somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব১২)

২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত ও দিনের পরিবর্তনে জ্ঞানতত্ত্বের দাবী কোরআনের সর্বত্র চোখে পড়ার মত। এ এক অন্যতম নিদর্শন ও নির্দেশ যা জ্ঞানীদের জন্য আল্লাহ্‌র মহিমা বুঝবার একটি সহজ উপায়।

“নিশ্চয়ই রাত-দিনের পরিবর্তনের মাঝে এবং যা কিছু তিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীনে, সবই হল নিদর্শন সেসব লোকের জন্য যারা ভয় করে।“ (১০:০৬
)

পৃথিবীর ২ টি গতির একটি হল বার্ষিক গতি যাতে পৃথিবী ৩৬৫ দিনে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, আরেকটি হল আহ্নিক গতি যাতে পৃথিবী ২৪ ঘণ্টায় একবার নিজ অক্ষের উপর ঘূর্ণন সম্পন্ন করে যার ফলে দিন ও রাতের সৃষ্টি হয়।

এবার আসি সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহগুলোর ব্যাপারে। পৃথিবীর একপাশে রয়েছে শুক্র এবং অন্যপাশে মঙ্গল। শুক্রের একটি আহ্নিক গতির পর্যায়কাল পৃথিবীর হিসেবে ২৪৩ দিন, মঙ্গলে তা ২৪ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট। অর্থাৎ শুক্র গ্রহের একটি “দিনের “ পরিমাণ পৃথিবীর হিসেবে ১২১.৫ দিন আর মঙ্গলে ১২ ঘণ্টা ১৮.৫ মিনিট। বুধ এর পূর্ণ আহ্নিক গতি ৫৪ দিন ১৫ ঘণ্টা অর্থাৎ ‘দিনের’ পরিমাণ পৃথিবীর হিসেবে ২৭ দিন ৭.৫ ঘণ্টা। তাপমাত্রার হিসেবে বুধের আলোকিত পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৩৫০ ডিগ্রি সেঃ এবং অন্ধকার পৃষ্ঠের তাপমাত্রা -১৭০ ডিগ্রি সেঃ । শুক্রের আলোকিত পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৪৮০ ডিগ্রি সেঃ এবং অন্ধকার পৃষ্ঠের তাপমাত্রা -৩৩ ডিগ্রি। বুধ শুক্রের চেয়ে সূর্যের নিকটবর্তী হওয়া সত্ত্বেও বুধের আলোকিত পৃষ্ঠের তাপমাত্রা (৩৫০ ডিগ্রি সেঃ) শুক্রের চেয়ে কম (৪৮০ ডিগ্রি সেঃ)। কারণ বুধের আহ্নিক গতি জনিত সৃষ্ট দিনটির ব্যাপ্তিকাল (২৭ দিন ৭.৫ ঘণ্টা।) শুক্রের দিনের চেয়ে (১২১.৫ দিন) অনেক কম। অর্থাৎ শুক্রের দিনের ব্যাপ্তি বুধের চেয়ে সাড়ে চারগুণ বেশী। তাই সাধারণ গাণিতিক হিসেবে কোন একটি গ্রহের তাপমাত্রা পরিস্থিতি তার কোন পৃষ্ঠের উপর আপতিত সূর্য রশ্মির স্থায়িত্বকাল বা আহ্নিক গতির উপর নির্ভর করে। আহ্নিক গতির কারনেই বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল ইত্যাদিতে তাপের তারতম্য হয়ে থাকে। কিন্তু মঙ্গলের আহ্নিক গতি পৃথিবীর সমান হওয়া সত্ত্বেও মঙ্গলে দিনের বেলায় ৩১ ডিগ্রি সেঃ ও রাতের বেলায় -৮৬ ডিগ্রি সেঃ তাপমাত্রা বিরাজ করে যা জীবনধারণের অনুপযুক্ত। প্রশ্ন এসে যায় , একই ধরণের আহ্নিক গতি নিয়েও মঙ্গল জীবনধারণের অনুপযোগী কেন। এই অনুপযুক্ততার কারণ সূর্য থেকে এর দূরত্ব।

বিষয়টিকে ভালভাবে ব্যাখ্যা করতে আমরা চাঁদকে আলোচনায় টেনে আনতে পারি। দূরত্বের হিসাবে চাঁদ ও পৃথিবী সূর্যের কাছে একই তলের অধিবাসী। কিন্তু চাঁদের সূর্য পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১১৭ ডিগ্রি সেঃ এবং আঁধার পৃষ্টের তাপমাত্রা -১৬৩ ডিগ্রি সেঃ জীবন ধারনের জন্য অসম্ভব। একই তল, একই দূরত্ব, একই মহাজাগতিক পরিবেশ , একই সূর্য তেজ হওয়া সত্ত্বেও আপনি যেমন পৃথিবীতে বসে চাঁদের সৌন্দর্য দেখছেন কিন্তু চাঁদ থেকে পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখার মত কেউ নেই। চাঁদের পৃষ্ঠের দুটি বিপরীতমুখী অসম তাপমাত্রা আমাদের জানিয়ে দেয় যে, স্রস্টার পক্ষ থেকে নির্ধারিত মাত্রার আহ্নিক গতি এবং সূর্য থেকে নির্ধারিত দূরত্বের তারতম্য হলে পৃথিবী জীবন ধারণের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ত। যারা স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস করেনা এবং বিগ ব্যাং এবং মহাবিশ্বের সৃষ্টিকে কাঁকতলিয়, নিয়ন্ত্রনহিন, নিজে নিজে সৃষ্ট ইত্যাদি বলে তাদের কাছে প্রশ্ন রাখা যায় এই পৃথিবীর যেসব বিষয় জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় (নির্দিষ্ট আহ্নিক গতি, নিদিষ্ট দূরত্ব, নিখুত পরিমাপ ইত্যাদি ) তা কিভাবে পাওয়া সম্ভব যদি তাদের বক্তব্য অনুযায়ী বিগ ব্যাং একটি অনিয়ন্ত্রিত ঘটনা হয়ে থাকে? যদি মহাবিশ্ব কারো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হয় কিভাবে এতটা নিখুত পরিমাপের উপর ছায়াপথ, সৌরজগৎ, পৃথিবী সৃষ্টি হল?

চাঁদ, মঙ্গল, বুধ, শুক্র এরা সবাই সম্মিলিত ভাবে সাক্ষ্য দিচ্ছে

“ আল্লাহ, পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্যে বাসস্থান, আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক। তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা। বিশ্বজগতের পালনকর্তা, আল্লাহ বরকতময়। “ ( ৪০:৬৪)

“ তিনিই রাত ও দিনকে পরস্পরের স্থলাভিষিক্ত করেছেন এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে শিক্ষা গ্রহণ করতে অথবা কৃতজ্ঞ হতে চায়৷” (২৫:৬২)

১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×