somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতীয় কবি নজরুলের প্রাপ্য সম্মান

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"কারার ঔ লৌহ কপাট ভেঙ্গে ফেল করলে লোপাট"
"বলবীর বল উন্নত মম শির, শির নেহারি আমারি নত শির"

এই সকল বিদ্রোহী গানের জন্ম দাতা যেমন জাতীয় কবি নজরুল ঠিক তেমনি

"মসজিদের পাশে মোর কবর দিউ ভাই
সকাল সণ্ধ্যায় আমি যেন মোয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই"

"ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ এলরে দুনিয়ায়"
এসব ইসলামি কবিতা ও গান ও তেমন নজরুলের। নজরুলের কবিতা, গান যেন ছিল কোরআনের অনুবাদ

"(শুরু করিলাম) ল’য়ে নাম আল্লাহ্‌র,
করুণা ও দয়া যার অশেষ অপার।

ধ্বংস হোক আবু লাহাবের বাহুদ্বয়
হইবে বিধ্বস্ত তাহা হইবে নিশ্চয়।
করেছে অর্জন ধন-সম্পদ যাহা
কিছু নয়, কাজে তার লাগিবে না তাহা।
শিখাময় অনলে সে পশিবে ত্বরায়
সাথে তার সে অনল-কুন্ডে যাবে হায়।
জায়া তার অপবাদ ইন্ধন বাহিনী,
তাহার গলায় দড়ি বহিবে আপনি।"

উপরের কবিতাটা পড়লে মনে হয় সুরা লাহাবের বঙ্গানুবাদ। এরকম অসংখ্য কবিতা, গান আছে নজরুলের যার উদ্দেশ্যই ছিল ইসলামের জাগরন, মানুষকে ইসলামের বানী স্বরণ করিয়ে দেয়া। নজরুলকে বাংলা সাহিত্যের জনক বলা চলে, নজরুল বাংলা সাহিত্যের জন্য যা করেছেন বাংলা ভাষা ভাষি আজীবন চেষ্টা করে ও তার শোধ দিতে পারবে না। আর তাই তার কৃতঙ্গতায় হ্য়ত বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরে নজরুলকে বাংলাদেশে এনে জাতীয় কবির মর্যদা দিয়ে সম্মানিত করেছেন।

একটা কথা প্রচলিত আছে, "যে কবি যতটা ইসলামীক তিনি ততটাই অবহেলিত"। এটা নজরুলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী উপলব্দি হয় বর্তমানে :(। একজন জাতীয় কবি হিসেবে যতটুকু মুল্যায়ন কার দরকার ততটুকু মুল্যায়ন তিনি আজও পান নি। জন্ম বার্ষিকী, মৃত্যু বার্ষিকী আসলেই কেবল আমাদের নজরুলের কথা মনে পড়ে!! পরিতাপের বিষয়, বর্তমানে এই জন্ম বার্ষিকী, মৃত্যু বার্ষিকী পর্যন্ত অতটা গুরুত্ব সহকারে পালন করা হয় না।
আর অন্যদিকে রবিন্দ্রনাথের আদর কদর এর কমতি নেই, এর জন্য কোন দিবসের দরকার নেই। রবিন্দ্র সঙ্গীতের স্বরলিপি করন এর কাজ কলকাতা আর বাংলেদেশ দুই মিলে অনেকটা শেষের পথে অথচ আমাদের জাতীয় কবি নজরুল সঙ্গীতের স্বরলিপি করনের কাজ এখনও মাঠে চাপা পড়ে আছে!! বঙ্গবন্ধু নজরুলকে জাতীয় কবির মর্যদা দিয়েছেন অথচ ওনার মেয়ে হয়ে হাসিনা আজকে নজরুলকে এক প্রকার অবহেলাই করে যাচ্ছেন। রবিন্দ্র জয়ন্তী পলানের জন্য ভারত-বাংলাদেশ দুই বসে আছে আর নজরুল জয়ন্তী পালনের তেমন তুড়জুড় নেই। ভারত কে বলতে হলে বলা উচিত ছিল আসুন এক সাথে নজরুল জয়ন্তী পালন করি কারন রবিন্দ্র জয়ন্তী এমনিতেই ভারত পালন করে। অথচ প্রধানমন্ত্রি উল্টাটা করলেন। যেই পাত্রে তৈল বেশী সেই পাত্রেই উনি তৈল দিলেন আরও।
আমি এখানে রবিন্দ্রনাথের কোন দোষ গাইছিনা, আমার দেশের জাতীয় কবি হিসেবে নজরুলের ব্যপারে আমাদের দায়িত্বের কথাটাই বলতে চাইছি। রবিন্দ্রনাথ এর নামে রবিন্দ্র গবেষনা কেন্দ্র আছে কলকাতায়, কিন্তু নজরুলের জন্য নাই আর সেটা করা উচিৎ আমাদেরি । ধানমন্ডিতে রবিন্দ্রসরেবর আছে, আছে আরও অনেক কিছু, কিন্তু জাতীয় কবি নজরুলের নামে যথা সম্ভব একটা রাস্তা আছে আর একটা কলেজ আছে।

এর কারন কি? এর কারন কি নজরুলের ইসলাম প্রিয়তা আর বাম বিরোধিতা!!

"উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ
আমরা বলিব “সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ”
উহারা চাহুক সংকীর্ণতা, পায়রার খোপ। ডোবার ক্লেদ,
আমরা চাহিব উদার আকাশ নিত্য আলোক প্রেম অভেদ।"

এ যেন কাঁটা গায়ে লবনের ছিটা বামদের ও সেক্যুলারদে জন্যে। তবে কবিদের ক্ষেত্রে কি এইসব বিবেচনা করা দরকার? কারন কবিরা কবি, উনাদের নিজ নিজ চিন্তা ধারায় স্ব-মহিমায় উনারা উদ্বাসিত। বাম-ডান যাই হউক কবিদের সম্মান কবি হিসাবে। রবিন্দ্রনাথ বিশ্বকবি আর নজরুল জাতীয় কবি।

"বিদ্রোহী রনক্লান্ত আমি সেই দিন হব শান্ত
যবে ....... ক্রন্দন রোল আকাশে বাতাশে ধ্বনিবে না"

এই বিদ্রোহী কবি আমাদের জাতীয় কবি, এই বিদ্রোহী কবি আমাদের স্বাধীনতার কবি, এই বিদ্রোহী কবি আমাদের প্রানের কবি, এই বিদ্রোহী কবি আমাদের বৈশাখের প্রতীক

“আমি ধূর্জটি , আমি এলোকেশে ঝড় অকালবৈশাখীর । ”
“নাচে ঐ কালবৈশাখী
কাটাবি কাল বসে কি ?
দেরে দেখি
ভীম কারার ঐ ভিত্তি নাড়ি ।”

আসুন এই কবির পাপ্য সম্মানটুকু নিশ্চিত করি। আমাদের চেয়ে এই কাজ বেশি করতে পারে সরকার।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:৩৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×