somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব ০৬)

১৯ শে জুন, ২০১১ রাত ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব এবং এর ঘূর্ণনের হার পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্বের ক্ষেত্রে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি এর আকৃতি এবং এর অভ্যন্তরের পদার্থ সমূহের উপড়ও নির্ভরশীল।
আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ ফ্রাংক প্রেস এবং রেমন্ড সিলভার তাদের গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ডাটার উপর ভিত্তি করে বলেন “ পৃথিবীর আয়তন একে জীবনধারণের উপযোগী করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যদি পৃথিবীর আয়তন কিছুটা কম হতো তবে এটি এর বর্তমান বায়ুমণ্ডল ধরে রাখতে পারত না। কারন এর অভিকর্ষীয় শক্তি গ্যাস সমূহকে ধরে রাখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট হতো না। আবার যদি এর ভর কিছুটা বেশি হতো তবে এর শক্তিশালী অভিকর্ষীয় আকর্ষণ শক্তির দ্বারা এটি বেশি পরিমাণ গ্যাস ( ক্ষতিকারক গ্যাস সমুহ সহ) বায়ুমণ্ডলে ধারন করত।
পৃথিবীর ভরের মতই এর আভ্যন্তরীণ পদার্থ সমূহের অবস্থা জীবনধারণের সহায়ক হিসেবে সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পিত। এর কেন্দ্রের আয়রন কোর ( Iron core) এর চুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে যা প্রাণ বা মানুষের জীবন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রাংক প্রেস এবং রেমন্ড সেইভার বলেন “ পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ বিশাল কিন্তু সুষম তাপীয় ইঞ্জিন ব্যবস্থা যা Radioactivity দ্বারা পরিচালিত হয়। যদি এই তাপীয় ব্যবস্থা কিছুটা ধীরগতিতে চলত তবে ভূপৃষ্ঠের কার্যক্রমও ধীরগতিতে চলত। এর ফলশ্রুতিতে Iron core এর সৃষ্টি হত না এবং পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র বা ভূচুম্বকীয় ব্যবস্থা সৃষ্টি হত না। যদি এই ব্যবস্থা কিছুটা দ্রুতগতির হত তবে ভূপৃষ্ঠে প্রতিদিনই ভুমিকম্প এবং অগ্ন্যূৎপাত ঘটত।


প্রেস এবং সিলভার যে চুম্বক ক্ষেত্রের কথা বর্ণনা করেছেন তা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এই চুম্বকক্ষেত্রটি পৃথিবীর কেন্দ্রের চুম্বকীয় ধাতু যেমন লোহা এবং নিকেল দ্বারা সৃষ্টি হয়। এই কোরটির দুটি অংশ আছে। Outer Core এবং Inner Core। Inner Core কঠিন পদার্থ দ্বারা গঠিত এবং Outer Core টি তরল। এই দুটি লেয়ার পরস্পর বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে এবং তাদের এই ঘূর্ণনের ভূচুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই চুম্বকীয় ক্ষেত্রটি আমাদের বায়ুমণ্ডলের স্তর ধরে রাখে এবং নক্ষত্রগুলো থেকে বিকিরিত ক্ষতিকারক Cosmic Radiation হতে আমাদের রক্ষা করে।
এই চুম্বক ক্ষেত্রটি আমাদের বায়ুমণ্ডল ছেড়ে ১০০০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি পৃথিবী রক্ষাকারী বেল্ট হিসেবে কাজ করে। একে বলা হয় The Van Allan Belt. পৃথিবী মাঝেমাঝে প্রচণ্ড কসমিক রেডিয়েশনের প্রভাব বলয়ের মধ্যে পরে যায়। এই রেডিয়েশন হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত পারমাণবিক বোমার চেয়ে ১০০ বিলিয়ন গুন বেশি শক্তিশালী। কিন্তু এই Van Allan Belt এই রেডিয়েশন এর মাত্র ০.১% পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আসতে দেয় যা বায়ুমণ্ডল কর্তৃক শোষিত হয়। এভাবে এই চুম্বক ক্ষেত্রটি পৃথিবী তথা মানুষের জন্য রক্ষাকারী ব্যূহ হিসেবে কাজ করে।


এই চুম্বক ক্ষেত্র হতে প্রায় ১ বিলিয়ন অ্যাম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহের প্রয়োজন হয়েছে যা মানুষের সৃষ্টি থেকে এখন পর্যন্ত মানুষ দ্বারা তৈরিকৃত তড়িৎ শক্তির কাছাকাছি। যদি এই বেল্টটি না থাকত তাহলে পৃথিবী Cosmic Radiation দ্বারা ধবংস হয়ে যেত। ভূপৃষ্ঠের কেন্দ্রস্থলটি সঠিকভাবে এবং সঠিক পদার্থ দ্বারা গঠিত হওয়ার কারনেই এই পৃথিবী এসব রেডিয়েশন হতে রক্ষা পেয়েছে এবং আমাদের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে। এসব বিষয় এটাই প্রমাণ করে যে পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব একটি মহাপরিকল্পনার ফসল। কোনো কাঁকতলিয় ঘতনা নয়। মহান আল্লাহ্‌তায়ালাই পৃথিবী সৃষ্টি এবং একে মানুষের বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তুলেছেন।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×