সরকারি হিসাবে গত দেড় দশকে সাড়ে ৭০ হাজার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। আহত হয়েছে আরও অর্ধলক্ষাধিক। এর মধ্যে ১৯৯৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এক যুগে সারাদেশে ৫০ হাজার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩৮ হাজার লোক। আহত হয়েছে আরও ৩৫ হাজার। সরকারি হিসাবে বছরে গড়ে তিন হাজারের বেশি লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। তবে বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা ১২ থেকে ২০ হাজার। বেসরকারি হিসাবে এ বছরের গত সাড়ে সাত মাসে দু'হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটেছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) মনে করে, পুলিশ দুর্ঘটনা ও হতাহতের যে হিসাব দেয়, প্রকৃত সংখ্যা এর তিন গুণ। অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ২০০৭ সালের হিসাবে বলা হয়েছে, এ বছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ হাজার ৩৪ জন মারা যায়। বাংলাদেশের প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ১২ দশমিক ৬ জন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় বলে ডব্লিউএইচও উল্লেখ করে।
যুক্তরাজ্য সরকারের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থার (ডিএফআইডি) ২০০৪ সালের এক জরিপে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের মোট দেশীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ১ দশমিক ৬ শতাংশ ক্ষতি হয়। তবে এআরআইয়ের তথ্যমতে, এখন সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জিডিপির ২ শতাংশেরও বেশি। বুয়েটের হিসাব মতে দেশের ১১৮০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যেও মহাসড়কের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ স্পট হচ্ছে ২০৯টি। তার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৮টি, ঢাকা-খুলনা রোডে ৩৮ টি, বাকিগুলো ঢাকা-সিলেট ও উত্তরানঞ্চলের বিভিন্ন মহাসড়কে।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বুয়েটের এআরআই গত বছর জুনে সারাদেশের ২০৯টি স্থানকে অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ (ব্ল্যাক স্পট) হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সওজের কাছে পাঠায়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কেও বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু এক বছরেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এআরআই সূত্র বলছে, একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে বছরে তিনবার বা তারও বেশি দুর্ঘটনা ঘটলে এটাকে ব্ল্যাক স্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ব্ল্যাক স্পটগুলোতে সড়কের অস্বাভাবিক বাঁক থাকে, সড়কের পাশে হাটবাজার গড়ে ওঠে এবং সড়ক সংকেত থাকে না। মানিকগঞ্জের যে স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় মিশুক মুনীর ও তারেক মাসুদ মারা গেছেন, সেটিও একটি ব্ল্যাক স্পট।কিন্তু এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা তাই মৃতের সংখ্যাও পাল্লা দি্যে বেড়েই চলেছে।
ফেনীতে গত শনিবার (১২ নভেম্বর) সড়ক দুর্ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত যাত্রী শাহ আলম ও তানভীর ইসলাম অভিযোগ করেন, তাঁদের থেকে ‘দিগন্ত পরিবহনের’ কথা বলে জনপ্রতি এক হাজার ২০০ টাকা করে অগ্রিম ভাড়া নিয়ে টিকিট দেওয়া হয়। কিন্তু পরিবহন মালিকেরা প্রতারণা করে তাঁদের ‘সেন্ট মার্টিন পরিবহনের’ একটি নৈশকোচে তুলে দেন। নৈশকোচটি রাত সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। পথে চকরিয়া এলাকায় গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। আধ ঘণ্টা পর আবার যাত্রা শুরু করে। পরে তাঁরা এ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত ও ৩৫ জন আহত হন।এইরকম চিত্র প্রায়ই দেখা যায়।যাত্রীরা প্রচুর অর্থ ব্যয় করেও কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না।প্রতারিত হচ্ছেন যাত্রীরা।মহামারির মত বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা ,বাড়ছে মৃত্যু,বাড়ছে হাজার হাজার পরিবারের হাহাকার, ঝরে যাচ্ছে হাজারও পরিবারের স্বপ্ন।
পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র নাছির,বর্তমানে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের (পি,জি) বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। গত ০৯ নভেম্বর দুপুর আনুমানিক ১২টা ৩০মিনিটের দিকে এক মারাত্বক সড়ক দূর্টঘনার আহত হয়। তাৎখনিক ভাবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল পর্যন্ত ২জনের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও "নাছিরের" মাথায় প্রচন্ড রক্তক্ষরণ চলছে। ফলে তার অবস্থার আরও অবনতি হলে গতকাল দুপুরে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখন ডাক্তারদের মতে তাকে খুব দ্রুত অপারেশন করতে হবে যার জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন যা তার পরিবারের পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব নয়। সাহায্য পাঠাতে চাইলেঃ
মোঃ রকিবুল হাসান (বন্ধন)
একাউন্ট নং : ৪৪৭০
সোনালী ব্যাংক
জয়নগর শাখা, ঈশ্বরদী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রটি মারা গেছে এই ঈদে।মাস্টার্স ফাইনাল দিয়ে বাড়ি গেল আর ফিরে আসা হলনা তার.।কয়েক দিন পর সবাই একে ভুলে কিন্তু তার পরিবারের কি হবে ?সারাজীবন ধরে এই কষ্ট তাদেরকে বয়ে বেড়াতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যলয়ের এই ভাইটির অবস্থা দেখুন তার পা ভেঙ্গে গেছে বাস দুর্ঘটনায়।
এই পোষ্টটি লিখছি কিন্তু থেমে নেই দুর্ঘটনা,এখনও পাচ্ছি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর!!!!!!!
মীরসরাইয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছে। এ ঘটনায় আর এক বন্ধুও আহত হয়েছে। রোববার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইসমাইল কার্পেট মিলের সামনে যাত্রীবাহী ভলবো একটি মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় রোববার সড়ক দুর্ঘটনায় রঙ্গবালা দাস (৭০) নামে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন।
আর কতকাল সরকার চুপ করে বসে থাকবে?আর কত পরিবারের আশা ধুলোয় মিশে যাবে? এ মহামারি থামানোর কোন প্রচেস্টা কি নেবেনা সরকার?আর কত হত্যা করলে সরকারে টনক নড়বে??
সূত্রঃ
বিভিন্ন পত্রপত্রিকা,ফেসবুকের পেজ,
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৪