিলাম, অন্য ব্লগের পোস্টের কমেন্টের ভিত্তিতে. লেখাটি অসম্পূর্ণ মনে হচ্ছিল বিধায় পুরোটা আবার ঘষামাজা করলাম. লেখাটা বড় হয়ে গেল, ৪-পোস্টে ভাগ করে দিলাম.]
ষড়যন্ত্রতত্ত্ব আমাদের সমাজ ও রাজনীতিতে একটি জনপ্রিয় উপজীব্য, পলাশি থেকে এর শুরু। ষড়যন্ত্র, কোন্দল, মামলাবাজিতে আমরা কোন সন্দেহ ছাড়াই বিশ্বে যুগযুগ ধরে প্রথম ছিলাম, আছি। ভারতের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি খুবই আলোচিত ও বিতর্কিত বিষয়। বিএনপি, বিশেষ করে ইসলামপন্থী দলগুলো এ ব্যাপারে খুবই উচ্চকণ্ঠ, আর লীগ ও সমমনারা এ বিষয়টি তুচ্ছ করে উড়িয়ে দিতে চান। প্রসঙ্গটি টকশো ও উপসম্পাদকীয় হিসাবেও প্রায়ই চোখে পড়ে। কিছু কিছু ব্লগারের বরাবরের জুজুবুড়ি পোস্টের বিষয় ভারতের ষড়যন্ত্র। মনে হয়, সব ষড়যন্ত্র ভারতই করে ফেলল, ষড়যন্ত্রী বাঙ্গালিদের জন্য কোন ষড়যন্ত্রই বাকি রাখল না, আহা…
তাই বলে ভারতের ষড়যন্ত্র নাই? সেটা আছে, খুবই আছে, সেটা তার স্বার্থ রক্ষার জন্য এবং এই স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে একটি অসৎপ্রতিবেশিসুলভ ও নির্দয় আচরণ করছে।
আমাদের পণ্যবাজার ভারতের দখলে, এখানে ভারতের দোষ কী? ভারত তার রফতানি বাড়তে চাইবে, নিজের স্বার্থ রক্ষা করবে, এটাই স্বাভাবিক। এই স্বাভাবিক কাজটা যখন এত সহজে করা যাচ্ছে তখন অস্বাভাবিক কাজগুলোও সে সহজে করে নিচ্ছে। ফারাক্কা বাঁধ, তালপট্টি, ছিটমহল, সমুদ্রসীমা, করিডোর, শান্তিবাহিনীকে মদদ, বাণিজ্য বাধা ও ভারসাম্যহীনতা, এমন কি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ – হেন কোন বিষয় নাই যেখানে ভারত তার নোংরা নাক গলায় না। সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষ মেরে বিএসএফ চাদমারির প্র্যাকটিস সারছে প্রতিদিন, আমরা প্রতিবাদতো দূরে, মিউমিউ করেও অনুযোগ করতে পারছি না। আমাদের মিডিয়া, শিল্প-সাহিত্য, মনন আজ ভারতের রাহুবন্দি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও আমরা ভারতের কৌশুলি দাবড়ানি খেয়ে গুটিয়ে থাকি। আমাদের জনশক্তি রফতানি, পোষাক শিল্প, টিভি চ্যানেল, এশিয়ান হাইওয়ে – কোনটাই ভারতের ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত নয়। র-এর বাংলাদেশ উইং খুবই কর্মতৎপর – ভারতের স্বার্থের বিপরীতে আমাদের স্বার্থ মার খাচ্ছে প্রতিনিয়ত।